হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার পদ স্থগিত
Published: 1st, August 2025 GMT
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে মারধরের ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুল্লাহ আল মামুনের দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দলটির দিনাজপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু মুন্সীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আবদুল্লাহ আল মামুন হাকিমপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবক দলের পৌর শাখার আহ্বায়ক। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুল্লাহর প্রাথমিক পদসহ সব পর্যায়ের দলীয় পদ স্থগিত করা হলো। দিনাজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাসেল আলী চৌধুরী ওরফে লিমন এবং সদস্যসচিব সাইফুল আযম ওরফে সোহেল আজ এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।
এর আগে গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন মশিউর রহমান ও স্বাস্থ্য সহকারী ফয়সাল হোসেন। চিকিৎসক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, আবদুল্লাহ ও তাঁর সঙ্গীদের হামলায় ওই দুই চিকিৎসক আহত হয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি একটি মারামারি ঘটনায় আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন হাকিমপুর পৌর শহরের মাঠপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ফারুক হোসেন (৪৫) ও তাঁর স্ত্রী সুখী (২৭)। চিকিৎসা শেষে গতকাল সকালে তাঁদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু ফারুক ছাড়পত্র নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে বেলা আড়াইটার দিকে আবদুল্লাহ ১০–১২ জনকে সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে যান। সেখানে ছাড়পত্রের বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসক মশিউর ও স্বাস্থ্য সহকারী ফয়সালের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান আবদুল্লাহ। একপর্যায়ে ওই দুজনকে এলোপাতাড়ি মারধর করে আবদুল্লাহ ও তাঁর সঙ্গীরা।
এ বিষয়ে হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন উপজেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে চিকিৎসক মশিউর রহমানের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এ ছাড়া তিনি আর কখনো এমন কাজ করবেন না জানিয়ে একটি মুচলেকা দিয়েছেন। মারধরে ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে মশিউর রহমানের পক্ষ থেকে হাকিমপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার কথা আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স আবদ ল ল হ চ ক ৎসক ঘটন য় উপজ ল ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
চিকিৎসককে মারধর করলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা
দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মশিউর রহমানকে মারধর ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. মামুনের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত অবস্থায় মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমানের উপর হামলা চালান মামুনসহ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল।
মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমান বলেন, ‘‘হাসপাতালে ফারুক ও তার স্ত্রী ১২ থেকে ১৩ দিন ধরে ভর্তি আছেন। তাদের সব ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এখন তারা সুস্থ। তাদের আজকে রিলিজ দিতে চেয়েছি কিন্তু তারা রিলিজ নিতে চান না। এ বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার বাগবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে মামুনসহ ১০ থেকে ১২ জন এসে আমার উপর আক্রমণ করেন। মামুন আমার মুখে কিল-ঘুষি মারেন এবং সবাই আমার গলা চেপে ধরে বাহিরে নিয়ে যান। আমার মোবাইল ফোনও তারা কেড়ে নেন।’’
আরো পড়ুন:
অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা
সাভারে গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন, দগ্ধ দম্পতি হাসপাতালে
হাকিমপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মামুন বলেন, ‘‘ডা. মশিউর রহমান আমাকে ধাক্কা দেন। তখন এ ঘটনা ঘটে। তবে আমি তাকে মারিনি। আমার সঙ্গের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।’’ মশিউর রহমানের মোবাইল ফোন তখনি ফেরত দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘‘হাসপাতালের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। অভিযুক্ত মামুনকে চিকিৎসকদের সামনে মারধর করেছি। বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছে।’’
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছি। তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।’’
হাকিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘‘হাসপাতালের ঘটনা অবগত হয়েছি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’
দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. আসিফ ফেরদৌস বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে উপজেলা বিএনপির নেতারা হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় যাবো।’’
ঢাকা/মোসলেম/বকুল