দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে মারধরের ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুল্লাহ আল মামুনের দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দলটির দিনাজপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু মুন্সীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আবদুল্লাহ আল মামুন হাকিমপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবক দলের পৌর শাখার আহ্বায়ক। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুল্লাহর প্রাথমিক পদসহ সব পর্যায়ের দলীয় পদ স্থগিত করা হলো। দিনাজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাসেল আলী চৌধুরী ওরফে লিমন এবং সদস্যসচিব সাইফুল আযম ওরফে সোহেল আজ এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।

এর আগে গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন মশিউর রহমান ও স্বাস্থ্য সহকারী ফয়সাল হোসেন। চিকিৎসক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, আবদুল্লাহ ও তাঁর সঙ্গীদের হামলায় ওই দুই চিকিৎসক আহত হয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি একটি মারামারি ঘটনায় আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন হাকিমপুর পৌর শহরের মাঠপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ফারুক হোসেন (৪৫) ও তাঁর স্ত্রী সুখী (২৭)। চিকিৎসা শেষে গতকাল সকালে তাঁদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু ফারুক ছাড়পত্র নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে বেলা আড়াইটার দিকে আবদুল্লাহ ১০–১২ জনকে সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে যান। সেখানে ছাড়পত্রের বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসক মশিউর ও স্বাস্থ্য সহকারী ফয়সালের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান আবদুল্লাহ। একপর্যায়ে ওই দুজনকে এলোপাতাড়ি মারধর করে আবদুল্লাহ ও তাঁর সঙ্গীরা।

এ বিষয়ে হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন উপজেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে চিকিৎসক মশিউর রহমানের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এ ছাড়া তিনি আর কখনো এমন কাজ করবেন না জানিয়ে একটি মুচলেকা দিয়েছেন। মারধরে ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে মশিউর রহমানের পক্ষ থেকে হাকিমপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার কথা আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স আবদ ল ল হ চ ক ৎসক ঘটন য় উপজ ল ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ