‘অনেক উদ্যোক্তা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা কমপ্লায়েন্স অনুসরণে
Published: 2nd, August 2025 GMT
অনেক উদ্যোক্তা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সময়মত বার্ষিক সাধারণ সভা ও অডিট রিপোর্ট প্রণয়ন না করার কারণে কমপ্লায়েন্স অনুসরণে ব্যর্থ হন, যেটি তাদের আরজেএসসিতে নিবন্ধনসহ অন্যান্য সেবা প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।
শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীর মতিঝিল ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘পরিচালনা পর্ষদ সভা ও বার্ষিক সাধারণ সভার গুরুত্ব এবং লিমিটেড কোম্পানির কমপ্লায়েন্স’ শীষর্ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্ম পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) রেজিস্টার এ.
নুরুন্নবী কবির বলেন, ‘‘বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় পৌনে ৩ লাখ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আরজেএসসিতে নিবন্ধিত রয়েছে। কোম্পানি নিবন্ধনের প্রায় সব প্রক্রিয়া অনলাইনে করা হয়ে থাকে।’’
তিনি জানান, শুধু কোম্পানির শেয়ার ট্রান্সফারের বিষয়টি আনলাইন সেবার বাইরে আছে। যেটি ডিজিটাল কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। যার মাধ্যমে দেশের ব্যবসায়ী সমাজের জন্য ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ‘‘অনেক উদ্যোক্তা ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সময়সমত বার্ষিক সাধারণ সভা ও অডিট রিপোর্ট প্রণয়ন না করার কারণে কমপ্লায়েন্স অনুসরণে ব্যর্থ হন, যেটি তাদেরকে আরজেএসসিতে নিবন্ধনসহ অন্যান্য সেবা প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।’’
বিশেষ করে সরকারের সকল সেবা প্রাপ্তির পাশাপাশি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কমপ্লায়েন্স মেনে চলার উপর তিনি জোরারোপ করেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ও শিল্পখাতের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে লিমিটেড কোম্পানি ব্যবস্থাপনায় প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সুশাসনের গুরুত্ব প্রতিনিয়ত বাড়ছে। অনেক উদ্যোক্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কোম্পানি আইন, গঠনতন্ত্র বা কমপ্লায়েন্স সংক্রান্ত বিষয়ের জটিলতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার অভাবে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হয়। যা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।’’
কর্মশালাটি পরিচালনা পর্ষদ সভা, বার্ষিক সাধারণ সভা, বিশেষ সাধারণ সভা প্রভৃতির গুরুত্ব, সময়মতো এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করার পদ্ধতি, কোম্পানি আইনের আওতায় প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্স বজায় রাখার কৌশল এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে সুষ্ঠু সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করবে বলে জানান ঢাকা চেম্বারের সভাপতি।
ঢাকা/নাজমুল//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কমপ ল য় ন স ন বন ধ
এছাড়াও পড়ুন:
সময়মতো হয়নি সেতু, ভোগান্তিতে বড় মানিকের বাসিন্দারা
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বড় মানিক এলাকায় ছোট যমুনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কাজ এখনো শেষ হয়নি। গত ৮ জুলাই এ সেতুর নির্মাণকাজের নির্ধারিত মেয়াদ (দেড় বছর) শেষ হয়েছে। যথাসময়ে সেতু নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়ায় চলাচলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা।
নির্মাণাধীন সেতুর পাশে বিকল্প দুই লেনের কাঠের সেতু নিয়েও দুশ্চিন্তা বাড়ছে। বর্ষায় নদীতে পানির চাপ বেড়ে গেলে নড়বড়ে কাঠের সেতু ভেঙে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে উপজেলা প্রকৌশলী সেতুর মাঝখানের পিলারে গার্ডার নির্মাণ আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছেন। এ কারণে ধীর গতিতে নির্মাণকাজ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক।
বড় মানিক এলাকার অটোরিকশাচালক আব্দুল কুদ্দুস বলেছেন, যতদিন আগে কাজ শুরু হয়েছে, এত দিনে এরকম তিনটা ব্রিজ বানানো যেত। বিকল্প সেতুর কাঠ-বাঁশ পানিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে। যদি নদীতে পানির চাপ আসে তাহলে কাঁঠের সেতু থাকবে না।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পাঁচবিবি কার্যালয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেজ প্রকল্পের আওতায় পাঁচবিবি উপজেলার বড় মানিক এলাকায় ছোট যমুনা নদীর ওপর ৯০ দশমিক ৬ মিটার দীর্ঘ গার্ডার সেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। কার্যাদেশ অনুযায়ী, নির্মাণকাজের মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের ৮ জুলাই। এ কাজের চুক্তিমূল্য ৮ কোটি ৫৭ লাখ ১১ হাজার ৭৭২ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড ও এমডি সোহেল জেভি। তবে, সেতুর নির্মাণকাজ করছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা প্রভাষক মাসুদ রেজা। ৫ আগস্টের পর প্রভাষক মাসুদ রেজা আসছেন না। তার লোকজন সেতুর নির্মাণকাজ দেখভাল করছেন।
নির্মাণাধীন বড় মানিক সেতুতে গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর পশ্চিম দিকে পিলারের ওপর চারটি গার্ডার নির্মাণ করা হয়েছে। পূর্ব দিকের পিলারে গার্ডার নির্মাণ করা হয়নি। বিকল্প দুই লেনের কাঠের সেতুর অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। ছোট ছোট যানবাহনগুলো কাঠের সেতুর উভয় দিকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে খালি পারাপার করা হচ্ছিল। যাত্রীরা পায়ে হেঁটে সড়কে গিয়ে উঠছেন। এতে শিশু ও বয়স্ক লোকদের কষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সুমেলা পাহান বলেন, “এত দিনেও বিরিজটা হওচে না। এটি অ্যাসে হাঁটে কাঠের বিরিজ পার হওয়া লাগোচে। এত দিনে আরো দুটা বিরিজ করা হলো হিনি।”
শহিদুল ইসলাম বলেন, “এই সেতুর ঠিকাদার জয়পুরহাটের প্রভাষক মাসুদ রানা। তিনি জয়পুরহাটের আওয়ামী লীগ নেতা। শুরুতে কয়েক মাস এখানে মাসুদ রানা নিজে এসে নির্মাণকাজের তদারকি করেছিলেন। ৫ আগস্টের পর মাসুদ রানাকে আর এখানে দেখিনি। এখন কাজের গতিও কম।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক সুমন খাঁন বলেছেন, সেতুর কাজ চলছে। বিভিন্ন কারণে নির্ধারিত সময়ে নির্মাণকাজ শেষ করা যায়নি। মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানো হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী মাঝখানের গার্ডার নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন। নির্ধারিত সময়ে সেতুর ৬০ ভাগ কাজ হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যেই সেতুর কাজ শেষ হবে।
পাঁচবিবি উপজেলা প্রকৌশলী মোবারক হোসেন বলেছেন, ছোট যমুনা নদীর ওপর বড় মানিক সেতুর ১২টি গার্ডারের মধ্যে চারটি গার্ডার হয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে নদীর মাঝখানের চারটা গার্ডার আপাত না করতে বলা হয়েছে। কাজের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়েছে। এই প্রকল্পের মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।
ঢাকা/বাকী/রফিক