তিন বন্ধু লোকমান হোসেন, তুহিন হাসান ও সুমন হোসেন। তিনজনই সৌদিপ্রবাসী। ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। ছুটি শেষ করে ১০-১৫ দিনের মধ্যেই বিদেশে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। রোববার বিকেলে তিন বন্ধু একই মোটরসাইকেলে বেড়াতে বের হন। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন তিনজনই। আর প্রবাসে ফেরা হলো না তাঁদের।

বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রামপুর এলাকায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর সিএনজিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় ওই তিন বন্ধুসহ পাঁচজন নিহত হন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের বাড়িউড়া গ্রামের সুমন হোসেন (২৮), সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের মৈন্দ গ্রামের তুহিন হাসান (২৮) ও একই গ্রামের লোকমান হোসেন (২৯) এবং আরেক মোটরসাইকেলের আরোহী বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়নের সাতগাঁও গ্রামের হোসেন আকরাম এবং আকরামের মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা রংপুরের খামার মোহনা গ্রামের মো.

মনিরুজ্জামান (৩৫)।

প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন ও হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া থেকে রোববার বিকেলে একটি মোটরসাইকেলে তিন বন্ধু সুমন, লোকমান ও তুহিন ঢাকা–সিলেট মহাসড়ক দিয়ে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরার উদ্দেশে বেড়াতে বের হন। সুমন মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। অন্যদিকে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা থেকে একটি মোটরসাইকেলে সরাইল বিশ্বরোডের উদ্দেশে রওনা হন আকরাম হোসেন ও মো. মনিরুজ্জামান। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের বিজয়নগর উপজেলার রামপুরা এলাকায় তিন বন্ধুর মোটরসাইকেলের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা আকরামের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। একই সময় সরাইল বিশ্বরোড মোড় থেকে ছেড়ে আসা হবিগঞ্জের মাধবপুরগামী একটি অটোরিকশা পেছন থেকে মোটরসাইকেল দুটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ওই পাঁচজন নিহত হন। দুর্ঘটনায় আহত হন দুজন।

খবর পেয়ে খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করে।

সরাইল বাড়িউড়া গ্রামের লোকজন জানান, লোকমান, সুমন ও তুহিন কয়েক মাস আগে ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। ১৭ দিন আগে সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের টিঘর গ্রামে লোকমান বিয়ে করেছিলেন। ১০-১৫ দিনের মধ্যে তিনজনেরই সৌদি আরবে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।

খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অটোরিকশার চালক ও যাত্রীকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত ন বন ধ উপজ ল র ল কম ন আকর ম

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ