জয়ের প্রেমে ভেসে গিয়েছিলাম, প্রাক্তন স্বামীকে নিয়ে অনন্যা
Published: 25th, August 2025 GMT
ভারতীয় বাংলা সিনেমার অভিনেতা-রাজনীতিবিদ জয় ব্যানার্জি মারা গেছেন। সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। জয়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তার প্রাক্তন স্ত্রী, অভিনেত্রী অনন্যা ব্যানার্জি।
অভিনেত্রী অনন্যা ব্যানার্জি তৃণমূলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কলকাতার কাউন্সিলরও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে তিনি বলেন, “১৫ আগস্ট থেকে ও হাসপাতালে। সে দিন থেকে আমিও কাজের ফাঁকে ফাঁকে হাসপাতালে গিয়েছি। ওর মা ও বাড়ির বাকিদের যা প্রয়োজন হয়েছে, পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। অনেক দিন ধরে অসুস্থ। ইদানীং অল্প কথা বললেই হাঁপিয়ে যেত। তবু ভেবেছিলাম, ফিরে আসবে। অদম্য প্রাণশক্তি ছিল তো।”
আরো পড়ুন:
একা বসে কত কেঁদেছি: নুসরাত
রূপা গাঙ্গুলির মা মারা গেছেন
কলেজ জীবনের অভিনেত্রী অনন্যার ‘ক্রাশ’ ছিলেন জয়। তা স্মরণ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “জয়ের প্রেমে ভেসে গিয়েছিলাম। আমার কলেজ জীবনের ‘ক্রাশ’ ছিল ও। ভীষণ রঙিন জীবন। নিজের শর্তে বরাবর বাঁচতে পছন্দ করা এক স্বাধীনচেতা মানুষ। বড়লোক ব্যবসায়ী ঘরের ছেলে। তারপরেও মাটিতেই পা ছিল।”
বাবা-মাকে ভীষণ ভালোবাসতেন জয়। তা উল্লেখ করে অনন্যা বলেন, “মা-বাবাকে কী যে ভালোবাসত! পূর্ণবয়স্ক একটি পুরুষ ছেলেমানুষের মতো মা-বাবাকে আঁকড়ে থাকত। তার উপরে নিজেকে নিয়ে একেবারেই সচেতন ছিল না। অঙ্ক কষে বাঁচেনি জয়। কিন্তু ভীষণ ভালো কথা বলতে পারত। যেকোনো মানুষকে কথার জালে বন্দি করতে পারত। আমাকেও হয়তো এভাবেই বন্দি করেছিল।”
নানা কারণে জয়ের সঙ্গে ভেঙে যায় অন্যন্যার সংসার। অনেকে অনুমান করেন রাজনীতি কিছুটা দায়ী। তারপর আর বিয়ের পিঁড়িতে বসেননি অভিনেত্রী। রাজনীতি আর অভিনয়েই মন দিয়েছিলেন তিনি। এই নায়িকার ভাষায়—“কাজের প্রচণ্ড চাপ। তার উপরে সম্পর্কের বাঁধনে জড়ানো মানে প্রতিশ্রুতির দায়বদ্ধতা। আজ জয়ের মৃত্যুসংবাদ শুনে মনে হচ্ছে, কোথাও বুঝি জয়ও জড়িয়ে ছিল। কোনো মেয়ের জীবনের প্রথম পুরুষ, প্রথম প্রেম—থেকেই যায়।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র র জন ত অনন য
এছাড়াও পড়ুন:
অ্যাপে পরিচয়-প্রেম, বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলেন চীনের যুবক
ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ভালোবাসার টানে এক তরুণীকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে চীন থেকে ঢাকায় পৌঁছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক তরুণীর বাসায় আসেন তিনি। আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করবেন।
চীনের যুবকের নাম ওয়াং তাও (৩৬)। চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তাঁর। সুরমা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ঢাকার লালবাগে থাকেন। আজ রোববার তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে তরুণীর পরিবার জানিয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান চীনের যুবক ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে চীনের যুবককে আতিথেয়তা দিয়ে নিজ বাড়ি নাসিরনগরের কুন্ডার কোনাপাড়ায় নিয়ে আসেন তরুণী সুরমাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।
স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তরুণীর পরিবারের দাবি, দেড় থেকে দুই মাস আগে ডেটিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে সুরমার পরিচয় হয়। তাঁরা নিয়মিত চ্যাটে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। বিষয়টি চীনের যুবক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী নিজ নিজ পরিবারকে জানান। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা একে অপরকে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। পরে চীনের যুবক বাংলাদেশ ও চীনের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে দুপুরের পর থেকে চীনের যুবককে দেখার জন্য সুরমার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন।
সুরমা স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপের মাধ্যমে চীনের যুবক ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করতেন। একপর্যায়ে তাঁরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছান।
সুরমার মা নুরেনা বলেন, ‘আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলে এসেছে। ওই যুবক কোনো ধর্মই বিশ্বাস করে না। মেয়েকে বিয়ে করতে প্রয়োজনে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আগামীকাল (আজ) রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মুসলিম রীতি মেনে সুরমাকে বিয়ে করবে চীনের যুবক। এতে দুই পরিবারের সম্মতি আছে। আমরা এই বিয়েতে আনন্দিত। মেয়ের খুশিই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট উপপরিদর্শক (এসআই) জাহান-ই-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে কুন্ডা গ্রামে যাই। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হলাম যে যুবক চীনের নাগরিক। ওই তরুণী ঢাকার লালবাগে থাকেন। ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। চীনের যুবক ইংরেজি বোঝেন না। তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে কথা বলতেন। তরুণী ও তাঁর পরিবার জানিয়েছে, রোববার হলফনামার মাধ্যমে চীনের যুবক মুসলিম হবেন। তারপর তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।’ তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, চীনের যুবক এক থেকে দেড় মাস থাকবেন। যাওয়ার সময় হয় ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বা পরে নিয়ে যাবেন।