সরকারি চাকরিতে বিএসসি প্রকৌশলীদের প্রতি বৈষম্য নিরসনসহ তিন দফা দাবিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৫ আগস্ট) স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে থেকে যবিপ্রবির প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

আরো পড়ুন:

ডাকসুর ভোটার তালিকায় ছবি প্রকাশে অনিচ্ছুকদের আবেদনের আহ্বান

ভালো বন্ধু হতে পারে ভালো অভিভাবক: যবিপ্রবি উপাচার্য

তাদের দাবিগুলো হলো- নবম গ্রেড (সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ) পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে সমানভাবে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে এবং ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি হতে হবে, কোনোভাবেই কোটার মাধ্যমে পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না; দশম গ্রেড (উপসহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ) ডিপ্লোমাদের জন্য বরাদ্দকৃত ১০০ শতাংশ কোটা বাতিল করতে হবে, এই পদে ন্যূনতম যোগ্যতা হবে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং, তবে উচ্চতর যোগ্যতাসম্পন্ন বিএসসি বা এমএসসি ডিগ্রিধারীরাও আবেদন করতে পারবে; ‘ইঞ্জিনিয়ার’ পদবীর ব্যবহার শুধু বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীরা ব্যবহার করতে পারবেন, অন্য কেউ এই পদবী ব্যবহার করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’, ‘২৪ এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, কোটা প্রথার সংস্কার’, ‘কোটার নামে অবিচার, চলবে না চলবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রকৌশলীদের সরকারি চাকবিতে যে বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থা রয়েছে, তার বিরুদ্ধে সারা বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা ও প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় যবিপ্রবির প্রকৌশলী শিক্ষার্থীরাও আজ রাস্তায় নেমেছে। প্রকৌশল খাতে ২০১৩ সালে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের আমলে যে দশম গ্রেড সৃষ্টি করা হয়, সেখানে ১০০ শতাংশ ডিপ্লোমাদের জন্যে কোটা রয়েছে। এতে বিএসসি প্রকৌশলীদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে। আমাদের এই নবম গ্রেডেও প্রমোশনের মাধ্যমে ৩৩ শতাংশ কোটা তারা দখল করে নিচ্ছে। ফলে আমাদের অধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে। 

তারা আরো বলেন, আমরা কোনো কোট চাই না। আমরা এখান থেকে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিতে চাই, তারা যেন আমাদের দশম গ্রেডের জায়গাটা রয়েছে, সেটা সংস্কার করে আমাদেরকে পরীক্ষা দেওয়ার যথাযথ সুযোগ দেয় এবং প্রকৌশলীদের সঙ্গে এত বছর ধরে যে বৈষম্য হচ্ছে, দ্রুত এর যৌক্তিক অবসান করে ন্যায্য অধিকার দিতে হবে। এছাড়াও এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন কোটা নয়, বরং মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ সম্পন্ন করে, এই আহ্বান জানাই।

ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র য গ যত পর ক ষ প রক শ সরক র ব এসস

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ