ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্কে চাপে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’
Published: 27th, August 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হচ্ছে আজ থেকে।
এর ফলে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শক্তিশালী অংশীদার ভারত- বিশ্বের সর্বোচ্চ শুল্ক প্রদানকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি হতে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৫০ শতাংশ শুল্ক বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারতের রপ্তানি ও প্রবৃদ্ধির ওপর ভয়াবহ আঘাত হানতে পারে। কারণ সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার ছিল।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শরিফুল হলেন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল
নিউইয়র্কে তথ্য উপদেষ্টার ওপর হামলার চেষ্টা
বুধবার (২৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ট্রাম্পের শুল্কের জবাবে ভারতে উৎপাদন ও ভোগ বা বেচাকেনা বাড়াতে হবে বলে বার্তা দিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে থমকে থাকা উৎপাদন খাতের কারণে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ বাস্তবায়ন আরো কঠিন হয়ে পড়ছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় চলতি মাসের মাঝামাঝিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, শিগগিরই সাধারণ মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য বড় কর-ছাড়ের উপহার আসছে।
স্বাধীনতা দিবসে দিল্লির লালকেল্লা থেকে জনসভায় উজ্জ্বল গেরুয়া পাগড়ি পরে ভাষণ দেন তিনি। মোদি তখন ‘আত্মনির্ভরতার’ ডাক দেন এবং দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীদের দোকানের সামনে ‘স্বদেশি’ বা ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ সাইনবোর্ড লাগানোর আহ্বান জানান।
সেসময় মোদি বলেন, “আমাদের আত্মনির্ভর হতে হবে- হতাশা থেকে নয়, গর্ব থেকে। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক স্বার্থপরতা বাড়ছে। আমাদের কাঁদলে চলবে না, আমাদেরকে নিজেদের শক্তি দিয়ে উঠে দাঁড়াতে হবে। নিজেদেরকে অন্যের কব্জায় আটকে রাখতে রাখতে দেওয়া উচিত নয়।”
চলতি সপ্তাহে তিনি এই বক্তব্য কমপেক্ষ আরো দুটি জনসভায় পুনরাবৃত্তি করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এ বার্তাটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্কের জবাব, যা ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হচ্ছে। শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভারতের পোশাক, হীরা ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিতে বড় আঘাত আসবে। বর্তমানে দেশটির রপ্তানির বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্রমুখী। রপ্তানিকারকদের হিসাবে, ৮৭ বিলিয়ন ডলারের বাজারের অর্ধেকেরও বেশি ঝুঁকিতে পড়বে।
এই ধাক্কার মধ্যে মোদির স্পষ্ট বার্তা- ‘ভারতে তৈরি করো, ভারতে খরচ করো’। মোদি সরকার ইতোমধ্যে আয়কর ছাড়, নতুন ভর্তুকি ও বিকল্প বাজার খোঁজার উদ্যোগ নিয়েছে।
‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ সফল করতে এবার কর সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছে দিল্লি। আয়কর ছাড়ের পর এবার পণ্য ও সেবা কর (জিএসটি) সরলীকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মোদি। দীর্ঘদিনের জটিল জিএসটি ব্যবস্থা সহজ করার উদ্যোগ ভোক্তা ব্যয়ে গতি আনতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান জেফরিজ বিশ্লেষণে জানিয়েছে, এসব ছাড় ও সংস্কার ভোক্তা খাতে ২০ বিলিয়ন ডলারের প্রবাহ সৃষ্টি করবে। মরগান স্ট্যানলির মতে, এ পদক্ষেপ জিডিপি বাড়াতে ও মুদ্রাস্ফীতি কমাতে সহায়ক হবে। বৈশ্বিক অস্থিরতা ও বাণিজ্য সংকটের মধ্যে এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রণোদনা। বিশেষত মোটরসাইকেল, ছোট গাড়ি, পোশাক, সিমেন্টের মতো খাতগুলো এতে বেশি উপকৃত হবে, যেগুলোর চাহিদা দীপাবলির সময় বাড়ে।
আয় হ্রাসের ঝুঁকি থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত কর আদায় ও ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বেশি লভ্যাংশ পেয়ে তা পূরণ হবে। সুইস বিনিয়োগ ব্যাংক ইউবিএস মনে করছে, ভোক্তা পর্যায়ে সরাসরি প্রভাব ফেলায় জিএসটি ছাড়ের প্রভাব আগের আয়কর বা করপোরেট কর ছাড়ের চেয়েও বেশি হবে।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল ১৮ বছর পর ভারতের ঋণমান উন্নীত করেছে। শেয়ারবাজারেও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে প্রবৃদ্ধি আগের মতো নেই- ৮ শতাংশ থেকে অনেকটা কমে এসেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যত বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্যে এক ধরনের ‘নিষেধাজ্ঞা’- যা কয়েক মাস আগেও ছিল অকল্পনীয়।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র ইন ইন ড য় কর ছ ড়
এছাড়াও পড়ুন:
সিডনিতে তিন তারকার হলো দেখা
দূর প্রবাসের ব্যস্ত জীবনে হঠাৎ দেশের চেনা মুখের দেখা মিলে গেলে সেটি কেবল একটি সাধারণ সাক্ষাৎ থাকে না। বরং হয়ে ওঠে দেশের স্মৃতি টেনে আনা এক মুহূর্ত, হয়ে ওঠে একটুকরো বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। এমনই এক দৃশ্যের অবতারণা হলো গত শনিবার অস্ট্রেলিয়ার সিডনির এডমন্ডসন পার্ক মলে।
বাংলাদেশের তিন অঙ্গনের তিন পরিচিত মুখ—ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস, গায়ক তাহসান খান ও অভিনেতা মাজনুন মিজান সেখানে হঠাৎ একত্র হলেন। ব্যস্ত নগরের ভিড়ে এই তিন তারকার দেখা হয়ে গেল এক ‘অপ্রত্যাশিত’ আড্ডায়।
তিন ভুবনের তারকারা
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক ওপেনার ইমরুল কায়েস সম্প্রতি পরিবার নিয়ে সিডনিতে স্থায়ী হয়েছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে বহু স্মরণীয় ইনিংস খেলা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান এখন নতুন করে জীবনের আরেক অধ্যায় শুরু করেছেন অস্ট্রেলিয়ায়। অভিনেতা মাজনুন মিজানও অনেক দিন ধরেই পরিবার নিয়ে সিডনিতে বসবাস করছেন।
ছোট পর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেতা দেশে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। নাট্যাঙ্গনের পরিচিত মুখ হলেও সিডনিতে তিনি অনেকটা পর্দার আড়ালেই থাকেন, তবু প্রবাসী বাঙালিদের কাছে তিনি প্রিয়জন।
অন্যদিকে গায়ক ও অভিনেতা তাহসান খান ছিলেন সফররত। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শহরে কনসার্ট করছেন তিনি। ব্রিসবেন ও অ্যাডিলেডে সফল শো শেষে সিডনির কনসার্টেও হাজারো দর্শকের মন জয় করেছেন। এরপর সামনে রয়েছে মেলবোর্ন ও পার্থে তাঁর পরিবেশনা। সিডনিতে সফল কনসার্টের রেশ এখনো কাটেনি, এরই মধ্যে ঘটে গেল এই মিলন।