উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন আগামী সপ্তাহে বেইজিংয়ে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর বিবিসির।

‘বিজয় দিবস’ নামে পরিচিত এ কুচকাওয়াজ জাপানের বিরুদ্ধে চীনের যুদ্ধের ৮০তম বার্ষিকী এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হবে।

আরো পড়ুন:

দনিপ্রোপেত্রভস্ক অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে রুশ বাহিনী, স্বীকার ইউক্রেনের

শান্তি আলোচনার মধ্যেই ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলা

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ মোট ২৬ জন রাষ্ট্রপ্রধানের এ আয়োজনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

চীন এ কুচকাওয়াজে শত শত যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক, অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেমসহ তাদের সর্বাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন করবে। এটি হতে যাচ্ছে চীনের সেনাবাহিনীর নতুন সামরিক সরঞ্জামের প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রদর্শনী।

 

খুবই সুপরিকল্পিত এ কুচকাওয়াজে তিয়েনআনমেন স্কয়ারে প্যারেড করবেন চীনের কয়েক হাজার সেনা। যার মধ্যে চীনের সামরিক বাহিনীর ৪৫টি তথাকথিত ‘সেনাদলের সারি’ এবং যুদ্ধে অংশ নেওয়া প্রবীণ সৈনিকরা থাকবেন।

৭০ মিনিটের এ কুচকাওয়াজ পর্যবেক্ষণ করবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ধারণা করা হচ্ছে, সামরিক বিশ্লেষক ও পশ্চিমা শক্তিগুলো এ অনুষ্ঠান নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ দিনের ‘ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বের’ প্রশংসা করে জানায়, দুই দেশ আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে।

২০১৫ সালের শেষ বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে উত্তর কোরিয়া শীর্ষ নেতাকে না পাঠিয়ে কেবল উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা চো রিয়ং-হে-কে পাঠিয়েছিল। এবার কিম জং উনের উপস্থিতিকে সম্পর্কের একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বেইজিংয়ে পুতিন ও শি জিনপিংয়ের পাশে কিমের উপস্থিতি হবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টিকে শি জিনপিংয়ের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক অর্জন হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য পুতিনের সঙ্গে একটি চুক্তি করার চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি গত সপ্তাহে তিনি কিমের সঙ্গেও বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

চীনা প্রেসিডেন্ট এখানে ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে, ভূ-রাজনৈতিক এই খেলার তাস তার হাতে রয়েছে। কিম ও পুতিন- দুজনের ওপরই সীমিত হলেও তার প্রভাব রয়েছে।

সময়ের দিক থেকেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। হোয়াইট হাউজ ইঙ্গিত দিয়েছে, অক্টোবরের শেষ দিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এশিয়া সফরে আসতে পারেন এবং তিনি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহী।  

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বসার আগে কিম ও পুতিনের কাছ থেকে সরাসরি সব তথ্য জেনে নেবেন শি জিনপিং। ফলে আলোচনার কেন্দ্র থেকে তিনি বাদ পড়ছেন, এমন আশঙ্কা তার থাকবে না।

কিম সর্বশেষ বেইজিং সফর করেছিলেন ২০১৯ সালে, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে। এর আগে তিনি ২০১৮ সালে টানা তিনবার চীন সফর করেছিলেন। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন কিম খুব কমই বিদেশ ভ্রমণ করেন।

চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে পশ্চিমা বিশ্বের বেশিরভাগ নেতার যোগ দেওয়ার আশা করা হচ্ছে না, কারণ ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ান নেতা পুতিনের সঙ্গে তাদের মতপার্থক্য রয়েছে।

জাপান ইতিমধ্যে বিশ্ব নেতাদেরকে এই অনুষ্ঠানে অংশ না নিতে আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির অভিযোগ, এই কুচকাওয়াজে ‘জাপান-বিরোধী মনোভাব’ রয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ইউক র ন অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ