ওরে নীল দরিয়া: আবদুল জব্বারের কণ্ঠে এক সমুদ্রের গল্প
Published: 30th, August 2025 GMT
বাংলা গানের কিংবদন্তি, স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বারের আজ অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট কিডনি, হৃদ্রোগ ও প্রস্টেটসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
স্বাধীনতার দিনগুলোতে মুক্তিকামী মানুষকে গান গেয়ে উজ্জীবিত করেছিলেন তিনি। স্বর্ণকণ্ঠের এই গায়ক বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিচ্ছেদ্য নাম। তার অসংখ্য কালজয়ী গানের মধ্যে অন্যতম— ‘ওরে নীল দরিয়া, আমায় দে রে দে ছাড়িয়া।’
গানটির নেপথ্যের তিন কারিগরই আজ আর বেঁচে নেই। ১৯৬৯ সালের দিকে সুরকার আলম খান অসুস্থ শরীরে বসে গুনগুন করে তুলেছিলেন একটি সুর। দীর্ঘদিন সেটি রয়ে গিয়েছিল ডায়েরির পাতায়, মনে মনে। ব্যবহার হয়নি কোনো চলচ্চিত্রে। অনেক বছর পর পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন ‘সারেং বৌ’ চলচ্চিত্রের জন্য গান তৈরি করতে বললে তিনি এই সুরটি পরিচালককে শোনান।
গীতিকার মুকুল চৌধুরী সেই সুর অনুযায়ী পরে কথা বসান। ট্রেনের হুইসেল, পানিতে বৈঠার ছলাৎছলাৎ শব্দ, একতারার সুর— সব মিলিয়ে তৈরি হয় এক অনবদ্য সংগীত। সেই অমর সুরে প্রাণ দেন আবদুল জব্বার। গানটির নেপথ্যকথা জীবদ্দশায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন সুরকার আলম খান।
১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘সারেং বৌ’ সিনেমার এই গান মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশের গ্রাম থেকে শহর, মফস্বল থেকে নদীর ঘাট— যেখানেই যাওয়া যাক, কানে বাজতো আবদুল জব্বারের কণ্ঠ। যেন এই গানের নীল দরিয়ায় ভেসে চলেছিল গোটা জাতি।
শুধু এই গান নয়, মুক্তিযুদ্ধকালীন তার গাওয়া ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘জয় বাংলার জয়’, ‘বাংলার স্বাধীনতা আনলো কে’—এমন সব গান মুক্তিকামী মানুষকে উজ্জীবিত করেছে। ভারতের বিভিন্ন শহরে গণসংগীত গেয়ে তিনি সংগ্রহ করেছিলেন ১২ লাখ রুপি, যা তিনি তুলে দিয়েছিলেন মুক্তিকামী বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে।
আবদুল জব্বার পেয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান। ১৯৮০ সালে একুশে পদক এবং ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।
ঢাকা/রাহাত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে