কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের দান বাক্সে এবার ৪ মাস ১৭ দিনে মিলেছে ১২ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ টাকা। এছাড়াও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রা পাওয়া গেছে। দানের এইসব অর্থ মসজিদের স্থানে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ছয়তলা ইসলামী কমপ্লেক্স বানানোসহ জেলার দরিদ্র-অসহায় রোগীদের চিকিৎসা কাজে ব্যায় হবে।

শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত ৮টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান।

এদিন সকাল সাতটায় মসজিদের লোহার দানবাক্স খুলতেই দেখা মিলে শুধু টাকা আর টাকা। এসব টাকা বস্তায় ভরে নেওয়া হয় মসজিদেরই দোতলায়। তারপর সকাল থেকে টানা সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে গণনা। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় মসজিদের মেঝেতে বসে টাকা গোনেন মাদ্রাসা ছাত্র-শিক্ষক, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ প্রায় সাড়ে চারশ’ মানুষ। তিন থেকে চারমাস পরপরই এমন দৃশ্যের দেখা মেলে কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে।

দানবাক্সে পাওয়া বিদেশি মুদ্রা।

এর আগে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল সর্বশেষ খোলা হয়েছিল দানবাক্স গুলো। দিনভর টাকা গণনা শেষে ১১টি দানবাক্স থেকে তখন পাওয়া যায়, রেকর্ড ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা, রূপা ও স্বর্ণালংকার।

দান করতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, এ মসজিদে সঠিক নিয়তে মানত করলে রোগ-বালাই দূর হওয়াসহ বিভিন্ন মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এমন বিশ্বাস থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সকল ধর্মের মানুষ এখানে মানত করেন। মানতে নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার, বৈদেশিক মুদ্রা, গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগিসহ বিভিন্ন সামগ্রী দান করেন মানতকারীরা।

স্বর্ণালঙ্কারও দান করেন অনেকে।

এরইমধ্যে দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে এই পাগলা মসজিদ। চলতি বছরের ৪ জুলাই দূর-দূরান্তের মানুষের জন্য খোলা হয়েছে অনলাইন ডোনেশান পদ্ধতি। খোলার পরে সেখান থেকে পাওয়া যায় ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

শনিবার পাওয়া টাকা ছাড়াও বর্তমানে মসজিদের ব্যাংক একাউন্টে ৯১ কোটি টাকা জমা হয়েছে। যা দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মসজিদের সভাপতি ফৌজিয়া খান।

টাকা গণনার কাজে নিয়োজিত ছিলেন ছাত্র-শিক্ষকসহ প্রায় ৪০০ জন।

জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় আড়াইশ’ বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদ এলাকা জেলা শহরের হারুয়ায় আসেন। তাকে ঘিরে সেখানে অনেক ভক্তকুল সমবেত হন। তার মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এই মসজিদটি গড়ে ওঠে। পরে কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে।

ঢাকা/রুমন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বর ণ ল দ নব ক স মসজ দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় ভিসা আবেদন কেন্দ্র চালু করেছে ফ্রান্স

রাজধানী ঢাকায় অত্যাধুনিক ভিসা আবেদন কেন্দ্র চালু করেছে ফ্রান্স। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ভিসাপ্রার্থী বাংলাদেশি আবেদনকারীদের উন্নত সেবা দেওয়ার জন্য আবেদন কেন্দ্রটি চালু করা হয়েছে।

বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গুলশান অ্যাভিনিউয়ের র‌্যাংগস জেড স্কয়ারে এ কেন্দ্র গত মঙ্গলবার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই।

আবেদনকারীরা বুধবার থেকে ভিএফএস গ্লোবালের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আগে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করে এ কেন্দ্রে তাদের ভিসা আবেদন জমা দিতে পারবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মাসদুপুই বলেন, এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো বাংলাদেশিদের ভ্রমণের সুবিধা আর দক্ষতা বাড়ানো।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এর ফলে দৈনিক আবেদন জমা পড়ার সংখ্যা বাড়বে, অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে অপেক্ষার সময় কমবে, অর্থ প্রদানের বিকল্পগুলো আধুনিকীকরণ হবে এবং একটি বিশেষায়িত কেন্দ্রের মাধ্যমে আবেদনকারীদের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত হবে।

ভিএফএস গ্লোবাল ২০০৪ সাল থেকে ভিসা প্রক্রিয়া করার কাজে ফরাসি সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। বর্তমানে ২৯টি দেশে ফ্রান্সের জন্য ৭০টি ভিসা কেন্দ্র পরিচালনা করছে তারা।

ভিএফএস গ্লোবাল জানিয়েছে, তাদের ভূমিকা কেবল আবেদনপত্র সংগ্রহ, প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও বায়োমেট্রিক তালিকাভুক্তির মতো প্রশাসনিক কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

শেনজেন ব্যবস্থার আওতায় ভিসাসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত, অনুমোদন ও প্রত্যাখ্যান করা ফরাসি দূতাবাসের এখতিয়ারভুক্ত।

নতুন এ আবেদন কেন্দ্রটি রবি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে পারবেন https://visa.vfsglobal.com/bgd/en/fra এই ঠিকানায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ