গাইবান্ধার সাঘাটায় ১৮ বছর বয়সী এক নববধূকে বাসর রাতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযাগে স্বামী আসিফ মিয়াসহ সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে স্বামী আসিফকে আটকে রেকে বাকি ছয়জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। 

গত বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাতে সাঘাটা উপজেলার কামালেরপাড়া ইউনিয়নের ওসমানের পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযুক্ত বর আসিফ মিয়া কামালেরপাড়া ইউনিয়নের ওসমানেরপাড়া গ্রামের আশাদুল ইসলামের ছেলে। 

পুলিশ জানিয়েছে, সাঘাটা উপজেলার কামালেরপাড়া ইউনিয়নের ওসমানেরপাড়া গ্রামের আশাদুল ইসলামের ছেলে আনিস মিয়ার সঙ্গে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কোচাশহর ইউনিয়নের ভাগগরীব গ্রামের নাজিম উদ্দিনের মেয়ের বিয়ে হয়। 

গত বুধবার ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দেন মোহর ধার্য করে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর গভীর রাতে স্বামী আসিফ মিয়া স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন। পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে গণধর্ষণের শিকার হন নববধূ। 

ঘটনার পর ওই নববধূকে প্রথমে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন ভুক্তভোগীর পরিবার। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই বাদি হয়ে অজ্ঞাত ও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে সাঘাটা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

ওসমানের পাড়ার ইউপি সদস্য আবুল কাশেম বলেন, “বুধবার শেষ রাতে বিয়ে বিদায় হয়। বৃহস্পতিবার রাতে গণ ধর্ষণের শিকার হন ওই মেয়ে। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।”

তিনি আরো বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত রহস্যজনক। ছেলের ঘরের আশপাশে প্রতিবেশিদের অনেক ঘর রয়েছে। বাড়ি ভর্তি লোক ছিল। গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা ও সাঘাটা থানা থেকে পুলিশ এসে আমাদের এখানকার কয়েকজন ছেলেসহ বর আনিসকে সাঘাটা থানায় ধরে নিয়ে যায়।”

শনিবার রাতে কামালেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বকুল বলেন, “এ ঘটনার কোন সত্যতা নেই। ডাহা মিথ্যা। ছেলে কেন বন্ধুবান্ধব নিয়ে নিজের বিবাহিত স্ত্রীকে ধর্ষণ করবে?” 

তিনি আরো বলেন, “ছেলে এবং মেয়ের দুই পরিবারই অত্যন্ত গরিব। ছেলে যদি বন্ধুবান্ধব নিয়ে এমন ঘটনা ঘটাবে, তাহলে বাকিদেরকে ছেড়ে দিয়ে ছেলেকে জেলে কেন পাঠানো হলো? সে তো ওই মেয়ের স্বামী। স্বামী কখনো ধর্ষক হয়? পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি।”

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ফাহাদ আল আসাদ জানান, শুক্রবার দুপুরে এক নববিবাহিতা নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার পরিবার। মেয়েটির গোপনাঙ্গ থেকে রক্তপাত হচ্ছিল। ওই নারীর শরীরে পাওয়া আলামতগুলো ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের সাথে মিলে যায়। মেয়েটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শনিবার রাতে সাঘাটা থানার ওসি বাদশা আলম বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী আসিফ মিয়াসহ সাত জনকে আটক করা হয়েছিল। আপাতত তাদের মধ্যে ছয় জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্তে দোষী হলে তাদেরকে আবার গ্রেপ্তার করা হবে। অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

তবে স্বামীকে কেন জেল হাজতে পাঠানো হলো- এমন প্রশ্নে তিনি কিছু জানাতে রাজি হননি। ফোনও কেটে দেন।

ঢাকা/মাসুম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ ব ন দগঞ জ আস ফ ম য় ওসম ন র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‌‘মানসিক ভারসম্যহীন’ ছেলের লাঠির আঘাতে বাবার মৃত্যু

নেত্রকোণার মদনে ছেলের লাঠির আঘাতে মোস্তফা মিয়া (৬৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শনিবার (১ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের ঘাটুয়া গ্রামে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।

মদন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামসুল আলম শাহ বলেন, “ছেলের আঘাতে মোস্তফা মিয়া নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরো পড়ুন:

গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে গণপিটুনি, নিহত ৩

বাগেরহাটে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু

নিহত মোস্তফা মিয়া একই গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে। অভিযুক্তের নাম সাজ্জাদ মিয়া (২৫)।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সাজ্জাদ দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি প্রায়ই অস্বাভাবিক আচরণ করেন এবং বিভিন্ন জায়গায় চলে যান। গতকাল শনিবার রাতে খাবার শেষে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মোস্তফা মিয়া। সাজ্জাদ ঘরে ঢুকে লাঠি দিয়ে তার বাবার মাথায় আঘাত করেন। ঘটনাস্থলেই মোস্তফা মিয়া মারা যান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।

ঢাকা/ইবাদ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ