চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩ উপজেলায় কারিগরি স্কুল নির্মাণ ঝুলছে
Published: 5th, September 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিন উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নির্মাণকাজ ‘জরাগ্রস্ত’ হয়ে পড়েছে। জমি অধিগ্রহণে জটিলতা এবং সমন্বয়ের অভাবে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজে কোন গতি নেই। এখন পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য জমি অধিগ্রহণ করাই হয়নি। অবকাঠামো নির্মাণ তো দূরের কথা।
তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর।
টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন প্রকল্পটি (২য় পর্যায়) ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পাস হয়। দেশজুড়ে ৩২৯টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দেয় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার সরকার। সেসময় খরচ ধরা হয় ২০ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তা শেষ করতে বলা হয়। দীর্ঘ সময়ে প্রকল্পটির অগ্রগতি না হওয়ায় ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা গেছে, এসব উপজেলা এবং নির্ধারিত ওই টাকার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩টি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন নির্মাণের কথা রয়েছে। সেগুলো- শিবগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ, গোমস্তাপুর টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ ও ভোলাহাট টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ।
প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ছিল কর্মক্ষম যুবকদের দেশ-বিদেশে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চাকরি বাজারের চাহিদার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবিকার লক্ষ্যে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং চারটি ট্রেড ও স্বল্পমেয়াদী প্যারা ট্রেড কোর্স চালু করতে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন করা হবে।
প্রকল্পের প্রধান কাজ হিসেবে ধরা হয় প্রতিটি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের জন্য ৩ একর বা ৯ বিঘা করে জমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন। আরও রয়েছে, অ্যাকাডেমিকসহ প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, শিক্ষক ডরমিটরি, ২০০ শয্যার ছাত্রী হোস্টেল নির্মাণ ও ওয়ার্কশপ বিল্ডিং নির্মাণ।
এছাড়া সীমানাপ্রাচীর ও গেট নির্মাণ, আসবাবপত্র সংগ্রহসহ অন্য কাজও রয়েছে। উপজেলা সদরের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে এইসব প্রতিষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত হয়, যেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীরা সহজে যোগাযোগ করতে পারেন।
কারিগরি শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান, বৈদেশিক কর্মসংস্থানে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। দেশের দেড় কোটি লোক বিদেশে স্বল্প মজুরিতে চাকরি করার কারণে আশানুরূপ বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন হচ্ছে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার এ প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে।
অথচ চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩টি কারিগরি প্রতিষ্ঠান নির্মাণে সাড়ে ৫ বছর আগের প্রকল্পে কোন আগ্রগতি নেই। এ সময়ের মধ্যে ১ শতাংশ কাজও শেষ হয়নি। এসব প্রতিষ্ঠান নির্মাণের জন্য এখনও ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়নি। ভূমি অধিগ্রহণ কাজ শেষ না হলে অবকাঠামোগত উন্নয়নও দৃশ্যমান অসম্ভব। ফলে তরুণদের কারিগরিভাবে দক্ষ করতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছিল, সেটা ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মু.
টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নির্মাণকাজ প্রকল্প পরিচালক (পিডি) যুগ্ম সচিব মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘‘প্রকল্পটির সঙ্গে এর আগে চারজন প্রকল্প পরিচালক জড়িত ছিলেন। এ প্রকল্পের কাজ কেন দেরি হয়েছে তারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে আমি দায়িত্ব নিয়ে চেষ্টা করছি যাতে গতি বাড়ে।’’
প্রকল্পের ধীরগতি সম্পর্কে তিনি জানান, ডিপিপিতে অনুমোদনের তুলনায় ভূমির দাম বেশি রয়েছে। যার কারণে ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন, ভূমি মন্ত্রণালয়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় সমন্বয় করতে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হচ্ছে। এ জন্য প্রকল্পের কাজে ধীরগতি।
ঢাকা/শিয়াম/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ র প রকল প র গ রহণ কর উপজ ল য় র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বাহরাইনের প্রতি বাংলাদেশিদের জন্যে ভিসা চালুর অনুরোধ
ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, দক্ষ ও আধা দক্ষ শ্রমিকসহ বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা সুবিধা পুনরায় চালু করতে বাহরাইনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
উপদেষ্টা দু’দেশের জনগণের সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে ভিসা পুনরায় চালুর এ অনুরোধ জানান।
বাহরাইনে ২১তম আইআইএসএস মানামা সংলাপের ফাঁকে শনিবার (১ নভেম্বর) দেশটির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল বিন খালিফা আল ফাদেলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন তিনি। এ সময়ে ভিসা পুনরায় চালুর অনুরোধটি জানান উপদেষ্টা।
রবিবার (২ নভেম্বর) ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে তৌহিদ হোসেন কমিউনিটির কল্যাণ নিশ্চিত এবং সামাজিক সম্পর্ক মজবুতের লক্ষ্যে বাহরাইনে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ‘ফ্যামিলি ভিসা’ প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করারও অনুরোধ জানান।
বাহরাইনের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির অর্থনীতিতে বাংলাদেশের নাগরিকদের অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি জানান, তার দেশের সরকার ধাপে ধাপে ভিসা সুবিধা পুনরায় চালুর জন্য কাজ করছে।
বৈঠকে উভয়ে দু’দেশের দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হস্তান্তরে একটি চুক্তি সম্পাদনের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেন।
তৌহিদ হোসেন ২১তম মানামা সংলাপের অধিবেশনের পাশপাশি আরো কিছু অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। এসব আয়োজনে বিশ্ব নেতা, বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও নীতি নির্ধারকরা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করবেন।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/ইভা