রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে অংশ নিতে ‘বিশেষ বিবেচনায়’ দ্বিতীয়বার মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ চেয়েছেন শাখা ছাত্রদলের পাঁচ নেতা। একই সুযোগ চেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এক সমন্বয়কও।

তাদের কারও নিয়মিত ছাত্রত্ব না থাকায় বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) উপাচার্যের কাছে লিখিত আবেদন জমা দেন তারা।

আরো পড়ুন:

রাকসু: সংগ্রামী শাহরিয়ার মোর্শেদ কাজ করতে চান সেশনজট নিয়ে

রাবি ছাত্রীদের নিয়ে ছাত্রদল নেতার কটূক্তির প্রতিবাদে ইবিতে মানববন

ওই নেতারা হলেন, শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শাকিলুর রহমান সোহাগ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তুষার হাসান এবং সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না।

আবেদনপত্রে তারা উল্লেখ করেন, ‘ফ্যাসিস্ট শাসনামলে’ রাজনৈতিক হয়রানি ও কারাবরণের কারণে সুষ্ঠুভাবে মাস্টার্স শেষ করতে পারেননি। তাই দ্বিতীয়বার মাস্টার্স করার সুযোগ চান তারা।

জানা যায়, শফিক ও তুষার ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে এবং রাহী, জহুরুল ও সোহাগ ফোকলোর অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে আবেদন করেছেন। মুন্নার বিভাগের নাম জানা যায়নি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একসময় দ্বিতীয় মাস্টার্স করার সুযোগ থাকলেও পরে সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ছাত্রদল সভাপতি রাহী বলেন, “আমি দ্বিতীয়বার মাস্টার্সের জন্য আবেদন করেছি। দল চাইলে নির্বাচনে অংশ নেব।”

সাবেক সমন্বয়ক মুন্না বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদী শাসনামলে রাজপথে ছিলাম। ছাত্রত্ব শেষ হলেও নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। এজন্য ভর্তির সুযোগ চেয়েছি।”

ফোকলোর অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “আসন্ন রাকসু নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে আমরা কয়েকজন শিক্ষক উপাচার্যকে দ্বিতীয়বার মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “আবেদনকারীদের জন্য আমি সুপারিশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দ্বিতীয় মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ রয়েছে। উপাচার্য বিষয়টি বিবেচনা করবেন ও আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করছি।”

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মুজাহিদ হোসাইন বলেন, “আমার কাছে মনে হচ্ছে এটা রাকসু বানচাল করার সর্বশেষ প্রচেষ্টা। তারা এর আগেও নানাভাবে ষড়যন্ত্র করেছে, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। যদি তারা দ্বিতীয় মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ পাই, তাহলে নতুন করে আবার সমস্যা দেখা দেবে। রাকসু আবার পিছিয়ে যেতে পারে বা নাও হতে পারে।”

সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “রাকসুর মনোনয়ন বিতরণ শেষ, এতদিন তাড়া কোথায় ছিলো? রাকসু নিয়ে গত ১ বছর ধরে আলাপ চলছে তাদের উচিত ছিল, তখন এগুলো নিয়ে কথা বলা। রাকসু নির্বাচনের আছে আর কয়দিন বাকি। এখন এসব নিয়ে আলাপ রাকসু নির্বাচন বানচাল করার একটা পায়তাড়া ছাড়া কিছু না। যদি সেকেন্ড মাস্টার্স করার সুয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে সেটা সবারই পাওয়া উচিত।”

আরেক সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, “রাকসুকে মূলত একটা দীর্ঘ প্রসেসে নিয়ে যাওয়ার একটা পরিকল্পনা এটা। এখন যদি সেকেন্ড মাস্টার্সের সুযোগ দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে রাকসু পিছিয়ে যাবে। এটা আমরা চাই না। ডাবল মাস্টার্স হোক আর যাই হোক, নির্বাচন ২৫ তারিখেই হতে হবে।”

তিনি বলেন, “২৮ জুলাই রাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে। তাদের কি তখন হুশ ছিল না? তারা এখন এসব বিষয়গুলো সামনে আনছে সুতরাং আমার মনে হচ্ছে এটা রাকসুকে বানচাল করার একটা প্রচেষ্টা।”

আইন বিভাগ শিক্ষক অধ্যাপক ড.

এম আব্দুল হান্নান বলেন, “এটার সঙ্গে রাকসুর কোনো সামঞ্জস্যতা নেই। সেকেন্ড মাস্টার্সের বিষয়ে উপাচার্য ৭ তারিখ একাডেমিক মিটিং দেখেছেন তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।”

ফিসারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, “এমন কোন রেকর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই যে, সেকেন্ড মাস্টার্সের আবেদন করতে পারবে। যদি চারজন করতে পারে তাহলে চার হাজার জনও করতে পারে, আমি নিজেও করতে পারি। কোনো দল বা ব্যক্তি এখানে বিষয় না। এটা একটা ভর্তি প্রক্রিয়া।”

তিনি বলেন, “এখানে যদি চারজন সুযোগ পায় সেখানে আরো ৪০০ জন আবেদন করবে, তারাও ভর্তি হবে। আগে তারা সুযোগ পাক তারপর দেখা যাক কি হয়।”

উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “ছাত্রদলের চার নেতার আবেদন পেয়েছি। কোনো দল বা পক্ষের সুপারিশ নয়, দ্বিতীয় মাস্টার্সের বিষয়টি অ্যাকাডেমিকভাবে দেখা হচ্ছে।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল স ব ক সমন বয়ক ভর ত র স য গ ব শ বব দ য উপ চ র য ছ ত রদল ন বল ন কর র স

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ