পণ্যের মতো ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিক্রি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ প্রিন্স।

তিনি বলেছেন, “প্রার্থীদের মধ্যে সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবর্তে ব্যক্তিগত আক্রমণ, অপমানজনক মন্তব্য এবং ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানোর প্রবণতা বাড়ছে। পণ্যের মতো ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিক্রি করা হচ্ছে। ক্যাম্পাসের আড্ডা থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যন্ত এ অপপ্রচার শুরু হয়ে গেছে।”

আরো পড়ুন:

কয়েকটি ফেসবুক পেজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ঢাবি প্রশাসন

ডাকসুর আচরণবিধি ভেঙে পরিচ্ছন্নতা অভিযানের ঘোষণা ছাত্রদলের

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, “বিভিন্ন দল সমর্থিত প্রার্থী ও প্যানেলের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নাজিরাবাজার, ধানমন্ডি স্টার কাবাব, আজিমপুরসহ ক্যাম্পাসের আশেপাশের হোটেল ও রেস্তোরাঁয় ডাকসু ভোটারদের নিয়ে গিয়ে আপ্যায়ন করে নিজেদের দিকে ভেড়ানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। এ ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপ নির্বাচনকে প্রতিযোগিতার বদলে বাজারে পরিণত করছে।”

তিনি আরো বলেন, “শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের কাছে নানা ধরণের খাবার, উপহার সামগ্রী ও উপঢৌকন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি ভোটের জন্য অর্থের আদান-প্রদান হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের জেলাগুলোর স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ শিক্ষার্থীদের রীতিমত ফোন ও মেসেজ দিয়ে তাদের দল সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।”

এ সময় তিনি প্রশাসনের কাছে তিন দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে সক্রিয় হয়ে অনৈতিক আপ্যায়ন, উপটৌকন বিতরণ, অর্থের লেনদেন, ব্যক্তিগত আক্রমণ ও গুজব ছড়ানো বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে; আচরণবিধি ভঙ্গকারীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং প্রার্থীদের ভাষার শালীনতা বজায় রাখতে বাধ্য করতে হবে; শিক্ষার্থীরা যেন নির্ভয়ে, স্বাধীনভাবে ও তাদের বোঝাপড়া অনুযায়ী ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সে পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর সেমিনার

জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের করা তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশের ওপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

আরো পড়ুন:

শাকসুর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা

শাকসুর রোডম্যাপের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) এবং সহযোগিতায় ছিলেন ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটরস অফিস (ইউএনআরসিও)।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএম সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইসমাইল হোসেন, রাজনৈতিক অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাবুল হক ও অধ্যাপক ড. দিলারা রহমান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস অফিসার জাহিদুল হোসেন।

তিনি বলেন, “ইউএন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে মোট ৪৩টি সুপারিশ করেছি। এ সুপারিশগুলো সবার পড়া উচিত। পহেলা জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যা ঘটেছে, জাতিসংঘ সেটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা এই আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ে করছি, কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই রাষ্ট্রের মস্তিষ্ক। রাষ্ট্র হলো শরীর, আর ছাত্ররা দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশের দুই ধরনের অপরাধ আছে— দেওয়ানী ও ফৌজদারি। ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির সংঘাত মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, কিন্তু রাষ্ট্র যখন জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালায়, তখনই মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটে। রাষ্ট্র যদি কোনো সিস্টেমকে দমন বা হরণ করে, তখন তা মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হয়।”

জাহিদুল হোসেন আরও বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হেলমেট বাহিনী যে সহিংসতা ঘটিয়েছে, তা ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়, কারণ রাষ্ট্র তাদেরকে সহযোগিতা দিয়েছে। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট আকাশ থেকে পড়েনি—বাংলাদেশে যা ঘটেছে, সেটিই এখানে প্রতিফলিত হয়েছে। তাই এই রিপোর্ট সবাইকে পড়া উচিত।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশে এক অদ্ভুত ধরনের সরকারের বিরুদ্ধে এই বিপ্লব হয়েছিল— আয়নাঘর সরকার, রাতের ভোটের সরকার। যারা এ সরকারের পতনে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। জুলাই চেতনা ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। শেখ হাসিনার ভুয়া ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে এসে সত্যিকার জনগণের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”

এছাড়া অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবে শহীদ নয়া দিগন্তের সিলেট ব্যুরো প্রধান তুরাবের বড় ভাই আবদুল জাবের উপস্থিত থেকে স্মৃতিচারণ ও বক্তব্য রাখেন।

সেমিনার শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টভিত্তিক প্রকাশনা, মানবাধিকার সংক্রান্ত বই, নীতিমালা ও স্মারক টি-শার্ট বিতরণ করা হয়।

ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুর তফসিল সোমবার 
  • রূপগঞ্জে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে লিফলেট বিতরণ 
  • শাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর সেমিনার