ডাকসু জাতীয় দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে: ঢাবি উপাচার্য
Published: 8th, September 2025 GMT
তিন কারণে এবারের ডাকসু নির্বাচন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
তিনি বলেছেন, “তিনটি কারণে এবারের ডাকসু নির্বাচন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত, এটি শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি, যা ধীরে ধীরে জাতীয় দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্বিতীয়ত, গণঅভ্যুত্থানের মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যের সঙ্গে ডাকসুর সক্রিয়তা সরাসরি সম্পর্কিত। তৃতীয়ত, এই নির্বাচন বিভিন্ন অংশীজনকে একত্রিত করেছে এবং পারস্পরিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করেছে।”
আরো পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচন: যানবাহন চলাচলে ডিএমপির নির্দেশনা
ঢাবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ‘মিথ্যা’ অভিযোগ
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডাকসু নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আগামীকাল মঙ্গলবার বহুল প্রতীক্ষিত ডাকসু নির্বাচন। ১১ মাসের দীর্ঘ প্রস্তুতি, হাজারো শিক্ষার্থীর আকাঙ্ক্ষা আর নানা বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে আমরা আজ চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি। ডাকসুকে ঘিরে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রক্টরিয়াল টিম, বিএনসিসি, ভলান্টিয়ার টিমসহ সবাই মাঠে রয়েছে। তথ্যের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সাংবাদিকরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।”
তিনি আরো বলেন, “এবারের ডাকসু নির্বাচন নানাদিক থেকে ব্যতিক্রমী। প্রথমবারের মতো প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী একসঙ্গে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এবার বুথের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮১০টিতে, যেখানে অতীতে ছিল মাত্র ২০০ থেকে ২৫০টি বুথ। এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আয়োজন।”
উপাচার্য বলেন, “রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিয়েও কোনো অভিযোগ নেই। এবার দায়িত্বে আছেন সর্বজনস্বীকৃত গ্রহণযোগ্য শিক্ষকেরা। এছাড়া প্রার্থীদের নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে বিতর্কের আয়োজন করা হয়েছে এবং ভোটকেন্দ্রের ফলাফল গণনার সময় সরাসরি ডিসপ্লেতে দেখানো হবে।”
প্রার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, “ডাকসু একটি অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া। স্বাধীনতার পর থেকে মাত্র আটবার এই নির্বাচন হয়েছে। অনেক প্রশাসন এমন আয়োজন করতে আগ্রহী থাকে না। কিন্তু আপনারা এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জিতুন বা হারুন, সেটিই হবে আপনাদের বড় অবদান। তাই একে অপরের প্রতি সহনশীল হোন।”
“হার-জিত যাই হোক, আমাদের মধ্যে এমন কিছু নেই, যাতে বড় কোনো সংঘাত তৈরি হয়। তবুও কেউ যদি আইন ভঙ্গ করে, তবে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” -যোগ করেন নিয়াজ আহমদ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব