নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নির্বাচনে বিক্ষোভকারীদের মধ্যেই মতবিরোধ
Published: 11th, September 2025 GMT
নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কে হবেন তা নির্ধারণ করতে জেন-জি বিক্ষোভকারী, সেনাবাহিনী এবং প্রেসিডেন্টের মধ্যে আলোচনা চলছে। তবে এখনো পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে কারো নাম প্রকাশ করা হয়নি। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, সরকার প্রধান নির্ধারণ নিয়ে খোদ জেন-জি বিক্ষোভকারীদের মধ্যেই মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জেন-জি বিক্ষোভকারী দলটি জানিয়েছে, তাদের নিজেদের মধ্যে ছয় ঘন্টাব্যাপী ভার্চুয়াল বৈঠকে দুটি নাম উঠে এসেছিল। এদের মধ্যে এক জন হচ্ছেন- কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র বালেন শাহ এবং নেপালের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি।
এনডিটিভি অনলাইন জানিয়েছে, তরুণ নেপালিদের কাছে একজন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন শাহ অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। এর ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শুধু এক জনের নামই অবশিষ্ট ছিল- সাবেক প্রধান বিচারপতি কার্কি। তবে, এখন দেখা যাচ্ছে, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একটি অংশ তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের যুক্তি হচ্ছে, সংবিধান সাবেক বিচারকদের প্রধানমন্ত্রী হতে নিষেধ করে এবং কার্কি ৭৩ বছর বয়সে তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ‘অত্যধিক বয়স্ক।’
এরপরেই আলোচনায় উঠে আসেন নেপালের বিদ্যুৎ সংকট সমাধানকারী প্রকৌশলী কুল মান ঘিসিং। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘিসিংকে বিক্ষোভকারীদের একাংশ ‘দেশপ্রেমিক এবং সবার প্রিয়’ বলে অভিহিত করেছেন। বিষয়টি নেপালের অনেককেই অবাক করেছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, বোঝা যাচ্ছে, সরকার প্রধান নির্বাচন নিয়ে খোদ জেন-জি বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বিভেদ বা দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
এনডিটিভি আরো জানিয়েছে, জেন-জি বিক্ষোভকারীদের প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাঠামো অস্পষ্ট। নেপালের ২০১৫ সালের সংবিধান অনুসারে, সংখ্যাগরিষ্ঠ দল থেকে একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে হবে। যদি কেউ না থাকে, তাহলে রাষ্ট্রপতি একজন উত্তরসূরি নিয়োগ করেন, অথবা যেকোনো সংসদ সদস্য আস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে পারেন। যদি তারা ভোটে ব্যর্থ হন, তাহলে সংসদ ভেঙে দেওয়া হতে পারে এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
প্রসঙ্গত, জেন-জি বিক্ষোভকারীদের আন্দোলনের মুখে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। বিক্ষোভকারীরা দেশটির পার্লামেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করেছে। বুধবার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামে সেনাবাহিনী।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত গাড়ির নিচে পড়েও অক্ষত অবস্থায় ফিরল ৩ বছরের শিশুটি
ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদের নোবলনগর এলাকায় গতকাল বুধবার গাড়ির নিচে পড়ে গিয়েছিল তিন বছরের এক শিশুকন্যা। তবে অনেকটা অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে সে।
অভিযোগ উঠেছে, এক কিশোর গাড়িটি চালাচ্ছিল। এ ঘটনা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। পরে এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গাড়িতে নম্বর প্লেট ছিল না, যা আইন লঙ্ঘনের শামিল। পুলিশ ঘটনার পর মামলা করে তদন্ত শুরু করেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন শিশুটি তার বাড়ির বাইরে রাস্তায় খেলা করছিল। কিশোর চালকটি তাকে দেখতে না পেয়ে তার ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা চিৎকার শুরু করার পর চালক গাড়িটি থামায়। সঙ্গে সঙ্গে লোকজন জড়ো হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গাড়ি থামানোর পর ভীতসন্ত্রস্ত শিশুটি চিৎকার করতে করতে গাড়ির নিচ থেকে হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসছে। এর মধ্যে চালকও বাইরে বেরিয়ে আসে। এরপর একজন নারী ওই কিশোর চালককে চড় মারছেন। এ সময় শিশুটি হাঁটাচলা করতে পারছিল।
আহমেদাবাদ পুলিশ নিশ্চিত করেছে, তারা চালকের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় ‘জি’ ডিভিশন ট্রাফিক থানায় বিএনএস আইনে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘনকারী ওই কিশোরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এটি সড়কের নিরাপত্তা এবং আবাসিক এলাকায় আরও বেশি সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অনেকে কথা বলেছেন।
একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী ঘটনাটিকে ‘খুবই উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘এটি ১০০ ভাগ আটকানো যেত। এর একটাই অলঙ্ঘনীয় নিয়ম—অপ্রাপ্তবয়স্ক বা লাইসেন্সবিহীন কোনো ব্যক্তিকে কখনোই গাড়ি চালাতে দেওয়া উচিত নয়। গাড়ির চাবি শিশুদের কাছ থেকে নিরাপদে দূরে রাখতে হবে। লাইসেন্সধারী চালকের জন্য নিয়ম হলো, সব সময় ধীরে ধীরে গাড়ি ঘোরানো এবং ভালোভাবে সব লুকিং গ্লাস ও ব্লাইন্ড স্পট পরীক্ষা করা।’
আরেক ব্যবহারকারী মা–বাবাকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই ভিডিও প্রমাণ করেছে যে অলৌকক ঘটনা সত্যিই ঘটে...কিন্তু সব সময় নয়। রাস্তা খেলার জায়গা নয়...মা–বাবার উচিত বাচ্চাদের দিকে সব সময় নজর রাখা।’
অন্য আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেটি কীভাবে গাড়ির চাবি পেল? তার মা–বাবাকে কারাগারে পাঠানো উচিত।’