আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করলেন ইউএনও
Published: 14th, September 2025 GMT
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে একটি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার (১২সেপ্টেম্বর) মিরপুর পৌরসভার খন্দকবাড়ীয়ার কুঠিপাড়াতে এ ঘটনা ঘটে।
উদ্বোধনের সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল ইসলামের দুপাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য আমজাদ হোসেন এবং সাবেক মেয়র প্রার্থী নজরুল করিম।
এদিকে, এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছে বিএনপি। তাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক বিবেচনায় ইউএনও দলীয় পক্ষপাত দেখিয়েছেন।
মিরপুর পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাসিরুজ্জামান রানা বলেন, ‘‘গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রয়াত বিএনপি নেতা ফজলুল হক মন্ডল স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রধান অতিথি হওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হলেও ইউএনও অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি তখন স্পষ্ট বলেন, কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না। অথচ আওয়ামী লীগ নেতাদের উপস্থিতিতে তিনি টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করেছেন।’’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার টিপু সুলতান বলেন, ‘‘আমি নিজে তার অফিসে গিয়ে দাওয়াত দিয়েছিলাম। তখন তিনি বলেছেন, বিএনপি নেতাদের কোনো অনুষ্ঠানে তিনি যাবেন না। অথচ আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে একই ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে দলীয়ভাবে আলোচনা চলছে, প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলন করা হবে।’’
অভিযোগের বিষয়ে ইউএনও নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘‘স্থানীয় একটি ক্লাবের আমন্ত্রণে টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করেছি। সেখানে কারা উপস্থিত ছিলেন, তা আমার জানা ছিল না। এছাড়া, বিগত সরকারের সময়কার স্থানীয় নেতাদের অনেককেই আমি চিনিও না।’’
ঢাকা/কাঞ্চন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ব এনপ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি
ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।
শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।
ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।
কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলাশিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।
শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’
শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী