বিচারের মাধ্যমে নিশ্চিত হোক, ১৫ বছরের দুঃশাসনের যেন পুনরাবৃত্তি না হয়: মাহমুদুর রহমান
Published: 16th, September 2025 GMT
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান জবানবন্দিতে বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের মাধ্যমে নিশ্চিত হোক, বাংলাদেশে গত ১৫ বছরের দুঃশাসনের যেন পুনরাবৃত্তি না হয়।
আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ দ্বিতীয় দিনের মতো দেওয়া জবানবন্দিতে এ কথা বলেন মাহমুদুর রহমান।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় ৪৬ তম সাক্ষী হিসেবে এই জবানবন্দি দেন মাহমুদুর রহমান।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ তাঁকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। মামলার অপর দুই আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক আছেন।
আজ জবানবন্দিতে সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, তিনি গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের উত্থান, বিকাশ ও পতন দেখেছেন। জুলাই গণহত্যার পর যখন এই ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত হয়, তখন তিনি মনে করেছেন, রাষ্ট্রের একজন বর্ষীয়ান নাগরিক হিসেবে তাঁর কর্তব্য ট্রাইব্যুনালকে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করা। সেই সহযোগিতার অংশ হিসেবে তিনি ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য প্রদান করছেন।
জবানবন্দিতে মাহমুদুর রহমান বলেন, তিনি চান, আসামিরা যেন সাজা পায়। ন্যায়বিচারের মাধ্যমে শহীদ পরিবার, আহত জুলাই যোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের শোক কিছুটা হলেও যেন লাঘব হয়। তা ছাড়া ফ্যাসিস্ট শাসনের বিষয় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা গেলে ভবিষ্যতের সরকারগুলো সতর্ক হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যেভাবে বলা হয়েছিল ‘নেভার অ্যাগেইন’ (আর কখনো নয়)। বাংলাদেশেও এই বিচারের মাধ্যমে নিশ্চিত হোক, গত ১৫ বছরের দুঃশাসনের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়।
মাহমুদুর রহমান বলেন, তাঁরা (শহীদ পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধা) ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের কমান্ড রেসপন্সিবিলিটিতে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের বিচার দেখতে চান। এই আসামিরা হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতা বন্ধে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। এই আসামিদের মধ্যে যাঁরা সরাসরি হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন, যাঁরা এই হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতা বন্ধ করার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি, তাঁরা সবাই কমান্ড রেসপন্সিবিলিটির আওতাভুক্ত।
মাহমুদুর রহমানের জবানবন্দি শেষ হওয়ার পর এই মামলার আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন তাঁকে (মাহমুদুর রহমান) জেরা করেন।
আরও পড়ুনএই ফ্যাসিবাদের সৃষ্টি হয়েছিল একটি ম্যাটিকুলাস প্ল্যানিংয়ের মাধ্যমে: মাহমুদুর রহমান১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ১৫ বছর শ সন র ই আস ম
এছাড়াও পড়ুন:
পিএইচডি গবেষকদের জন্য বৃত্তি চালু করা হবে: জবি উপাচার্য
থিসিস শিক্ষার্থীদের গবেষণা সহায়তার পাশাপাশি পিএইচডি গবেষকদের জন্যও অনুরূপ বৃত্তি চালুর ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম।
রবিবার (২ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের থিসিস শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণা সহায়তা হিসেবে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।
আরো পড়ুন:
সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
ইবিতে কুরআন ও হিজাববিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের
অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একাডেমিক ও গবেষণামুখী শিক্ষার্থীদের জন্য শুভেচ্ছা ও দোয়ার নিদর্শনস্বরূপ কিছু করতে পারায় আমরা আনন্দিত। আমরা থিসিস শিক্ষার্থীদের গবেষণা সহায়তার পাশাপাশি খুব শিগগিরই পিএইচডি গবেষকদের জন্যও অনুরূপ বৃত্তি চালু করব।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক একাডেমিক পরিবেশ উন্নয়ন ও গবেষণার পরিধি বাড়াতে প্রশাসন অব্যাহতভাবে কাজ করছে। গবেষণার সুযোগ বাড়াতে এবং শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করবে।”
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, “গবেষণার মানোন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের থিসিসে আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে এ ধরনের অনুদান প্রদান একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ। অনুদানের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করবে।”
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. শেখ রফিকুল ইসলাম।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের আওতায় প্রতিটি থিসিস শিক্ষার্থী ১৪ হাজার ১২৪ টাকা করে অনুদান পাবেন। এ অর্থ শুধু গবেষণাসংক্রান্ত কাজে ব্যয়যোগ্য এবং ‘থিসিস শিক্ষার্থীদের বৃত্তি’ হিসেবে বিবেচিত হবে।
অনুষ্ঠানে প্রতিটি অনুষদ থেকে দুজন করে শিক্ষার্থী উপাচার্যের কাছ থেকে চেক গ্রহণ করেন। অবশিষ্ট শিক্ষার্থীরা আগামীকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তর থেকে পরিচয়পত্র বা প্রবেশপত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে চেক সংগ্রহ করতে পারবেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, প্রাধ্যক্ষ এবং বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী