ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল-১–এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিবের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন-উল হাসান প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ওই কর্মকর্তা (মিজানুর রহমান) প্রশাসককে হোয়াটসঅ্যাপে ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে খুদে বার্তা দিয়েছেন। ট্র্যাকিং করে নম্বরটি ওই কর্মকর্তার বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করার পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রশাসকের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। ঢাকা উত্তর সিটির সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসক দেশের বাইরে গেছেন। তাই বক্তব্য জানা যায়নি। এদিকে ঘুষের প্রস্তাব দেওয়া কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের মুঠোফোন নম্বরেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি ফোন ধরেননি।

প্রশাসক এজাজকে দেওয়া মিজানুর রহমানের খুদে বার্তা ঢাকা উত্তর সিটি সূত্র থেকে প্রথম আলো সংগ্রহ করেছে। ওই খুদে বার্তায় মিজানুর রহমান লিখেছেন, ‘ডিটিও (পৌরকর) এর নিজ বেতন–ভাতায় দায়িত্ব নিতে চাই। স্যার যদি সম্ভব না হয়, তাহলে ডিটিও (পৌরকর) এর অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে চাই। স্যার আমি মিজানুর রহমান, আমার বর্তমান পদবি: প্রশাসনিক কর্মকর্তা অঞ্চল-১ (উত্তরা) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।’

ওই খুদে বার্তায় ঘুষের বিষয়ে মিজানুর রহমান লেখেন, ‘স্যার কাজটি করে দিলে আমি চির কৃতজ্ঞ থাকব এবং আপনার জন্য এক লাখ টাকার উপহার আছে আমার পক্ষ থেকে।’ শেষে ‘শ্রদ্ধান্তে আপনার বাধ্যগত মিজানুর রহমান’ লেখা ছিল।

এদিকে মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করে এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করতে একটি অফিস আদেশ জারি করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্তৃপক্ষ। ৮ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ মামুন-উল হাসানের স্বাক্ষরিত ওই অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, অঞ্চল-১, প্রশাসন শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিজ দায়িত্বসহ সহকারী হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, অঞ্চল-১, ৬, ৭ ও ৮ (অ.

দা.) মিজানুর রহমানকে উত্তর সিটি করপোরেশন কর্মচারী চাকরি বিধিমালা, ২০১৯–এর ৪৯–এর (ক), (খ), (ঘ), (ঙ) ও (চ) উপবিধি মোতাবেক দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচরণ, অদক্ষতা, দুর্নীতি বা প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত করে বিভাগীয় মামলা রুজুপূর্বক একই বিধিমালার ৫৫–এর (১) উপবিধি মোতাবেক চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। এ সময় বিধি মোতাবেক তিনি খোরাকি ভাতা পাবেন।’

ঢাকা উত্তর সিটির সূত্র বলছে, এ ঘটনায় ইতিমধ্যে মিজানুর রহমান প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে ক্ষমাও চেয়েছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘ ষ র প রস ত ব ম জ ন র রহম ন কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ