টেসলার ১০০ কোটি ডলারের শেয়ার কিনলেন ইলন মাস্ক
Published: 16th, September 2025 GMT
বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক নিজের পকেট থেকে ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ব্যয় করে টেসলার শেয়ার কিনেছেন। ফলে টেসলার শেয়ারে প্রাণ ফিরেছে। মাস্কের এই শেয়ার কেনার ফলে চলতি বছরের ক্ষতি পুষিয়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে টেসলা।
গত শুক্রবার এই শেয়ার কেনাবেচা হলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থার নথিতে এ তথ্য প্রকাশিত হয় সোমবার। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সিইওদের বা প্রধান নির্বাহীদের মধ্যে এমন দৃষ্টান্ত বিরল। সাধারণত বিশেষ ব্যবস্থা ব্যবহার করে কম দামে শেয়ার নেওয়ার ধারাই প্রচলিত, কিন্তু মাস্ক সরাসরি বাজারদরে এই শেয়ার কিনেছেন।
খবর ছড়িয়ে পড়তেই সোমবার বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গে টেসলার শেয়ারের দাম ৭ শতাংশ বেড়ে যায়। যদিও দিনের শেয়ারের দাম বাড়ার হার ৪ শতাংশে স্থির হয়। কিন্তু ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সেটাই যথেষ্ট ছিল। ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক ড্যান আইভস বলেন, এটি মাস্কের পক্ষ থেকে বড় উদ্যোগ। বিনিয়োগকারীরা বাজারে এমন সংকেত পেয়ে দারুণ খুশি।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্কের জন্য ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ব্যয় তেমন কোনো বিষয় নয়। এই বিনিয়োগের ফল তিনি হাতেনাতে পেয়েছেন। সোমবার টেসলার শেয়ারদর বেড়ে যাওয়ায় এক দিনেই মাস্কের সম্পদমূল্য বেড়েছে ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ৫৮০ কোটি ডলার।
উত্থান-পতনের বছরগত বছর মার্কিন নির্বাচনের পর টেসলার শেয়ারের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছিল। বিনিয়োগকারীদের ধারণা ছিল, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কোম্পানির জন্য সুবিধা বয়ে আনবে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি টেসলার শেয়ারদর রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে; কিন্তু এর পর থেকেই শেয়ারের দাম কমতে থাকে।
ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মাস্কের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা বিতর্ক সৃষ্টি করে। এর প্রভাবে চলতি বছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে টেসলার বিক্রি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পতনের মুখে পড়ে। একই সঙ্গে চীনের বিওয়াইডিসহ প্রতিদ্বন্দ্বী ইভি কোম্পানিগুলোর বিক্রি বাড়তে থাকে।
এর ওপর চলতি মাসের শেষে ইভি ক্রেতাদের জন্য ৭ হাজার ৫০০ ডলারের করছাড়ের সুবিধা শেষ হতে যাচ্ছে। ফলে তৃতীয় প্রান্তিকে বিক্রি বাড়লেও বছরের বাকি সময় কঠিন যাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
সম্ভাব্য এক লাখ কোটি ডলারের প্যাকেজগত সপ্তাহে টেসলা মাস্কের জন্য নতুন বেতনকাঠামো প্রস্তাব করেছে। বিক্রয় ও বাজারমূল্যের লক্ষ্য পূরণ করতে পারলে তাঁকে এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলার পর্যন্ত সুবিধা দেওয়া হতে পারে। তবে এর জন্য কোম্পানির বাজার মূলধন দুই ট্রিলিয়ন বা দুই লাখ কোটি ডলারে উঠতে হবে; বর্তমানে তা ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার।
টেসলার পর্ষদ বলছে, মাস্ককে টেসলার কাজে মনোযোগী রাখা জরুরি। কিন্তু তিনি একসঙ্গে স্পেসএক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানি এক্সএআই ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একআসেরও প্রধান। রাজনীতিতেও সক্রিয় আছেন তিনি।
সমালোচকেরা বলছেন, মাস্কের বিপুল সম্পদ ও প্রভাব বৈষম্যের প্রতীক হয়ে উঠছে। নতুন আমেরিকান পোপ লিও চতুর্দশ এক সাক্ষাৎকারে মাস্কের প্রস্তাবিত বেতনকাঠামোর সমালোচনা করে বলেছেন, ‘যদি অর্থই একমাত্র মূল্য হয়, তবে সমাজ বড় সংকটে আছে।’
আরও নিয়ন্ত্রণ চান মাস্কসোমবারের এই শেয়ার কেনাবেচায় মাস্ক ২৬ লাখ নতুন শেয়ার পেলেও টেসলায় তার মালিকানা বাড়ল ১ শতাংশের কম। বর্তমানে তিনি কোম্পানির ১২ দশমিক ৮ শতাংশ শেয়ারের মালিক। তাঁর লক্ষ্য অন্তত ২৫ শতাংশ শেয়ারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
মাস্ক সতর্ক করে বলেছেন, নিয়ন্ত্রণ না পেলে এআই–বিষয়ক উদ্যোগের কিছুটা টেসলা থেকে এক্সএআইয়ে সরিয়ে নেবেন। গত জানুয়ারি মাসে তিনি নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছিলেন, ‘২৫ শতাংশ ভোটাধিকার না থাকলে আমি টেসলার বাইরে এআই-রোবোটিকস নিয়ে কাজ করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই শ য় র ক ন র জন য স মব র
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে