দিনাজপুরে সাত দফা দাবিতে কারিগরি শিক্ষার্থীদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধ
Published: 17th, September 2025 GMT
দিনাজপুরে সাত দফা দাবিতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় শহরের ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। পরে তাঁরা দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে বাঁশ ফেলে অবরোধ শুরু করেন।
এদিকে রেলপথ অবরোধ করায় পঞ্চগড় থেকে ঢাকা ও রাজশাহীগামী দুটি ট্রেন আটকা পড়ে প্রায় দুই হাজার যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছেন। পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করায় শহরে উভয় পাশে কয়েক শ যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে সকাল নয়টা থেকে ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা সাত দফাসংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার ফেস্টুন হাতে সড়কে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় মাইকে শিক্ষার্থীরা তাঁদের সাত দফা দাবি উল্লেখ করে বক্তব্য দেন। বেলা ১১টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা। দুপুর ১২টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় অবরোধ কর্মসূচি চলছিল।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোহাম্মদ সিফাত বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সাত দফা দাবিতে আমরা আন্দোলন করে আসছি। যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছি আমরা। সেই দাবি না মেনে উল্টো আন্দোলন করলে গুলি করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবিগুলোর প্রতি ও আন্দোলনের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা আবারও রাস্তায় নেমেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে না, আমরা এভাবেই আন্দোলন করে যাব।’
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে আছে উপসহকারী প্রকৌশলীর পদ কেবল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য রাখতে হবে, ৫০ শতাংশ পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে, ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের এবং ডেস্ক ইঞ্জিনিয়ারিং বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে জায়গা দিতে হবে, টেকনিক্যাল ক্যাডার থেকে অন্যত্র স্থানান্তর বন্ধ করতে হবে, বিএসসি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের অনুপাত ১ দশমিক ৫ নির্ধারণ করতে হবে এবং ল্যাব-ওয়ার্কশপ আধুনিকীকরণ, পর্যাপ্ত শিক্ষক, উপকরণ সরবরাহ, ক্রেডিট ট্রান্সফার চালুসহ মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতসহ করতে হবে।
এদিকে সড়ক অবরোধ করায় দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন গলিতে তীব্র যানজট দেখা গেছে। প্রচণ্ড গরমে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ও রাজশাহীগামী বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনের প্রায় দুই হাজার যাত্রী আটকা পড়েছেন।
দিনাজপুর রেলস্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট জিয়াউর রহমান বলেন, পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতযান এক্সপ্রেস, বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস দিনাজপুর স্টেশন প্ল্যাটফর্মে আটকে আছে। দ্রুতযান এক্সপ্রেস দিনাজপুর স্টেশন ত্যাগ করার সময় ছিল সকাল ১০টা ৫৫ মিনিট ও বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র লপথ অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে