গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর–বরমী আঞ্চলিক সড়কের সংস্কার কাজ মাসের পর মাস বন্ধ থাকায় লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাম্মী এন্টারপ্রাইজ কাজ ফেলে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রায় ৪ কোটি টাকার গুরুত্বপূর্ণ একটি আঞ্চলিক সড়ক সংস্কার প্রকল্প মাঝপথে থেমে থাকায় লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। ঠিকাদারের গাফিলতি, কর্তৃপক্ষের দুর্বল তদারকি এবং রাজনৈতিক প্রভাব মিলিয়ে এ প্রকল্প এখন যেন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিওবি মেইনটেন্যান্স প্রকল্প–৩ এর আওতায় নয়নপুর বাজার থেকে সিসিডিবি মোড় পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের জন্য ৪ কোটি ৯ লাখ ৩৮ হাজার ৬০৬ টাকা বরাদ্দ করা হয়। শুরুতে সামান্য ইট–খোয়া ফেলার কাজ হলেও সেটিও মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কয়েক দফা কাজ শুরু হলেও টেকেনি। বর্তমানে পুরো কাজ বন্ধ রয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেকু দিয়ে খুঁড়ে রাখা হয়েছে, বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কোথাও খোয়া ফেললেও তা অসম্পূর্ণ থেকে গেছে। বর্ষায় পানি জমে কাদায় পরিণত হয়েছে পুরো সড়ক। এতে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ভ্যান এমনকি পথচারীরাও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির মুখে পড়ছে।

তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, “আগে রাস্তা খারাপ হলেও চলাচল করা যেত। এখন খুঁড়ে রেখে পুরোপুরি অচল করে দেওয়া হয়েছে।”

ফরিদপুর গ্রামের এক শিক্ষিকা বলেন, “শিশুরা এখন স্কুলে যেতে পারে না। ৩–৪ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে।”

নয়নপুর বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী সালাম বলেন, “রাস্তায় ক্রেতারা আসতে চায় না। ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

বাজার ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া বলেন, “ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছাড়া কাজ শুরু হওয়ায় বৃষ্টির সময় কাদা ও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু।”

অটোরিকশা চালক শহিদ বলেন, “ভেকু দিয়ে রাস্তা খুঁড়ে রেখেছে। যাত্রীরা ভয়ে নামতে চায় না।”

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, রাস্তার পাশে প্রায় দুই শতাধিক দোকানী আজ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

শ্রীপুর উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, “ঠিকাদারকে বারবার ডাকা হলেও তারা কাজ শুরু করছে না। মাঝপথে ফেলে দিয়েছে। এমনকি আমার নম্বরও ব্ল্যাকলিস্ট করেছে।”

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদ আহমেদ বলেন, “বর্তমানে কাজ ধীরগতিতে চলছে। এ বিষয়ে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছি।”

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজিব আহাম্মেদ বলেন, “নয়নপুর–বরমী সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন বহু শিক্ষার্থী ও শ্রমিক এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। আগের ঠিকাদারকে বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে।”

ঢাকা/রফিক/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ র প র উপজ ল নয়নপ র ব প রকল প ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বিয়ানীবাজারে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ফয়সল আহমদ চৌধুরী

পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সঙ্গে আঁতাত করে একটি গোষ্ঠী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা বিএনপির সদস্য ফয়সল আহমদ চৌধুরী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। নির্বাচনী উৎসবে মেতে উঠতে সবাই প্রস্তুত।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের খাড়াবড়া বাজারে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। দুবাগ ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় ফয়সল আহমদ চৌধুরী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায়। তাদের লক্ষ্য স্বৈরাচারকে ফিরিয়ে এনে এ দেশকে আবারও ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া। কিন্তু দেশপ্রেমিক জনতা সে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দেবে না। বাংলার মাটিতে আগামী ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে জাতীয় নির্বাচন হবেই, ইনশা আল্লাহ।’

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপি। কিন্তু বিস্ময়করভাবে বিএনপির সুপারিশ, মতামত, নোট অব ডিসেন্ট এসবকে পাশ কাটিয়ে গেছে ঐকমত্য কমিশন। বিএনপির মতামত, প্রস্তাবকে উপেক্ষা করেছে তারা। এই কমিশন ঐকমত্যের বদলে অনৈক্য কমিশন হয়ে গেছে। ২৫টি রাজনৈতিক দল যে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল, সেই সনদের সঙ্গে কমিশনের সুপারিশের মিল নেই। এগুলো দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক নিয়াজ উদ্দিন। জেলা যুবদলের সদস্য এবি কালাম ও উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য শহিদুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা এম এ মান্নান, বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক মিছবাহ উদ্দিন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আদিবা হোসেন
  • খুলনায় বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৭
  • বিয়ানীবাজারে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ফয়সল আহমদ চৌধুরী
  • খুলনায় বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ