গাজীপুরে সড়ক সংস্কার কাজ বন্ধ, চরম ভোগান্তি
Published: 17th, September 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর–বরমী আঞ্চলিক সড়কের সংস্কার কাজ মাসের পর মাস বন্ধ থাকায় লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাম্মী এন্টারপ্রাইজ কাজ ফেলে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রায় ৪ কোটি টাকার গুরুত্বপূর্ণ একটি আঞ্চলিক সড়ক সংস্কার প্রকল্প মাঝপথে থেমে থাকায় লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। ঠিকাদারের গাফিলতি, কর্তৃপক্ষের দুর্বল তদারকি এবং রাজনৈতিক প্রভাব মিলিয়ে এ প্রকল্প এখন যেন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিওবি মেইনটেন্যান্স প্রকল্প–৩ এর আওতায় নয়নপুর বাজার থেকে সিসিডিবি মোড় পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের জন্য ৪ কোটি ৯ লাখ ৩৮ হাজার ৬০৬ টাকা বরাদ্দ করা হয়। শুরুতে সামান্য ইট–খোয়া ফেলার কাজ হলেও সেটিও মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কয়েক দফা কাজ শুরু হলেও টেকেনি। বর্তমানে পুরো কাজ বন্ধ রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেকু দিয়ে খুঁড়ে রাখা হয়েছে, বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কোথাও খোয়া ফেললেও তা অসম্পূর্ণ থেকে গেছে। বর্ষায় পানি জমে কাদায় পরিণত হয়েছে পুরো সড়ক। এতে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ভ্যান এমনকি পথচারীরাও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির মুখে পড়ছে।
তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, “আগে রাস্তা খারাপ হলেও চলাচল করা যেত। এখন খুঁড়ে রেখে পুরোপুরি অচল করে দেওয়া হয়েছে।”
ফরিদপুর গ্রামের এক শিক্ষিকা বলেন, “শিশুরা এখন স্কুলে যেতে পারে না। ৩–৪ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে।”
নয়নপুর বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী সালাম বলেন, “রাস্তায় ক্রেতারা আসতে চায় না। ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
বাজার ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া বলেন, “ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছাড়া কাজ শুরু হওয়ায় বৃষ্টির সময় কাদা ও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু।”
অটোরিকশা চালক শহিদ বলেন, “ভেকু দিয়ে রাস্তা খুঁড়ে রেখেছে। যাত্রীরা ভয়ে নামতে চায় না।”
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, রাস্তার পাশে প্রায় দুই শতাধিক দোকানী আজ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
শ্রীপুর উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, “ঠিকাদারকে বারবার ডাকা হলেও তারা কাজ শুরু করছে না। মাঝপথে ফেলে দিয়েছে। এমনকি আমার নম্বরও ব্ল্যাকলিস্ট করেছে।”
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদ আহমেদ বলেন, “বর্তমানে কাজ ধীরগতিতে চলছে। এ বিষয়ে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছি।”
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজিব আহাম্মেদ বলেন, “নয়নপুর–বরমী সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন বহু শিক্ষার্থী ও শ্রমিক এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। আগের ঠিকাদারকে বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে।”
ঢাকা/রফিক/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ র প র উপজ ল নয়নপ র ব প রকল প ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে সড়ক সংস্কার কাজ বন্ধ, চরম ভোগান্তি
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর–বরমী আঞ্চলিক সড়কের সংস্কার কাজ মাসের পর মাস বন্ধ থাকায় লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাম্মী এন্টারপ্রাইজ কাজ ফেলে উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রায় ৪ কোটি টাকার গুরুত্বপূর্ণ একটি আঞ্চলিক সড়ক সংস্কার প্রকল্প মাঝপথে থেমে থাকায় লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। ঠিকাদারের গাফিলতি, কর্তৃপক্ষের দুর্বল তদারকি এবং রাজনৈতিক প্রভাব মিলিয়ে এ প্রকল্প এখন যেন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিওবি মেইনটেন্যান্স প্রকল্প–৩ এর আওতায় নয়নপুর বাজার থেকে সিসিডিবি মোড় পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের জন্য ৪ কোটি ৯ লাখ ৩৮ হাজার ৬০৬ টাকা বরাদ্দ করা হয়। শুরুতে সামান্য ইট–খোয়া ফেলার কাজ হলেও সেটিও মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কয়েক দফা কাজ শুরু হলেও টেকেনি। বর্তমানে পুরো কাজ বন্ধ রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেকু দিয়ে খুঁড়ে রাখা হয়েছে, বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কোথাও খোয়া ফেললেও তা অসম্পূর্ণ থেকে গেছে। বর্ষায় পানি জমে কাদায় পরিণত হয়েছে পুরো সড়ক। এতে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ভ্যান এমনকি পথচারীরাও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির মুখে পড়ছে।
তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, “আগে রাস্তা খারাপ হলেও চলাচল করা যেত। এখন খুঁড়ে রেখে পুরোপুরি অচল করে দেওয়া হয়েছে।”
ফরিদপুর গ্রামের এক শিক্ষিকা বলেন, “শিশুরা এখন স্কুলে যেতে পারে না। ৩–৪ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে।”
নয়নপুর বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী সালাম বলেন, “রাস্তায় ক্রেতারা আসতে চায় না। ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
বাজার ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া বলেন, “ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছাড়া কাজ শুরু হওয়ায় বৃষ্টির সময় কাদা ও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু।”
অটোরিকশা চালক শহিদ বলেন, “ভেকু দিয়ে রাস্তা খুঁড়ে রেখেছে। যাত্রীরা ভয়ে নামতে চায় না।”
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, রাস্তার পাশে প্রায় দুই শতাধিক দোকানী আজ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
শ্রীপুর উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, “ঠিকাদারকে বারবার ডাকা হলেও তারা কাজ শুরু করছে না। মাঝপথে ফেলে দিয়েছে। এমনকি আমার নম্বরও ব্ল্যাকলিস্ট করেছে।”
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদ আহমেদ বলেন, “বর্তমানে কাজ ধীরগতিতে চলছে। এ বিষয়ে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছি।”
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজিব আহাম্মেদ বলেন, “নয়নপুর–বরমী সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন বহু শিক্ষার্থী ও শ্রমিক এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। আগের ঠিকাদারকে বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে।”
ঢাকা/রফিক/এস