হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট হুয়ান অরল্যান্ডো হার্নান্দেজকে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কারা কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারের অভিযোগে হার্নান্দেজ কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়ায় তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

ফেডারেল কারাগারের রেকর্ড অনুযায়ী, হার্নান্দেজ গত সোমবার পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ইউএসপি হেজেলটন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে কোকেন আমদানির ষড়যন্ত্র ও নিজের কাছে মেশিনগান রাখার অভিযোগে হার্নান্দেজকে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তাঁকে তখন ৪৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

হার্নান্দেজ হন্ডুরাসের ন্যাশনাল পার্টির সদস্য। তিনি ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সহিংসভাবে মাদক চোরাচালানের ষড়যন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রে শত শত টন কোকেন পাচারে সহযোগিতার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে ২০২২ সালের এপ্রিলে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গত শুক্রবার ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছিলেন, হার্নান্দেজের সঙ্গে রূঢ ও অন্যায় আচরণ করা হয়েছিল।

গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে হার্নান্দেজের স্ত্রী আনা গার্সিয়া দে হার্নান্দেজ ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমার স্বামী এখন একজন মুক্ত মানুষ।’

হার্নান্দেজ হন্ডুরাসের ন্যাশনাল পার্টির সদস্য। তিনি ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সহিংসভাবে মাদক চোরাচালানের ষড়যন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রে শত শত টন কোকেন পাচারে সহযোগিতার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে ২০২২ সালের এপ্রিলে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বিচার চলাকালে নিউইয়র্কের কৌঁসুলিরা বলেছিলেন, হার্নান্দেজ মধ্য আমেরিকার দেশ হন্ডুরাসকে ‘মাদক চক্রের নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রের মতো’ পরিচালনা করেছেন। তিনি চোরাচালানিদের আইনের হাত থেকে সুরক্ষা দেওয়ার বিনিময়ে লাখ লাখ ডলার ঘুষ নিয়েছেন।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি হার্নান্দেজকে ৮০ লাখ ডলার জরিমানা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত।

রোববার এয়ার ফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজের ভেতর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প হার্নান্দেজকে ক্ষমা করে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দাবি করেন, হার্নান্দেজের বিরুদ্ধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন সাজানো তদন্ত করেছে।

রোববার এয়ার ফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজের ভেতর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প হার্নান্দেজকে ক্ষমা করে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দাবি করেন, হার্নান্দেজের বিরুদ্ধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন সাজানো তদন্ত করেছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি (হার্নান্দেজ) দেশটির (হন্ডুরাস) প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আর এ কারণেই মূলত তারা তাঁকে মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে দিয়েছে।’

হার্নান্দেজকে এমন সময়ে মুক্তি দেওয়া হলো, যখন কিনা হন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল নিয়ে উত্তেজনা চলছে।

হন্ডুরাসে গত রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। এরই মধ্যে ভোট গণনায় দেরি হওয়াকে কেন্দ্র করে নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মধ্যপন্থী লিবারেল পার্টির নেতা সালভাদর নাসরাল্লা রক্ষণশীল প্রার্থী নাসরি আসফুরার চেয়ে সামান্য এগিয়ে গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার প্রায় ৬৮ শতাংশ ভোট গণনা শেষে নির্বাচন কর্তৃপক্ষ এমন তথ্য দিয়েছে। আসফুরা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-সমর্থিত প্রার্থী।

আরও পড়ুনহন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প–সমর্থিত প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে গেলেন নাসরাল্লা৩ ঘণ্টা আগে

গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ আংশিক ভোট গণনায় প্রাপ্ত সর্বশেষ ফল প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, ৬৮ শতাংশ ভোট গণনা শেষে নাসরাল্লা পেয়েছেন ৪০ দশমিক ১৩ শতাংশ ভোট এবং ন্যাশনাল পার্টির আসফুরা পেয়েছেন ৩৯ দশমিক ৭১ শতাংশ ভোট।

হন্ডুরাসের নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রাথমিকভাবে দ্রুত ভোট গণনার ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। এতে যে ওয়েব পোর্টালে তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফলের তথ্য হালনাগাদ করার কথা ছিল, সেটিতেও সমস্যা তৈরি হয়েছে।

গত সোমবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, হন্ডুরাস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘যদি তারা এটা করে, তবে তাদের কঠিন পরিণতি হবে। হন্ডুরাসের মানুষ ৩০ নভেম্বর বিপুল সংখ্যায় ভোট দিয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ক হন ড র স র ২০২২ স ল ভ ট গণন

এছাড়াও পড়ুন:

২২ বছর বয়সে সিরাজউদ্দৌলা নবাব হন

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

সৃজনশীল প্রশ্ন: অধ্যায়–১

শহীদ মিয়া তরুণ বয়সে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রথম থেকেই কিছু আত্মীয় নিজেদের সুবিধার জন্য শহীদ মিয়াকে জনগণের কাজে বাধা সৃষ্টি করে। সুযোগ বুঝে একসময় তারা তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সক্ষম হয় এবং হত্যা করে।

প্রশ্ন

ক. সম্রাট আকবরের সেনাপতি কে ছিলেন?

খ. বাংলায় নবজাগরণ কী, ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকের শহীদ মিয়ার ঘটনার সঙ্গে ঐতিহাসিক কোন ঘটনার মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উক্ত ঘটনা কি বাংলার স্বাধীনতা হারানোর কারণ? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তর

ক. সম্রাট আকবরের সেনাপতি ছিলেন মানসিংহ।

খ. বাংলায় ইংরেজ শাসনের প্রভাবে এ দেশের মানুষের মধ্যে যে সচেতনতা তৈরি হয়, তাকেই নবজাগরণ বলে। ইংরেজরা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ভারতবর্ষে এলেও একসময় তারা এখানে বিভিন্ন সমাজসংস্কার, শিক্ষা বিস্তার প্রভৃতি কাজ করে থাকে। আধুনিক শিক্ষার কারণে এখানকার মানুষের মধ্যে অধিকার নিয়ে সচেতনতা তৈরি হয়। তারা সমাজের কুসংস্কার থেকে মুক্ত হয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। ইতিহাসে এটাই বাংলায় নবজাগরণ।

আরও পড়ুনজুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা—বিজ্ঞান : টিকটিকি সরীসৃপ কেন০১ ডিসেম্বর ২০২৫

গ. উদ্দীপকের শহীদ মিয়ার ঘটনার সঙ্গে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে হত্যার সঙ্গে মিল রয়েছে। নবাব আলীবর্দী খাঁর মৃত্যুর পর তাঁর প্রিয় নাতি সিরাজউদ্দৌলা মাত্র ২২ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন। তখন তাঁর সামনে একদিকে ইংরেজ শক্তি, পাশাপাশি বড় খালা ঘসেটি বেগম ও সিপাহশালার মীর জাফর আলী খানের ষড়যন্ত্রে আক্রান্ত হন। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে তিনি নিহত হন। তখন বাংলায় শাসন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে ইংরেজদের প্রভাব প্রতিষ্ঠা পায়। শহীদ মিয়ার তরুণ বয়সে চেয়ারম্যান হওয়ার সঙ্গে সিরাজউদ্দৌলার কম বয়সে নবাব হওয়ার মিল দেখা যায়।

অন্যদিকে সিরাজউদ্দৌলার পরিবারের লোকজনও এই ক্ষমতা গ্রহণকে নেতিবাচক বলে মনে করে। উদ্দীপকের শহীদ মিয়াও ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তাঁর পরিবারের আত্মীয়েরা বিরোধিতা করে, যা শহীদ মিয়ার ঘটনার সঙ্গে মিলে যায়। তাই পারিবারিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সিরাজউদ্দৌলার পতনের ঘটনার মিল রয়েছে।

ঘ. হ্যাঁ, সিরাজউদ্দৌলার ক্ষমতা হারানো ও মৃত্যু বাংলার পরাধীনতার কারণ। এ ঘটনায় শাসন ক্ষমতায় ইংরেজরা প্রভাব রাখতে শুরু করে।

মীর জাফর ও পরবর্তী সময়ে মীর কাশিমকে ইংরেজরা বাংলার নবাব মনোনীত করলেও নানা কারণে তাদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। ইংরেজ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভ ১৭৬৫ সালে দিল্লির সম্রাটের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে খাজনা ও প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন শুরু করেন। অন্যদিকে নবাব ভাতা ভোগ করেন। নবাব শাসন ও বিচারের দিকটি দেখার সুযোগ পান। ক্লাইভ কর্তৃক এ অদ্ভুত শাসনই ইতিহাসে ‘দ্বৈত শাসন’ নামে পরিচিত। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে শাসন ক্ষমতা সুদৃঢ় করে। কিন্তু ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিজেরাই শাসন শুরু করে। ব্রিটিশদের এই শাসন ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত চলতে থাকে। ফলে ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বাংলার স্বাধীনতা ছিল ইংরেজদের হাতে। তাই সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও মৃত্যু বাংলার স্বাধীনতা হারানোর বড় কারণ।

মো. আবুল হাছান, সিনিয়র শিক্ষক, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল, ঢাকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২২ বছর বয়সে সিরাজউদ্দৌলা নবাব হন
  • বিশ্বকাপ জিতেও আর্জেন্টিনা দলে যে স্বপ্ন অপূর্ণ ফার্নান্দেজের
  • রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাইলে দ্রুত পরাজিত হবে ইউরোপ, হুঁশিয়ারি পুতিনের
  • পশ্চিমা সহায়তার ১০ হাজার কোটি ডলার চুরি করেছেন ইউক্রেনের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা: সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দাবি
  • যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মাদক সম্রাট ‘এল চাপো’র ছেলের মাদক মামলায় দোষ স্বীকার
  • চট্টগ্রামে নভেম্বরে ডেঙ্গু সংক্রমণের রেকর্ড, ভোগাবে এ মাসেও
  • সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র মামলা
  • বাংলাদেশ একটি ‘দুষ্টচক্রের ত্রিভুজে’ আটকে ছিল: হোসেন জিল্লুর রহমান
  • ‘অসুস্থ মায়ের পাশে থাকতে না পারা কত যন্ত্রণার, সেটা সন্তানই বুঝতে পারে’