রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু হতে পারে ২০ নভেম্বর। 

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ছাইফুল ইসলাম সম্ভাব্য এ তারিখের কথা জানান।

আরো পড়ুন:

৩ দাবিতে রাবি চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগে শাটডাউন

গাজীপুরে শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন

এর আগে, গত ৬ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি উপ-কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় যে, এবারের ভর্তি পরীক্ষা ‘সি’ ইউনিট (বিজ্ঞান) দিয়ে শুরু হবে। ১৬ জানুয়ারি ‘সি’ ইউনিট (বিজ্ঞান), ১৭ জানুয়ারি ‘এ’ ইউনিট (মানবিক) এবং ২৪ জানুয়ারি ‘বি’ ইউনিটের (বাণিজ্য) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া সিদ্ধান্ত হয়, এ বছরে সিলেকশন থাকবে না। দুই শিফটে পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রথম শিফটের পরীক্ষা সকাল ১১টা থেকে ১২টা এবং দ্বিতীয় শিফটের পরীক্ষা বিকাল ৩টা থেকে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। 

এবারের ভর্তি পরীক্ষা রাজশাহী, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুর ও বরিশাল বিভাগে অবস্থিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে।

আবেদনের তারিখের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ছাইফুল ইসলাম বলেন, “এবারের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু হতে পারে আগামী ২০ নভেম্বর। তবে ভর্তি কমিটির মিটিং এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি। মিটিং অনুষ্ঠিত হলে সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।”

গত রবিবার (১৯ অক্টোবর) ভর্তি উপ-কমিটির মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। এ মিটিংয়ে ভর্তি কমিটিকে আবেদনের যোগ্যতার বিষয়ে সুপারিশ করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার।

তিনি বলেন, “একজন শিক্ষার্থীর জিপিএ কত হলে আবেদন করতে পারবেন, সে বিষয়ে ভর্তি কমিটিকে সুপারিশ করেছে ভর্তি উপ-কমিটি। সুপারিশ অনুযায়ী, মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হলে এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান উভয় পরীক্ষায় (চতুর্থ বিষয়সহ) ন্যূনতম জিপিএ ৩.

০০-সহ মোট জিপিএ ৭.০০ পেতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “বাণিজ্য শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান উভয় পরীক্ষায় (চতুর্থ বিষয়সহ) ন্যূনতম জিপিএ ৩.০০-সহ মোট জিপিএ ৭.০০ পেতে হবে। এছাড়া বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণ আবেদনকারীদের এসএসসি/সমমান ও এইচএসসি/সমমান উভয় পরীক্ষায় (চতুর্থ বিষয়সহ) ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫০-সহ মোট জিপিএ ৮.০০ পেতে হবে।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ত পর ক ষ র ভর ত ইউন ট সমম ন

এছাড়াও পড়ুন:

ভঙ্গুর শিক্ষাব্যবস্থার বলি শিক্ষার্থীরা কেন হবেন

এ বছর উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার ফল বিপর্যয় আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার বহুমুখী সংকট ও গলদকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। অথচ সেটাকে আমরা দশকের পর দশক ধরে কার্পেটের তলায় চাপা দিয়ে এসেছি। এতে ফলাফলের অঙ্কটাকে সাফল্য হিসেবে দেখানো গেছে ঠিকই, কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থায় শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্র ও সমাজকে ঠিক পথে এগিয়ে নেওয়ার জন্য দক্ষ ও মেধাসম্পন্ন নাগরিক তৈরি হচ্ছে না। সবখানেই বুদ্ধিবৃত্তিক মেধাশূন্যতার জয়জয়কার। এই বিবেচনায় এবারের এইচএসসির ফলাফল প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার পুরোনো ব্যবস্থার সঙ্গে ছেদ ঘটিয়ে নতুন শুরুর সতর্কঘণ্টা শুনিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন প্রকাশিত এইচএসসির ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, এবারের পরীক্ষায় পাসের হার দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। ১০ লাখ ৪৭ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছেন ৫ লাখ ৯৮ হাজার, শতকরা হিসাবে যা ৫৭ দশমিক ১২। গত বছরের তুলনায় পাসের হার কমেছে প্রায় ১৯ শতাংশ। এর অর্থ প্রায় ৪ লাখ ৪৭ হাজার শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছেন। ফলাফলের বিচারে এ অঙ্কটা নিঃসন্দেহে অনেক বেশি। এর বড় একটা অংশ ঝরে পড়ার আশঙ্কা আছে। এ বছরের এসএসসি পরীক্ষাতেও পাসের হার ১৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল। এবারের এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৬৩ হাজার ২১৯, গতবার এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার।

পাস ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর বিচারে এই ফলাফল নিঃসন্দেহে বড় একটা বিপর্যয়। ফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, শহর অঞ্চলের কলেজগুলোর ফলাফল গ্রাম ও মফস্‌সল এলাকার কলেজগুলোর তুলনায় বেশ ভালো। দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা শ্রেণিকক্ষের বাইরে কোচিং, গাইড ও প্রাইভেট শিক্ষকনির্ভর হয়ে উঠেছে। এর ফলে শিক্ষায় যে বিপুল ব্যয় বেড়েছে, তা নির্বাহের সক্ষমতা বিপুলসংখ্যক অভিভাবকেরই নেই। এইচএসসির ফলের এই বিপর্যয়কে আমাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের বাইরে গিয়ে দেখার সুযোগ খুবই সীমিত।

আন্দোলনসহ নানা কারণে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ক্লাস হয়নি। এরও একটি প্রভাব পড়েছে ফলাফলে। উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছেন ইংরেজিতে। পাসের হার ও জিপিএ-৫ আগের বছরগুলোর তুলনায় কম কেন, এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার শিক্ষাব্যবস্থায় অস্বস্তিকর সত্যকে তুলে ধরেছেন। তাঁর মতে, প্রাথমিক স্তর থেকেই শিক্ষার্থীদের শেখার ঘাটতি তৈরি হয় এবং সেই ঘাটতি বছরের পর বছর ধরে বাড়তে থাকে। আমরা মনে করি, উপদেষ্টা যথার্থই বলেছেন, আমরা এমন এক সংস্কৃতি গড়ে তুলেছি, যেখানে সংখ্যাই সত্য হয়ে উঠেছে। এখানে পাসের হারই সাফল্যের প্রতীক, জিপিএ-৫-এর সংখ্যা তৃপ্তির মানদণ্ড!

কিন্তু প্রশ্ন হলো, বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী পাস করতে পারেননি, দায়টা কি তাঁদের, না শিক্ষা নিয়ে ভুল নীতির। শিক্ষার এই দৈন্য নিয়ে বহু বছর ধরেই শিক্ষাবিদেরা, অভিভাবকেরা অভিযোগ করে আসছেন। সবাই আশা করেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের আশু কর্তব্য হিসেবে শিক্ষা খাত সংস্কারের জন্য কমিশন করবে। কিন্তু রাজনৈতিক সরকারের মতোই পাঠক্রম বদল ছাড়া শিক্ষা খাতে কোনো সংস্কার উদ্যোগই নেওয়া হয়নি।

এইচএসসির ফল বিপর্যয়, নিশ্চিত করেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা যে কতটা ভঙ্গুর অবস্থায় গিয়ে পৌঁছেছে, তারই প্রতিফলন দেখা গেল। এখন সরকারের গুরুদায়িত্ব হলো গলদগুলো চিহ্নিত করে শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারে মনোযোগী হওয়া। এইচএসসিতে যাঁরা কৃতকার্য হয়েছেন, তাঁদের অভিনন্দন। যাঁরা কৃতকার্য হতে পারেননি, তাঁদের মনে রাখতে হবে, ব্যর্থতাই সাফল্যের চাবিকাঠি। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের প্রতি অভিভাবক, স্বজন, শিক্ষক সবাইকে সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিমান বাংলাদেশে চাকরি, ২৭ পদে আবেদন শেষ ২২ অক্টোবর
  • এসএসসি পরীক্ষা ২০২৬: অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনা, পরীক্ষা কোন সিলেবাসে
  • খেলার বিকেএসপি পড়াশোনায়ও ভালো করছে
  • এইচএসসিতে মাদারীপুর জেলায় প্রথম মাইমুনা
  • প্রবাসী কর্মীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি, আবেদন শেষ ২৫ নভেম্বর
  • এসএসসির পর একসঙ্গে এইচএসসি পাস করলেন বাবা–মেয়ে, ফলে এগিয়ে বাবা
  • উপজেলায় এইচএসসিতে একমাত্র জিপিএ-৫ পেলেন অনুরাগ
  • আইএইচটি ও ম্যাটসের ভর্তি পরীক্ষা ২৪ অক্টোবর, প্রবেশপত্রের তারিখ ঘোষণা
  • ভঙ্গুর শিক্ষাব্যবস্থার বলি শিক্ষার্থীরা কেন হবেন