শিল্পপতি বাবুলের নেতৃত্বে শহরে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ
Published: 22nd, October 2025 GMT
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ৩১ দফা বাস্তবায়নে লক্ষ্যে প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান শিল্পপতি আবু জাফর আহমেদ বাবুলের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করা হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকালে নগরীর মিশনপাড়া মোড় হতে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ শুরু হয়ে মন্ডলপাড়া ও পাইকপাড়া প্রদিক্ষন করে চাষাড়ায় এসে শেষ হয়।
লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগে মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্থলের মানুষ অংশ গ্রহণ করেন এবং ধানের শীষের মার্কা নিয়ে প্রচারণা করেন।
এসময় বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আবু জাফর আহমেদ বাবুল নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ধানের শীষের প্রাথীকে বিজয় করার আহব্বান জানান।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ত র ক রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্যাসিফিক জিনস চালু হচ্ছে কাল, বন্ধের প্রভাব পোশাক রপ্তানিতে
দেশের শীর্ষস্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের সাতটি কারখানা আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে আবার খুলছে। ‘কারখানায় হামলা ও কর্মপরিবেশ না থাকায়’ ১৬ অক্টোবর এসব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। প্যাসিফিক জিনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীরের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কারখানাগুলো হলো প্যাসিফিক জিনস, জিনস ২০০০, ইউনিভার্সেল জিনস, এনএইচটি ফ্যাশন, প্যাসিফিক অ্যাকসেসরিজ, প্যাসিফিক ওয়ার্কওয়্যার ও প্যাসিফিক অ্যাটায়ার্স। এর মধ্যে প্যাসিফিক জিনসের কারখানা দুটি ও ইউনিভার্সেল জিনসের ইউনিট চারটি। এসব কারখানায় প্রায় ৩৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন।
তবে আগামীকাল কারখানা খুললেও শ্রমিকদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব ও অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিয়ে সতর্ক রয়েছে শিল্প পুলিশ ও বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। গত এক বছরে এই কারখানায় অন্তত তিনবার শ্রমিক সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত চলছে। দেশের অন্যতম রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠানটিতে বহিরাগতদের কোনো ইন্ধন আছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
কারখানা বন্ধ থাকায় পোশাক রপ্তানিতে কোনো প্রভাব পড়েছে কি না, সে সম্পর্কে প্যাসিফিক জিনসের এমডি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীরের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কারখানাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্যমতে, গত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে প্যাসিফিক গ্রুপ মোট ৪০ কোটি ৬০ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। কারখানা বন্ধের সময় রপ্তানি চালান (শিপমেন্ট) আটকে ছিল, সেগুলো এখন পাঠানো হবে।
এ থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে কোথাও সমস্যা হলে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় প্রশাসনকে ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বর্তমানে দেশে ‘মব’ সংস্কৃতির কারণে আরও বেশি সতর্ক থাকা দরকার, যাতে কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সুযোগ নিতে না পারে।এস এম আবু তৈয়ব, পরিচালক, বিজিএমইএ।এ ঘটনা পোশাক খাতে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক এস এম আবু তৈয়ব। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে কোথাও সমস্যা হলে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় প্রশাসনকে ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বর্তমানে দেশে ‘মব’ সংস্কৃতির কারণে আরও বেশি সতর্ক থাকা দরকার, যাতে কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সুযোগ নিতে না পারে।
বাংলাদেশ থেকে প্রথম জিনস রপ্তানির নেপথ্য কারিগর ছিলেন চট্টগ্রামের উদ্যোক্তা প্রয়াত এম নাসির উদ্দিন। তিনি প্যাসিফিক জিনস প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে জিনসের পাশাপাশি নিট ও কাজের পোশাক (ওয়ার্কওয়্যার) রপ্তানি করছে তারা। গ্রুপটির রপ্তানি পণ্যের মধ্যে ৯১ শতাংশই জিনস প্যান্ট। বিশ্বের ৪৪টি দেশে তাদের পোশাক রপ্তানি হয়। প্যাসিফিক জিনসের বড় ক্রেতা জাপানের বহুজাতিক খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ইউনিক্লো।
প্যাসিফিকে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে। তখন নিজেদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ করেন প্যাসিফিকের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে শিল্প পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় শিল্প পুলিশ বাদী হয়ে নগরের ইপিজেড থানায় একটি মামলা করে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় প্যাসিফিকের ৬০–৭০ জনসহ মোট ৩২০ জনকে।
গত কয়েক মাসে এই মামলার তদন্ত করে শিল্প পুলিশ। এতেই ক্ষিপ্ত হন শ্রমিকেরা। শ্রমিকদের দাবি, মামলা দিয়ে তাঁদের হয়রানি করা হচ্ছে। এ জন্য ৯ অক্টোবর কর্মবিরতি শুরু করেন জিনস ২০০০ লিমিটেডের শ্রমিকেরা। এর আগে তিন দিন ধরে প্যাসিফিক জিনসের শ্রমিকেরাও কারখানার ভেতরে বিভিন্ন বিষয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন।
সর্বশেষ ১৬ অক্টোবর এনএইচটি ফ্যাশনের সামনে শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর ‘সংঘর্ষে দুই শ্রমিক নিহত’ দাবি করে একটি ভিডিও শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে অন্য কারখানাগুলোর শ্রমিকেরা হামলা ও ভাঙচুর চালান। মারধরের শিকার হন কারখানার শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তারা। সেদিন রাতেই সাতটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
শ্রমিকদের অসন্তোষ ও বর্তমান অবস্থা জানতে চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (সিইপিজেড) নির্বাহী পরিচালক আবদুস সোবহানের মুঠোফোনে কয়েক দফা চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শিল্প পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংঘর্ষের দিন সেখানে বহিরাগত কয়েকজন ব্যক্তি প্রবেশ করেন। সংস্কারকাজের জন্য সিইপিজেডের মূল গেট ভেঙে ফেলা হয়েছে। ফলে বহিরাগতরা ভেতরে প্রবেশের সুযোগ পান। এ নিয়ে শ্রমিকদের দাবি, বহিরাগতরা তাঁদের মারধর করেছেন। অন্যদিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, বহিরাগতরা শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে কারখানায় হামলা করতে বাধ্য করেছেন।
এদিকে প্যাসিফিক গ্রুপের অন্তত সাতজন শ্রমিক ও আশপাশের কয়েকটি কারখানার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঝুট কাপড়ের ব্যবসা নিয়ে ইপিজেড এলাকায় কয়েকটি পক্ষ সক্রিয়। আগে প্যাসিফিকের ঝুট বাইরে বিক্রি হতো, এখন প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব রিসাইক্লিং ইউনিটে তা ব্যবহার করা হয়। এই ব্যবসা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে প্রভাবশালী একটি মহল শ্রমিকদের উসকানি দিচ্ছে।
এদিকে গত শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক শ্রমিকের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে। অডিওতে কারখানা খোলার পর সেখানে বিশৃঙ্খলা করার পরিকল্পনার কথা বলতে শোনা যায়। ওই শ্রমিক বলেন, ‘বুঝাইতে হবে যে আমরা ভালো হয়ে গেছি। ভালোভাবে অভিনয় করতে হবে। তা ছাড়া আর কিছু না। তারপরে তো যা করা তো করাই যাবে।’
তবে ওই শ্রমিকের নাম–পরিচয় জানা যায়নি। চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের সুপার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘শ্রমিক নিহত হওয়ার দাবি করা ভিডিওটি ভুয়া। এটি পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে। যাঁরা এটি করেছেন তাঁদের আমরা চিহ্নিত করেছি। তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’