আন্তর্জাতিক বাজারে বড় দরপতনের কারণে দেশেও সোনার দাম কমছে ভরিতে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা। একবারে সোনার দাম এত বেশি কমানোর ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যায়নি। অবশ্য তারপরও ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দুই লাখ টাকার ওপরেই থাকছে।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম কমানোর এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি বা পিওর গোল্ডের মূল্য হ্রাস পেয়েছে। সে জন্য বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের এক সভায় দাম কমানোর সিদ্ধান্ত হয়। সর্বশেষ গত সোমবার এক দফা সোনার দাম বাড়ে। তাতে ভালো মানের, অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের সোনার ভরির দাম বেড়ে হয় ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম।

চলতি মাসে এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে আটবার সোনার দাম সমন্বয় করেছে জুয়েলার্স সমিতি। প্রথম সাতবারই দাম বেড়েছে। এর মধ্যে ৭ অক্টোবর সোনার দাম বেড়ে ভরিতে দুই লাখ টাকার মাইলফলকে পৌঁছায়। অথচ ২৬ মাস আগে দেশে সোনার দাম ছিল ১ লাখ টাকা ভরি।

নতুন দর অনুযায়ী, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে হলমার্ক করা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনা ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকায় বিক্রি হবে। এ ছাড়া প্রতি ভরি ২১ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০১ টাকা, ১৮ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৭০ হাজার ৯৯৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা বিক্রি হবে ১ লাখ ৪২ হাজার ২১৯ টাকায়। আজ পর্যন্ত ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ লাখ ৭ হাজার ৫০৩ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৫৩ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির সোনা ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৪ টাকায় বিক্রি হয়।

নতুন দাম সমন্বয়ের পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে ২২ ক্যারেট মানের প্রতি ভরি সোনায় ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা, ২১ ক্যারেটে ৮ হাজার ২ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটে ৬ হাজার ৮৫৯ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির সোনায় ভরিতে ৫ হাজার ৮৫৫ টাকা দাম কমবে।

সোনার পাশাপাশি রুপার দামও কিছুটা কমেছে। ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম কমে হচ্ছে ৫ হাজার ৪৭০ টাকা। আজ পর্যন্ত রুপার দাম ছিল প্রতি ভরি ৬ হাজার ২০৫ টাকা। এর মানে দাম কমছে ভরিতে ৭৩৫ টাকা।

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারেও আজ সোনার দাম কমেছে। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আজ বিশ্ববাজারে সোনার দাম কমে দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রতি আউন্স সোনার দাম কমে হয়েছে ৪ হাজার ৩৮ দশমিক ৮৯ ডলার, যা গতকাল মঙ্গলবারের তুলনায় ২ শতাংশ কম। যদিও আজ লেনদেনের শুরুতে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম উঠেছিল ৪ হাজার ১৬১ দশমিক ১৭ ডলার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোনার দামের সঙ্গে বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা ও যুদ্ধের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। সোজা বাংলায় বললে, দুর্দিনে সোনার দাম বাড়ে। বিষয়টি বোঝার জন্য বেশি দিন পেছনে যাওয়ার দরকার নেই, করোনাকালে যখন দেশে দেশে অর্থনীতি বিপর্যস্ত, প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক, সাধারণ মানুষের আয় কমছে, প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী, তখনই সোনার দাম বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। আবার যখন রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ শুরু হয়, তখনো সোনার দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোনার মজুত বাড়িয়ে দিয়েছে। এ কারণে বিশ্ববাজারে সোনার দামের ওঠানামা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২২ ক য র ট র স ন র দ ম কম

এছাড়াও পড়ুন:

বিজিবিতে দুই হাজারের বেশি পদ সৃষ্টি

সীমান্ত পাহারায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বাহিনীটির বিভিন্ন পর্যায়ে ২ হাজার ২৫৮টি পদ সৃষ্টি করেছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ–সংক্রান্ত একটি চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বিজিবির সাংগঠনিক কাঠামোতে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ভুরুঙ্গামারী, থানচি ও মেহেরপুরের ৩টি বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নে ২ হাজার ২২৬টি পদ এবং বর্ডার গার্ড হাসপাতাল, গুইমারায় ৩২টি পদ মিলিয়ে মোট ২ হাজার ২৫৮টি পদ সৃজন করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রসারিত অর্গানোগ্রামের অধীন বিজিবিতে ৩ জন নতুন পরিচালক, ৯ জন অতিরিক্ত পরিচালক এবং ৯ জন উপপরিচালক নিয়োগ করা হবে। তাঁদের সশস্ত্র বাহিনী থেকে ডেপুটেশনে আধাসামরিক বাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হবে, যেখানে যথাক্রমে লেফটেন্যান্ট কর্নেল, মেজর ও ক্যাপ্টেনের সমতুল্য তিনটি পদ অফিসারদের জন্য নির্ধারিত থাকবে।

সংশোধিত কাঠামোতে পরিদর্শক পদমর্যাদার তিনজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ডেপুটেশনে নিয়োগ করা হবে আধাসামরিক বাহিনীটিতে। অন্যদের বিজিবি নিয়োগ বিধিমালা অনুসারে নিয়োগ করা হবে।

তাঁদের মধ্যে তিনজন সুবেদার মেজর (সকল শ্রেণি), ৫৭ জন নায়েব সুবেদার (সকল বিভাগ), ২৪০ জন হাবিলদার (সকল শ্রেণি), ২৮৫ জন নায়েক (সকল শ্রেণি), ১৫ জন ল্যান্স নায়েক (অফিস সহকারী), ৩২৭ জন ল্যান্স নায়েক (সকল শ্রেণি), ১৫ জন সৈনিক (অফিস সহকারী) এবং ১ হাজার ২২১ জন সৈনিক বা সিপাহি (সকল শ্রেণি)।

এ ছাড়া কয়েকটি বিভাগে বেসামরিক কর্মীও নিয়োগ করবে বিজিবি। এর মধ্যে তিনজন ইমাম, তিনজন হিসাবরক্ষক, তিনজন উচ্চ বিভাগের কেরানি, তিনজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট, তিনজন ধাত্রী ও তিনজন অফিস সহযোগীর পদ রয়েছে।

এ ছাড়া বিজিবির গুইমারা হাসপাতালে জনবল বৃদ্ধি করা হবে নতুন এই নিয়োগের ফলে। সেখানে নতুন সৃষ্ট পদের মধ্যে রয়েছে ৭ জন হাবিলদার (সকল শ্রেণি), ৩ জন নায়েক (সকল শ্রেণি), ৬ জন ল্যান্স নায়েক (সকল শ্রেণি) এবং ১৪ জন সৈনিক (সকল শ্রেণি)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ