মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে আলোচনা, সমালোচনার শেষ নেই। কালো মাটির স্পিনিং উইকেট খেলে বাংলাদেশ কতটুকু উন্নতি করতে পারবে সেসব নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। হোম অ‌্যাডভানটেজ বা স্বাগতিক সুবিধা সবাই নেয়, কিন্তু সেই সুবিধা কতটুকু পর্যায়ে নেয় বা আদর্শ কতটুকু সেটা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২-১ ব‌্যবধানে হারিয়ে বাংলাদেশ সিরিজ জিতেছে। কিন্তু মিরপুরের উইকেট ছিল একেবারেই স্পিন বান্ধব। পেসাররা কোনো সুবিধা আদায় করতে পারেনি। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫০ ওভার শেষ করেছে কোনো পেস বোলার ছাড়া। আজ সিরিজ নির্ধারণী ম‌্যাচে বাংলাদেশ ৩০.

১ ওভার করেছে কোনো পেসার ছাড়া। কোনো পেসারকে বোলিং করানো ছাড়া প্রতিপক্ষের ১০ উইকেট নেওয়ার প্রথম রেকর্ড এটি।

চার সিরিজ পর বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে। সিরিজ জিতে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফিরেছে। উইকেটের সমালোচনা পাশ কাটিয়ে মিরাজের আনন্দ সিরিজ জয়ে। উল্টো হোম অ‌্যাডভানটেজ নেওয়ার পক্ষে যুক্তি দিলেন তিনি, ‘‘আপনি পৃথিবীর যে জায়গায় খেলতে চান না কেন, যাদের সাথে আমরা খেলি না কেন, তারা কিন্তু হোম অ্যাডভান্টেজটা নেয়। আমরা যদি নিউ জিল্যান্ডে যাই, ওখানে কিন্তু তারা হোম অ্যাডভান্টেজটা নিয়েছে। কোনো দল যদি বাংলাদেশে আসে, আমরা তো অবশ্যই আমাদের হোম অ্যাডভান্টেজটা নিবো। কারণ দিন শেষে সবাই কিন্তু রেজাল্টটাই চায়।’’  

২০২৭ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে হলে আগামী বছর অনেক গুলো হোম ও অ‌্যাওয়ে সিরিজে ভালো করতে হবে বাংলাদেশকে। এরপর ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়াতে। কেমন উইকেটে সামনে খেলতে চান মিরাজ? সেই প্রশ্নও উঠে আসল আজ, ‘‘আমাদের তো অনেক হোম সিরিজ আছে। আমরা যে সব ম্যাচই এখানে (মিরপুর) খেলবো, এরকম কোনো কিছু না। আমরা হয়তো বাইরেও অনেক ম্যাচ খেলবো। আর যেহেতু আফ্রিকাতে খেলা আছে, আফ্রিকার খেলার আগে হয়তো টিম ম্যানেজমেন্ট, আমরা যারা আছি, আরও সুন্দর মতো প্রস্তুতি নিতে পারবো। কিন্তু  বিশ্বকাপ তো এখনো অনেক দেরি। আমাদের সামনে যে সিরিজগুলো আছে, সেগুলোর উপরে মনোযোগ করা উচিত।’’

‘‘আমরা বিশ্বকাপে গিয়ে অনেক ভালো কিছু করতে পারিনি, সেটার জন্য আলাদা একটা প্রক্রিয়া এবং সেটার জন্য আলাদা একটা পরিকল্পনা করতে হবে। আমার কাছে মনে হয় যে সেই পরিকল্পনা হওয়া উচিত দুই থেকে তিন মাস আগে থেকে, যে বিশ্বকাপের আগে আমরা কিভাবে খেলবো, কিভাবে আমরা স্কিল ক্যাম্প করবো, কিভাবে আমাদের প্রিপারেশন থাকবে, সেটার জন্য আলাদাভাবে কোথায় আমরা প্র্যাকটিস করবো। এইভাবে সেই জিনিসগুলো করা উচিত। দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলোতে আমার কাছে মনে হয় হোম অ্যাডভান্টেজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’ - যোগ করেন মিরাজ।
 

ঢাকা/ইয়াসিন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বক প আম দ র উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

আজ সিরিজ জিতলে বা হারলে র‌্যাঙ্কিংয়ে কতটা প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের?

ওয়ানডে ক্রিকেট একটা সময় ছিল বাংলাদেশের গর্বের জায়গা। অথচ সেই গর্বের জায়গা এখন মাথা ব‌্যথার বড় কারণ! ৫০ ওভারের ক্রিকেটা কোনোভাবেই ভালো করতে পারছে না। 

এ বছর ১০টি ওয়ানডেতে মাত্র ২টিতে জিতেছে। সবশেষ চার ওয়ানডে সিরিজের প্রতিটি হেরেছে। আজ আরেকটি সিরিজ নির্ধারণী ম‌্যাচ খেলার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ আজ মিরপুরে বিজয়ের পতাকা উড়ালে সিরিজ হারবে বাংলাদেশ। ব‌্যর্থতার তালিকা আরো লম্বা হবে। তাতে নতুন জটিলতাও সৃষ্টি হতে পারে। 

২০২৭ বিশ্বকাপে সরাসরি কোয়ালিফাই করতে হলে র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরা আট দলের মধ্যে থাকতে হবে। ১৪ দলের টুর্নামেন্টে বাকি দলগুলোকে বাছাইপর্বের বাধা পেরোতে হবে। ২০২৭ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে ছাড়া ওডিআই র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরা আটে থাকা দলই বিশ্বকাপে সরাসরি খেলবে। অর্থাৎ দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে সেরা আটের মধ্যে থাকলে র‌্যাঙ্কিংয়ে দশ নম্বর পর্যন্ত থাকা দলগুলো সরাসরি অংশগ্রহণ করবে।

এই সময়কালের মধ্যে ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরা অবস্থানের মধ্যে না থাকতে পারলে তখন ১০ দলের বাছাইপর্ব খেলতে হবে। যা গত বিশ্বকাপে পেরোতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

মাস ছয়েক আগেই বার্ষিক হালনাগাদের পর আইসিসি ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে দশে নেমে যায় বাংলাদেশ। ২০০৬ সালের পর যা বাংলাদেশের এই সংস্করণে সর্বনিম্ন অবস্থান। এর পর থেকে দশেই আছে বাংলাদেশ। তাতে ২০২৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সরাসরি খেলতে পারবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠে গেছে।  

ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে ৭৪ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ আছে দশে। নয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের পয়েন্ট ৮০। বাংলাদেশ আজ শেষ ম‌্যাচ জিতে সিরিজ জিতলে র‌্যাঙ্কিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নয়ে ও বাংলাদেশ দশেই থাকবে। বাংলাদেশের পয়েন্ট হবে ৭৬, ওয়েস্ট ইন্ডিজে ৭৯। 

আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-১ ব‌্যবধানে সিরিজ জিতলে অবস্থান বদলাবে না দুই দলের কারও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পয়েন্ট বেড়ে হবে ৮১, বাংলাদেশের হবে ৭৩।

বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জনের পথটা বাংলাদেশের জন্য এখন বেশ জটিল। প্রতিটি সিরিজ, প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। তবে পর্যাপ্ত সুযোগও আছে।

বিসিবি জানিয়েছে ২০২৫-২৬ সময়কালে বাংলাদেশ আরও ২০টি ওয়ানডে খেলবে। ফলে র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করে এখনও সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশের বাকি থাকা ম্যাচগুলো- পাকিস্তান – ৩ ওয়ানডে (হোম), নিউ জিল্যান্ড – ৩ ওয়ানডে (হোম), অস্ট্রেলিয়া – ৩ ওয়ানডে (হোম), জিম্বাবুয়ে – ৫ ওয়ানডে (অ্যাওয়ে), আয়ারল্যান্ড – ৩ ওয়ানডে (অ্যাওয়ে) ও ভারত – ৩ ওয়ানডে (হোম)।

এই ম্যাচগুলি আইসিসি এফটিপি’র অধীনে দ্বিপাক্ষিক সিরিজের অংশ এবং ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান নির্ধারণে সরাসরি ভূমিকা পালন করবে।

প্রসঙ্গত, আইসিসির শর্ত পূরণ করে ২০১৫, ২০১৯ এমনকি ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সরাসরি কোয়ালিফাই করেছে।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আজ সিরিজ জিতলে বা হারলে র‌্যাঙ্কিংয়ে কতটা প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের?