রাজধানীর জুরাইনে পূর্বপরিচিত যুবকের ছুরিকাঘাতে আহত পোশাকশ্রমিক রিতা আক্তার ওরফে জান্নাত (১৮) আজ শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। পুলিশ ওই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বেলাল হোসেন ওরফে সোহেল নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি এখন কারাগারে।

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, রিতা জুরাইন আলম মার্কেট এলাকায় থাকতেন। গত রোববার সকাল পৌনে আটটার দিকে রিতা তাঁর কর্মস্থলে যাওয়ার পথে জুরাইন গ্যাসপাইপ এলাকায় বেলাল হোসেন ওরফে সোহেল নামের এক যুবক পথ রোধ করেন। কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে রিতার গলায় ও পেটে ছুরিকাঘাত করেন বেলাল। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা বেলালকে গণধোলাই দিয়ে কদমতলী থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় রিতাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকাল ৯টার দিকে মারা যান তিনি। এর আগে ঘটনার দিন বেলালের বিরুদ্ধে কদমতলী থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা হয়। সেই মামলা আজ হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়েছে।

আজ যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজু পালিত প্রথম আলোকে বলেন, বেলালের সঙ্গে রিতার সম্পর্ক ছিল। কিন্তু রিতা বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বেলাল তাঁকে ছুরিকাঘাত করেন। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে বেলাল রিতাকে ছুরি মারার কথা স্বীকার করেছেন। বেলাল এখন কারাগারে।

রিতার ভগ্নিপতি জাহিদ মৃধা ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে প্রথম আলোকে বলেন, রিতার বাড়ি পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কলতা গ্রামে। তাঁর বাবা মৃত ছোবাহান খাঁ। চার বোন এক ভাইয়ের মধ্যে রিতা ছিলেন তৃতীয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ র ইন

এছাড়াও পড়ুন:

ছিনতাইয়ে বের হয়েছিলেন দুজন, পরে একজনকে হত্যা করে রিকশা ছিনতাই অন্যজনের

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ব্যাটারিচালিত রিকশার চালক জালাল শিকদার (৪৪) হত্যার রহস্য উন্মোচনের দাবি করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাদের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, নিহত জালালের হত্যাকারী শেখ নুরু (৪৬)। তাঁরা দুজনই অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের সদস্য ছিলেন। ঘটনার রাতে তাঁরা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন, কিন্তু ছিনতাই করার জন্য কাউকে না পেয়ে জালালকে হত্যা করে তাঁর অটোরিকশা বিক্রি করে দেন নুরু।

বুধবার দুপুরে ঢাকা জেলা পিবিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা। তিনি বলেন, ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যার পূর্বপাড়া কামারপাড়া এলাকার একটি ডোবা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে জানা যায়, তিনি পটুয়াখালীর গলাচিপার পশ্চিমনেতা গ্রামের জালাল শিকদার। পেশায় অটোরিকশাচালক। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রী হনুফা বেগম অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার পর পিবিআই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটনে ছায়া তদন্ত শুরু করে।

পিবিআই জানায়, তদন্তের সূত্র ধরে ১১ অক্টোবর রাজধানীর শাহ আলী থানার গুদারাঘাট এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি শেখ নুরুকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চুরি ও ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা কেনাবেচায় জড়িত মোজাম্মেল হোসেন নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মোজাম্মেলের দেওয়া তথ্যানুযায়ী রাজধানীর কদমতলী থানার হাবিবনগর খানকা শরিফ এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে নিহত জালালের অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার নুরুকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার কুদরত-ই-খুদা বলেন, সেদিন রাতে নুরু জালালকে মুঠোফোনে কল করে কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকায় দেখা করতে বলেন। এরপর জালাল এলে দুজন একসঙ্গে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বের হন। তবে সেদিন তাঁরা কোনো যানবাহন ছিনতাই করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত জালালকেই ‘টার্গেট’ বানান নুরু। একপর্যায়ে নুরু চুনকুটিয়া এলাকায় একটি দোকানে কৌশলে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান জালালকে। এরপর জালালকে অচেতন অবস্থায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা কামারপাড়া এলাকার ডোবার পাশে নিয়ে যান। সেখানে জালালের গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে মৃতদেহ ডোবার পানিতে ফেলে দেন নুরু। পরদিন ভোরে জালালের অটোরিকশাটি রায়েরবাগ এলাকার মোজাম্মেল মোল্লার কাছে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন নুরু।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আরও জানান, জালাল ও নুরু সংঘবদ্ধ অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের সদস্য ছিলেন। তাঁরা ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা চুরি ও ছিনতাই করতেন।

কুদরত-ই-খুদা আরও বলেন, রাজধানীতে এ ধরনের আরও একাধিক ছিনতাই চক্র সক্রিয় রয়েছে। এসব চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছিনতাইয়ে বের হয়েছিলেন দুজন, পরে একজনকে হত্যা করে রিকশা ছিনতাই অন্যজনের