তোফায়েল আহমেদের স্বপ্ন ছিল স্থানীয় সরকারব্যবস্থার সংস্কার করা। সেই স্বপ্নপূরণে তিনি পথ দেখিয়ে গেছেন, এখন সেই পথে হাঁটতে হবে। সরকার যেন স্থানীয় সরকারব্যবস্থার সংস্কারে উদ্যোগী হয়। জনসাধারণেরও যাঁর যাঁর দায়িত্ব থেকে এই সংস্কারে মনোযোগী হওয়া দরকার।

শিক্ষাবিদ ও স্থানীয় সরকারবিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদের স্মরণে আয়োজিত নাগরিক সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘চলে যাওয়া নয়, পথ দেখিয়ে যাওয়া: ড.

তোফায়েল আহমেদকে স্মরণ’ শীর্ষক এই নাগরিক সভার আয়োজন করে কোস্ট ফাউন্ডেশন।

সভার শুরুতে তোফায়েল আহমেদের জীবন ও কর্ম নিয়ে তৈরি করা একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।

কুমিল্লায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) পরিচালক ফৌজিয়া নাসরিন সুলতানা বলেন, তোফায়েল আহমেদের সারা জীবনের চিন্তাভাবনা স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় এসেছে। এসব প্রস্তাবনা ইংরেজিতে অনূদিত করার ইচ্ছা ছিল তাঁর। সেটি করা গেলে সারা বিশ্ব এই সংস্কার প্রস্তাব সম্পর্কে জানতে পারবে। তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে।

নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য মাসুদা খাতুন বলেন, স্থানীয় সরকার সংস্কারের যে ধারণা, সেটি আরও দুই বছর আগে থেকে প্রস্তুত করে রেখেছিলেন তোফায়েল আহমেদ। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে অন্য কোনো কমিশনের প্রধান এত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন কি না, সেটি নিয়ে সন্দেহ আছে।

মাসুদা খাতুন আরও বলেন, ঐকমত্য কমিশনে তোফায়েল আহমেদের প্রস্তুত করা প্রতিবেদন নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি, গুরুত্বও দেওয়া হয়নি। এটি নিয়ে তাঁর আক্ষেপ ছিল। তাই তিনি হয়তো অভিমান নিয়েই চলে গেছেন। তবে তিনি খুব ভালোভাবে পথ দেখিয়ে গেছেন। তাঁর এই প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়ন জরুরি।

তোফায়েল আহমেদের সহধর্মিণী মাসুদা আকতার চৌধুরী বলেন, তিনি চলে গেছেন, তাঁকে তো আর পাওয়া যাবে না। সবার প্রতি তাঁর আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়ার অনুরোধ রইল। তাঁর মেয়ে সাদিয়া আহমেদ বলেন, মানুষকে নিয়ে, দেশকে নিয়ে তিনি (তোফায়েল আহমেদ) চিন্তা করতেন। কাজকে বেশি গুরুত্ব দিতেন। কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি।

নাগরিক সভা সঞ্চালনা করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী। আরও বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিকল্পনা, পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান, কোস্ট ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল আহমেদ, সদস্য মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, মেহেদী হাসান প্রমুখ।

৮ অক্টোবর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিক্ষাবিদ ও স্থানীয় সরকারবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই অধ্যাপক অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত ফ য় ল আহম দ র স স থ ন য় সরক র সরক র স স ক র পথ দ খ য় প রস ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

পুরান ঢাকায় ছুরিকাঘাতে কারখানার শ্রমিক হত্যায় যুবকের স্বীকারোক্তি

রাজধানীর লালবাগে কারখানার শ্রমিক মো. হোসেনকে (২৪) ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় মো. আবির নামের এক যুবক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মনোমালিন্যের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুল ইসলাম এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলাম বলেন, আসামি আবিরকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। আসামি দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় লালবাগ থানার উপপরিদর্শক মো. নাজমুজ্জামান জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন। পরে আদালত জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত সোমবার তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে আবিরের সঙ্গে নিহত হোসেনের বন্ধু নীরবের কথা–কাটাকাটি হয়। এ সময় হোসেন তাঁর বন্ধুর পক্ষ নিলে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে বিষয়টি মীমাংসা হলেও আবির তা মেনে নেননি।

এর জেরে মঙ্গলবার বিকেলে হোসেন কারখানা থেকে বাড়ি ফেরার পথে লালবাগের শহিদনগর এলাকায় একটি দোকানের সামনে আবির পেছন থেকে তাঁর পিঠে ছুরি মারেন। খবর পেয়ে স্বজনেরা হোসেনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

মামলার অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, আবির ওই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। হোসেন সেখানে ভাড়া থাকতেন এবং একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন।

এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ