কিশোরগঞ্জে বিলে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু
Published: 24th, October 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের হাওরবেষ্টিত অষ্টগ্রাম উপজেলায় বিলের পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর গ্রামের পাশের বিল থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মারা যাওয়া শিশুরা হলো, দেওঘর ইউনিয়নের পশ্চিম আলীনগর গ্রামের মাইন্না বাড়ির আবুল কালামের ছেলে মো.
আরো পড়ুন:
গাইবান্ধায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বাবা-ছেলের মৃত্যু
মাদারীপুরে পুকুরে ডুবে স্কুলছাত্রের মৃত্যু
এলাকাবাসী জানায়, বিকেলে তিন শিশু বাড়ির সামনে খেলাধুলা করছিল। একপর্যায়ে সবার অজান্তে তারা বাড়ির পাশের বিলের পানিতে পড়ে যায়। পরে দীর্ঘ সময় তাদের না পেয়ে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
একপর্যায়ে বিলের পানিতে মিশকাত ও মাহিনকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে অষ্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তানিলের লাশ উদ্ধার করে।
মাহিনের চাচা মোবারক হোসেন বলেন, ‘‘প্রতিদিনের মতো ওরা তিনজন খেলছিল। কখন যে পানিতে পড়ে গেল, কেউ বুঝতেই পারেনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বিলে তাদের পাওয়া যায়।’’
দেওঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘‘একই গ্রামের তিন শিশুর মৃত্যু খুবই মর্মান্তিক। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’’
ঢাকা/রুমন/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভবনের ছাদ থেকে ৫ ঘণ্টা গুলিবর্ষণ, একটি অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি
চারতলা ভবনের ছাদে ২০-২৫ জন ব্যক্তি। তাঁদের অনেকের হাতেই আগ্নেয়াস্ত্র। এর মধ্যে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরা একজন কিছুক্ষণ পরপর বাঁশি বাজাচ্ছেন। সেই বাঁশি বেজে উঠতেই একসঙ্গে ভবনের নিচে জড়ো হওয়া মানুষকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হচ্ছে। মাঝেমধ্যে জিরিয়ে নিয়ে ছাদে থাকা একটি ড্রাম থেকে শরবতও পান করছিলেন সেই অস্ত্রধারীরা। এভাবে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে গুলি ছোড়া হয় ভবনটির ছাদ থেকে।
গত বছরের ৪ আগস্ট এই দৃশ্য দেখা যায় লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলায়। ওই অস্ত্রধারীদের গুলিতে চারজন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রের একটিও উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ নিহত ব্যক্তিদের স্বজন ও আহত ব্যক্তিরা।
দিনের আলোতে গুলিবর্ষণের এ ঘটনার অনেক ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ জানায়, ছাত্র-জনতার কর্মসূচিতে হামলার সময় পিস্তল, শটগান ও কাটাবন্দুক ব্যবহার করতে দেখা যায় অস্ত্রধারীদের। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে অধিকাংশ অস্ত্রধারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। অস্ত্রধারীদের প্রায় সবাই যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মী। এরই মধ্যে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হলেও অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান চার শিক্ষার্থী। তাঁরা হলেন লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরিয়া কলেজের সাদ আল আফনান, দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের সাব্বির হোসেন রাসেল, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের কাউছার হোসেন ও একই কলেজের ওসমান গণি।যেভাবে ঘটনার শুরুলক্ষ্মীপুর শহরের মাদাম এলাকায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীরা অবস্থান করেন ঝুমুর এলাকায়। সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। এ সময় শহরের উত্তর তেহমনী থেকে ঝুমুর পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী চলে এই সংঘর্ষ। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতারা পিছু হটেন। এর মধ্যে কিছু নেতা-কর্মী আশ্রয় নেন জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিনের বাসার সামনে।
দুপুর ১২টার দিকে শত শত আন্দোলনকারী এ কে এম সালাহ উদ্দিনের বাসার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় সালাহ উদ্দিন ও তাঁর বাহিনীর লোকজন বাসার ছাদ থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। শতাধিক আন্দোলনকারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান চারজন শিক্ষার্থী। তাঁরা হলেন লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরিয়া কলেজের সাদ আল আফনান, দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের সাব্বির হোসেন রাসেল, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের কাউছার হোসেন ও একই কলেজের ওসমান গণি । ওই দিন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা একপর্যায়ে এ কে এম সালাহ উদ্দিনের ভবনটিতে আগুন দেন। এ সময় গণপিটুনিতে নিহত হন আরও ৮ জন।
ছাত্র–জনতার কর্মসূচিতে হামলা চালান অস্ত্রধারীরা। গত বছরের ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুর সদর এলাকায়