নারীদের মাসিক ঘিরে ২৫ বছর বয়সী তরুণী কেন পাকিস্তান সরকারকে আদালতের মুখোমুখি করলেন
Published: 26th, October 2025 GMT
পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের পাশের শহর রাওয়ালপিন্ডিতে বেড়ে উঠেছেন মাহনূর ওমার। এখনো তাঁর মনে পড়ে, মাসিকের সময় স্কুলে গিয়ে কতটা লজ্জা ও উদ্বেগে পড়তে হতো তাঁকে। স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে টয়লেটে যাওয়া ছিল এমন একটি গোপন কাজ, যেন কোনো অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করছেন।
মাহনূর ওমার বলেন, ‘আমি জামার হাতার নিচে স্যানিটারি ন্যাপকিন লুকিয়ে রাখতাম। মনে হতো যেন টয়লেটে কোনো মাদকদ্রব্য নিয়ে যাচ্ছি। মাহনূর মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তাঁর বাবা একজন ব্যবসায়ী আর মা গৃহিণী।’ মাহনূর বলেন, ‘কেউ এ বিষয়ে কথা বললে শিক্ষকেরা তাকে চুপ করিয়ে দিত।’ একবার এক সহপাঠী তাঁকে বলেছিল, তার মা স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনা ‘অর্থের অপচয়’ বলে মনে করেন।
মাহনূর ১৬ বছর বয়সে প্রথম নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি ও তাঁর বন্ধুরা ইসলামাবাদের নিম্ন আয়ের এলাকায় নারীদের জন্য ছোট ‘ডিগনিটি কিট’ তৈরি করতে শুরু করেন।এ কথা শোনার পর বিষয়টি মাহনূরকে নাড়া দেয়। তিনি বলেন, ‘যদি মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো এভাবে চিন্তা করে, ভাবুন তো অন্যদের কাছে এই পণ্যগুলো কতটা দুষ্প্রাপ্য।’
মাহনূরের বয়স এখন ২৫ বছর। একসময়ের এই সচেতন স্কুলছাত্রী পাকিস্তানের নারীদের মাসিককালীন স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে নতুন করে গড়ে তোলার লড়াই করতে গিয়ে জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন।
সমালোচকদের মতে, পাকিস্তান এমন একটি দেশ, যেখানে নারীকে কেবল নারী হওয়ার কারণে হেয় হতে হয়। অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সামাজিক প্রথা আরও জটিল ও তীব্র হচ্ছে।
পেশায় আইনজীবী মাহনূর গত সেপ্টেম্বরে লাহোর উচ্চ আদালতে এমন একটি কর–ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন দায়ের করেন, যা তিনিসহ আরও অনেকের কাছে ‘মাসিক কর’ নামে পরিচিত। পাকিস্তান সরকার দেশটির ১০ কোটির বেশি নারীর ওপর এই কর আরোপ করেছে।
পাকিস্তানি সরকার ১৯৯০ সালের সেলস ট্যাক্স আইনের অধীনে দীর্ঘদিন ধরে দেশে উৎপাদিত স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর ১৮ শতাংশ বিক্রয় কর আরোপ করছে। এ ছাড়া আমদানি করা ন্যাপকিনের পাশাপাশি সেগুলো তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের ওপর ২৫ শতাংশ কাস্টমস শুল্ক আরোপ করা হয়।
ইউনিসেফ পাকিস্তান বলছে, অন্যান্য স্থানীয় কর যোগ করলে কার্যত স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর মোট কর দাঁড়ায় প্রায় ৪০ শতাংশ।
মাহনূর ওমারের ওই পিটিশনে বলা হয়েছে, নারীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলা এসব কর বৈষম্যমূলক। এর মধ্য দিয়ে সংবিধানের এমন কিছু ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে, যেগুলো সাম্য, মর্যাদা, শোষণের অবসান ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।
পাকিস্তানে অধিকাংশ পরিবারেই মাসিক নিয়ে কথা বলা এখনো নিষিদ্ধ। এমন অবস্থায় সেখানে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর করের কারণে নারীদের জন্য এটির প্রাপ্যতা আরও কঠিন দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন ওমারসহ অন্য আইনজীবী ও পিটিশন–সমর্থক অধিকারকর্মীরা।
স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর আরোপিত করের বিরোধীরা আশা করছেন, ওমারের পিটিশন ভারত, নেপাল ও যুক্তরাজ্যের মতো পাকিস্তান সরকারকেও ‘মাসিক কর’ বাতিল করতে বাধ্য করবে।পাকিস্তানে বর্তমানে যেকোনো ব্র্যান্ডের এক প্যাকেট স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে প্রায় ৪৫০ রুপি (১ ডলার ৬০ সেন্ট) খরচ হয়। যে দেশে মাসিক মাথাপিছু আয় মাত্র ১২০ ডলার, সেখানে এক প্যাকেট ন্যাপকিনের দাম নিম্ন আয়ের চার সদস্যের একটি পরিবারের ডাল–রুটি দিয়ে এক বেলা খাবারের খরচের সমান।
২০২৪ সালে ইউনিসেফ ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ওয়াটারএইডের এক গবেষণা অনুযায়ী, বর্তমানে পাকিস্তানের মাত্র ১২ শতাংশ নারী বাণিজ্যিকভাবে তৈরি স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন। অন্যরা কাপড় ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে কাজ চালিয়ে নেন। এমনকি নিজেদের পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য অনেক সময় তাঁরা বিশুদ্ধ পানি পর্যন্ত পান না।
পাকিস্তানের দস্তক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক হিরা আমজাদ বলেন, ‘এই পিটিশন সফল হলে স্যানিটারি ন্যাপকিন সাশ্রয়ী হবে।’ দস্তক ফাউন্ডেশন একটি বেসরকারি সংস্থা। এটি লিঙ্গ সমতার প্রচার ও নারীর ওপর সহিংসতার বিরুদ্ধে কাজ করে।
আইনজীবী ও অধিকারকর্মীরা বলছেন, বড়সড় একটি সামাজিক পরিবর্তনের নিয়ামক হতে পারে এই পিটিশন।
আদালতে মাহনূরের এই মামলাকে ‘মাহনূর ওমার বনাম পাকিস্তান সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা’ নামে নথিভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু মাহনূরের কাছে এটিকে বরং ‘নারী বনাম পাকিস্তান’ বলেই মনে হয়।
‘ন্যায়বিচারের অনুভূতি’মাহনূর ওমার বলেন, নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে তাঁর কাজ করার আগ্রহ শুরু হয়েছিল খুব ছোটবেলায়। তিনি বলেন, ‘নিত্যদিন নারীর সঙ্গে ভয়াবহ দুর্ব্যবহার দেখে দেখে এই কাজ করতে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। রাস্তায়, গণমাধ্যমে কিংবা বাড়ির ভেতর নারীরা যে অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মৌখিক শোষণের শিকার হন, সেটা আমার কাছে কখনো গ্রহণযোগ্য ছিল না।’
নিজেকে এমন সহানুভূতিশীল ও বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য মাহনূর সব কৃতিত্ব তাঁর মাকেই দিতে চান।
স্কুলের পাট চুকিয়ে মাহনূর পাকিস্তানের ক্রসরোড কনসালট্যান্ট নামের প্রতিষ্ঠানে লিঙ্গ ও ফৌজদারি বিচারসংক্রান্ত পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেন। এ প্রতিষ্ঠানটি এনজিও ও উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে লিঙ্গ ও ফৌজদারি বিচারবিষয়ক সংস্কার নিয়ে কাজ করে। ১৯ বছর বয়সে তিনি ‘অওরাত মার্চ’ নামের একটি সংগঠনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যুক্ত হন। এটি নারী অধিকার নিয়ে কাজ করে।
মাহনূর ১৬ বছর বয়সে প্রথম নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি ও তাঁর বন্ধুরা ইসলামাবাদের নিম্ন আয়ের এলাকায় নারীদের জন্য ছোট ‘ডিগনিটি কিট’ তৈরি শুরু করেন।
এই আইনজীবী বলেন, ‘আমরা কেকসহ নিজেদের তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার বিক্রি করে বা নিজেদের অর্থেই তহবিল সংগ্রহ করতাম।’
সেই তহবিল দিয়ে তাঁরা নিজেদের তৈরি প্রায় ৩০০টি ডিগনিটি কিট বিতরণ করতে সক্ষম হন। প্রতিটি কিটে থাকত স্যানিটারি ন্যাপকিন, অন্তর্বাস, ব্যথানাশক ওষুধ ও টিস্যু। তবে তিনি নারীদের জন্য এর চেয়ে বেশি কিছু করতে চেয়েছিলেন।
সেই সুযোগ আসে ২০২৫ সালের শুরুতে সুপ্রিম কোর্টে প্রথমে ল’ ক্লার্ক হিসেবে কাজ শুরু করার পর। বর্তমানে মাহনূর লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে লিঙ্গ, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করছেন এবং স্নাতকোত্তর শেষে পাকিস্তানে ফিরে আবার তাঁর কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা করছেন।
কর ও সংবিধান–সংক্রান্ত আইনে বিশেষজ্ঞ আইনজীবী আহসান জাহাঙ্গীর খানের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় মাহনূরের। তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রথম ‘মাসিক করের’ বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করার পরিকল্পনাটি উঠে আসে।
মাহনূর বলেন, ‘তিনি (আহসান) আমাকে এই পিটিশন দাখিল করতে ও শুধু বসে না থেকে ন্যায় প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।’
আহসান জাহাঙ্গীর খান এই মামলার সহ–আবেদনকারী। তিনি বলেন, করের বিরুদ্ধে লড়াই কেবল স্যানিটারি ন্যাপকিনকে সহজলভ্যতা ও সাশ্রয়ী করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি ন্যায়বিচারের ব্যাপার। তিনি আরও বলেন, ‘এটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার ওপর আরোপিত কর।’
আরও পড়ুনমাসিক নিয়ে লজ্জা নয়, আলোচনা দরকার২৬ মে ২০২৫আহসান জাহাঙ্গীর বলেন, পাকিস্তানের কর নীতিমালা সমাজের অভিজাত ব্যক্তিদের হাতে লেখা, যাঁদের বেশির ভাগই পুরুষ। তাঁরা কখনো ভাবেননি, এই কর সাধারণ নারীদের জন্য কী অর্থ বহন করে। তিনি আরও বলেন, সংবিধানে খুব স্পষ্ট করে বলা আছে, কোনো লিঙ্গের মানুষের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করা চলবে না।
স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর আরোপিত করের বিরোধীরা আশা করছেন, ওমারের পিটিশন ভারত, নেপাল ও যুক্তরাজ্যের মতো পাকিস্তান সরকারকেও ‘মাসিক কর’ বাতিল করতে বাধ্য করবে।
মাহনূর ওমারের জন্য সরকারের নীতিমালার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সহজ ছিল না। তিনি বলেন, প্রথমে তাঁর মা–বাবা চিন্তিত ছিলেন। কারণ, তাঁদের মেয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে যাচ্ছেন। তবে এখন তাঁরা মাহনূরকে নিয়ে গর্ব করেন। তাঁরা বুঝতে পারছেন, কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ।
মাহনূরের কাছে এটি কেবল একটি আইনি লড়াই নয়। তিনি বলেন, ‘যখন আমি এ মামলাটি নিয়ে ভাবি, তখন মনের মধ্যে যে ছবিটি আসে, তা আদালতের কক্ষের নয়; বরং এটি ন্যায়বিচারের অনুভূতি দেয়।’
আরও পড়ুনসংক্রমণমুক্ত ও নিরাপদ পিরিয়ড নারীর অধিকার২৮ মে ২০২৫আরও পড়ুনস্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম এত বেশি কেন২৯ মে ২০২২.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ক স ত ন সরক র ন র দ র জন য ম হন র র ম স ক কর আইনজ ব র বল ন পর ব র ক জ কর ন একট প রথম করছ ন র বয়স
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিতে বিচারপতিদের মিলনমেলা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগ যেন ফিরে পেয়েছে তার গৌরবময় অতীতের দিনগুলো। প্রতিষ্ঠার ৭২ বছর পর প্রথম পুনর্মিলনী উপলক্ষে ক্যাম্পাসে জড়ো হয়েছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদসহ ৩৫ জন বিচারপতি।
এর মধ্যে প্রধান বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগের ২৯ জন বিচারপতি, আপিল বিভাগের তিনজন ও অবসরপ্রাপ্ত দুইজন বিচারপতি রয়েছেন। এছাড়া উপস্থিত আছেন, শতাধিক জজ ও সহস্রাধিক আইনজীবী।
আরো পড়ুন:
শিল্পকলায় নোবেলজয়ী নাট্যকারের ‘ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলমস’
রেজোয়ানের ভাসমান স্কুলের ইউনেস্কোর পুরস্কার অর্জন
এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেছেন আইন বিভাগের ১৯৬৭-৬৮ সেশন থেকে ২০২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থীরা। প্রিয় ক্যাম্পাসে আবেগঘন একটি দিন পার করতে তাদের অনেকেই নিয়ে এসেছেন পরিবার-পরিজনকে ।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকেই ক্যম্পাসের সর্বত্র দেখা যায় তাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের সামনে জমে আড্ডা। কেউবা ছবি তুলছেন, কেউ জমিয়ে আড্ডায় মেতেছেন।
পুরোনো বন্ধু, শিক্ষক আর সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হওয়ার আনন্দে সবার মুখে ঝলমল করছে হাসি। কেউ স্মৃতিচারণ করছেন টিচার্স লাউঞ্জের আড্ডার কথা, কেউবা স্মৃতি রোমন্থন করছেন আইনের ক্লাসরুম, সিনেট ভবন কিংবা শহীদুল্লাহ কলাভবনের করিডোরের দিনগুলো।
পুনর্মিলনী উপলক্ষে স্মৃতিচারণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিশেষ আলোচনা সভাসহ সারাদিন থাকছে নানা আয়োজন। আইন বিভাগের বর্তমান শিক্ষার্থীরাও এই আয়োজনকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত। কারণ তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন সেই সিনিয়ররা, যারা আজ দেশের বিচারব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত।
এ বিষয়ে এক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, “অনেকদিন পর প্রিয় ক্যাম্পাসে ফিরে মনে হচ্ছে, সময় যেন পেছনে ফিরে গেছে। এখানেই গড়ে উঠেছিল আমাদের চিন্তা, যুক্তি আর ন্যায়বোধের ভিত।”
অনিভুতি প্রকাশ করে ১৯৯২-৯৩ সেশনের শিক্ষার্থী কবির ইকবাল হোসেন বলেন, “আইন বিভাগকে ধন্যবাদ, এত সুন্দর একটা আয়োজন করার জন্য। ৭২ বছর পর প্রথম পুনর্মিলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মতিহারের সবুজ চত্বর আজ একটা মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। অংশগ্রহণ করে আমরা খুবই উজ্জীবিত। আমরা চাই, প্রতি বছর যেন এই আয়োজনটা হয়।”
বাংলাদেশ বিচার বিভাগের জয়েন্ট ডিস্ট্রিক্ট জজ ও রাবি আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী বেল্লাল হোসেন বলেন, “আইন বিভাগের এই ৭২ বছর পূর্তিতে এসে আমরা একটি অন্যরকম অনুভূতি অনুভব করছি। এটি নবীন-প্রবীণের একটি আনন্দঘন মুহুর্ত। আমরা প্রাক্তন ছাত্ররা এই আয়োজনে আসতে পেরে অনেক খুশি। এই আয়োজনের জন্য আয়োজকদের আমরা অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “প্রায় ১৭ বছর পর ক্যাম্পাসে এসে ভৌত ও অবকাঠামোগত কিছু পরিবর্তন দেখছি, এবং অনুভূতিতে আমি ফিরে গিয়েছি ছাত্রজীবনের সেই সময়টাতে। সঙ্গে আমার স্ত্রী-সন্তান এসেছে আমার নিজের ক্যাম্পাসে, তাই অনেক ভালো লাগছে।”
অনুভুতি প্রকাশ করে বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শফিকুজ্জামান রানা বলেন, “আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অনার্স ৪৩তম ব্যাচ ও এমএলএম ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এ মিলনমেলার অনুভূতি সত্যিই ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। দীর্ঘ ২০-২৫ বছর পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, যা অত্যন্ত আবেগময় একটি মুহূর্ত।”
তিনি বলেন, “ছোটভাই, বড়ভাই ও প্রিয় সহপাঠীদের সঙ্গে এই মিলনমেলা উপভোগ করছি প্রাণভরে। আমরা চাই, এমন আয়োজন প্রতি বছরই হোক। এতো সুন্দর ও হৃদয়ছোঁয়া আয়োজনের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সবাইকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী