ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার পেলেন রায়হান রাফি-আলিমুজ্জামান
Published: 26th, October 2025 GMT
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন প্রবর্তিত ‘ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার ২০২৫’ পেয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা রায়হান রাফি ও চলচ্চিত্র সাংবাদিক আলিমুজ্জামান। শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক মতিন রহমান, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, রন্ধনবিদ কেকা ফেরদৌসী, সাংবাদিক আবদুর রহমান, অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন, ‘আনন্দ আলো’-এর সম্পাদক রেজানুর রহমান, বাচসাস-এর সাধারণ সম্পাদক রাহাত সাইফুল, ‘অন্যপ্রকাশ’-এর প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম, অভিনেত্রী ও নির্মাতা আফসানা মিমিসহ চলচ্চিত্র সাংবাদিক, লেখক, প্রকাশক ও পরিচালকবৃন্দ।
আরো পড়ুন:
কলকাতায় একসঙ্গে চঞ্চল-ফারিণ
পুরুষদের ইগো সামলানো আসল চ্যালেঞ্জ ছিল: জাহ্নবী
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন বলেন, “আমরা ফজলুল হককে সরাসরি পাইনি, কিন্তু তার কাজ দেখেছি ও অনুভব করেছি। শিল্পকলার আগামী দিনের কর্মসূচিতে ফজলুল হকের ওপর নির্মিত ডকুফিল্ম প্রদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে।”
স্মৃতিচারণ করেন প্রকৃতিবিদ মুকিত মজুমদার বাবু, রন্ধনবিদ কেকা ফেরদৌসী, সাংবাদিক রাজু আলীম, কণ্ঠশিল্পী খুরশীদ আলম ও অভিনেতা কেরামত মাওলা। বক্তারা আশা প্রকাশ করেন—ফজলুল হককে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা দেওয়া উচিত। কারণ তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সাংবাদিকতা ও নির্মাণে পথপ্রদর্শক হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন।
উল্লেখ্য, প্রয়াত ফজলুল হক ছিলেন দেশের প্রথম চলচ্চিত্র বিষয়ক পত্রিকা ‘সিনেমা’-এর সম্পাদক এবং বাংলাদেশের প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘সান অব পাকিস্তান (প্রেসিডেন্ট)’-এর নির্মাতা। তার স্মরণে গত ২২ বছর ধরে এই পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র পরিচালক রায়হান রাফি তার মমতাময়ী মাকে সঙ্গে নিয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেন, যা মুহূর্তটিকে আরো আবেগময় ও স্মরণীয় করে তোলে।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চলচ চ ত র প রস ক র অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের কারাগার থেকে ফিরলেন ৩২ জেলে, ভারতে গেলেন ৪৭ জন
তিন মাস ধরে ভারতের কারাগারে থাকা বাংলাদেশি ৩২ জেলেকে ফিরিয়ে এনে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে বাগেরহাটের মোংলায় কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশের কারাগারে থাকা ভারতের ৪৭ জেলেকে দেশটির উপকূল রক্ষা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমঝোতার পর ৩২ জেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি ভারতীয় ৪৭ জেলেকে ফেরত পাঠানো হয়।
কোস্টগার্ড জানায়, বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমারেখা-সংলগ্ন বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যে অবৈধভাবে মৎস্য আহরণরত অবস্থায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী গত ১২ জুলাই ও ২ আগস্ট এফবি মা মঙ্গলচণ্ডী-৩৮, এফবি ঝড়, এফবি পারমিতা-৪ নামের তিনটি ভারতীয় মাছ ধরার নৌকাসহ ৪৭ জেলেকে আটক করে। অন্যদিকে গত ১২ ও ১৭ সেপ্টেম্বর ভারতীয় জলসীমায় মৎস্য আহরণের অভিযোগে দুটি বাংলাদেশি মাছ ধরার নৌকাসহ ৩২ জন জেলেকে আটক করে ভারতীয় কোস্টগার্ড।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে আটক থাকা জেলেদের বন্দিবিনিময়ের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যার অংশ হিসেবে ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বাউন্ডারি লাইনে বাংলাদেশে আটক ৪৭ জন ভারতীয় জেলেকে তিনটি মাছ ধরার নৌকাসহ ভারতীয় কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়। একই সঙ্গে ভারতে আটক থাকা ৩২ বাংলাদেশি জেলেসহ এফবি মায়ের দোয়া নামের মাছ ধরার নৌকাকে ভারতীয় কোস্টগার্ড বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করে। এ ছাড়া আরও একটি মাছ ধরার নৌকা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
কোস্টগার্ডের যুদ্ধজাহাজ বিসিজিএস কামরুজ্জামানের অধিনায়ক কমান্ডার শুয়াইব বখতিয়ার রানা বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমঝোতায় দুই দেশে বন্দী থাকা জেলেদের হস্তান্তর করা হয়েছে।
দেশে ফেরা ৩২ জেলের বাড়ি ভোলা ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায়। তাঁরা বলছেন, ভারতের কারাগারে শতাধিক মৎস্যজীবীসহ বিভিন্ন অপরাধে আরও অনেকে আটক আছেন। সেখানে তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ভারতের কারাগারে থাকতে তাঁদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন। ভারত থেকে ফিরিয়ে আনায় কোস্টগার্ড ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
ফিরে আসা জেলে মো. ইউনুস বলেন, ‘তিন মাস ভারতের জেলে ছিলাম। ভারতের জেলে থাকা অবস্থায় আমাদের অমানুষিক নির্যাতন করেছে। সেখানে আমার মতো আরও অনেক বাংলাদেশি আটক আছেন। সরকারের কাছে অনুরোধ, তাঁদেরও যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।’
আরেক জেলে মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতের জেলে প্রতিদিন আতঙ্কে ছিলাম। পরিবার কী অবস্থায় আছে, জানতাম না। দেশে ফিরে যেন নতুন জীবন পেলাম। কিন্তু সেখানে এখনো বহু বাংলাদেশি আছেন।’
এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মালিক মাওলানা ফখরুল ইসলাম বলেন, তিন মাস সাত দিন আগে ১৯ জেলে নিয়ে ভোলা থেকে সাগরে মাছ ধরতে যায় ট্রলারটি। ঝড়ে পথ হারিয়ে ভারতীয় বিএসএফের কাছে আটক হয়। এরপর তাঁদের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে জানতে পারেন, জেলখানায় আছে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর কোস্টগার্ড তাঁদের উদ্ধার করেছে।