অনলাইন কেনাকাটা করতে আগ্রহীদের লক্ষ্য করে এ বছর ফিশিং হামলা ও ভুয়া অফারের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি। প্রতিষ্ঠানটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইন স্টোর, ব্যাংক ও পেমেন্ট সিস্টেমের ছদ্মাবরণে প্রায় ৬৪ লাখ ফিশিং হামলার চেষ্টা ব্লক করেছে ক্যাসপারস্কি। এসব হামলার ৪৮ দশমিক ২ শতাংশই অনলাইন ক্রেতাদের লক্ষ্য করে চালানো হয়েছিল। একই সময়ে গেমিং প্ল্যাটফর্মগুলোও সাইবার হামলার অন্যতম লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল। আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ক্যাসপারস্কি সিকিউরিটি নেটওয়ার্ক।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্ল্যাক ফ্রাইডে ঘিরে অনেক স্প্যাম মেইল পাঠিয়েছিল সাইবার অপরাধীরা। নভেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহেই ১ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৫টি স্প্যাম ই–মেইল শনাক্ত করেছে ক্যাসপারস্কি। এসব স্প্যাম ই–মেইলের বহু অংশই আগের বছরের টেমপ্লেট পুনর্ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে এবং অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট, আলিবাবাসহ বিভিন্ন পরিচিত ব্র্যান্ডের নামে পাঠানো হয়েছে। বিনোদন প্ল্যাটফর্মকেও ছাড় দেয়নি সাইবার অপরাধীরা। ২০২৫ সালে ৮ লাখের বেশি নেটফ্লিক্স এবং ৫ লাখের বেশি স্পটিফাই-সংশ্লিষ্ট ফিশিং প্রচেষ্টা শনাক্ত করেছে ক্যাসপারস্কি।

ই-কমার্স ছাড়াও সাইবার অপরাধীরা স্টিম, প্লেস্টেশন, এক্সবক্স প্রভৃতি গেমিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে ২০ লাখ ৫৪ হাজারের বেশি বার ফিশিং হামলার চেষ্টা করেছে। শুধু তা–ই নয়, গেমিং সফটওয়্যারের ছদ্মাবরণে ছড়িয়ে পড়া ম্যালওয়্যারের সংখ্যাও বছরজুড়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

ক্যাসপারস্কির জ্যেষ্ঠ ওয়েব কনটেন্ট অ্যানালিস্ট ওলগা অলতুখোভা জানান, সাইবার অপরাধীরা এখন পুরো ডিজিটাল দুনিয়াতেই সক্রিয়। তারা অনলাইন কেনাকাটা, গেমিং, স্ট্রিমিং ও যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে নিজেদের কৌশল পরিবর্তন করছে। তাই ব্যবহারকারীদের অনলাইন কেনাকাটার সময় সতর্ক থাকা জরুরি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প ল য টফর ম লক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ৬ হার

দেশের মাটিতে রানের দিক দিয়ে নিজেদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে টেস্ট পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেল ভারত। গুয়াহাটিতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ৪০৮ রানে হেরে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশও হয়েছে। এতে করে ঘরের মাঠের দূর্গ ভেঙে খানখান হয়ে যাওয়ার গল্প রচিত হলো।

কলকাতায় তিন দিনে হারানোর পর গুয়াহাটিতে পাঁচ দিনের ম্যাচেও দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতকে উড়িয়ে দিল। ২০০০-০১ সালের পর প্রথমবার ভারতের মাটিতে সিরিজ জিতলো প্রোটিয়ারা। শুধু তাই নয়, ভারতকে টেস্টে ৪০০ রানের বেশি ব্যবধানে হারানো ইতিহাসে প্রথম দলও হলো তারা। আগের রেকর্ডটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার দখলে।

আরো পড়ুন:

৪০৮ রানে ভারতকে হারিয়ে ২৫ বছরের পুরনো রেকর্ড ছুঁল দ. আফ্রিকা

সাকিবকে ছাড়িয়ে উইকেট শৃঙ্গে তাইজুল

ভারতের আগের সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে হার ছিল ২০০৪ সালে নাগপুর টেস্টে। সেবার তারা হেরেছিল ৩৪২ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার ভারত সফরে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ডও নবায়ন হলো, ১৯৯৬ সালের রেকর্ডকে পেছনে ফেলে।

রানের ব্যবধানে ভারতের সবচেয়ে বড় টেস্ট পরাজয়গুলো:
৪০৮ রানে - দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০২৫
৩৪২ রানে - অস্ট্রেলিয়া, ২০০৪
৩৪১ রানে - পাকিস্তান, ২০০৬
৩৩৭ রানে - অস্ট্রেলিয়া, ২০০৭
৩৩৩ রানে - অস্ট্রেলিয়া, ২০১৭
৩২৯ রানে - দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৯৯৬।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম টেস্ট ৩০ রানে জয় তুলে নেওয়ার পর গুয়াহাটিতে ৪০৮ রানের দুর্দান্ত জয়ে সিরিজটাই পকেটে পুরে ফেললো।

৫৪৯ রানের অবিশ্বাস্য লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতের শুরুই হয়েছিল দুঃস্বপ্নের মতো। চতুর্থ দিনের শেষে স্কোরবোর্ডে ২৭ রানে ২ উইকেট। পঞ্চম দিনে নেমে একে একে উইকেটগুলো ভাঙা ঘরের মতো ধসে পড়তে থাকে। সাই সুদর্শনের ১৩৯ বল খেলে ১৪ রানের লড়াই ছিল ড্র বাঁচানোর মরিয়া প্রচেষ্টার প্রতিচ্ছবি। রবীন্দ্র জাডেজা একটি প্রতিরোধী অর্ধশতক করলেও দলকে রক্ষা করার জন্য তা যথেষ্ট ছিল না।

দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিন ত্রাস সাইমন হারমার ও সেনুরান মুথুসামি ভারতের ব্যাটিং লাইনআপকে এমনভাবে ঘিরে ধরেন যে বের হওয়ার কোনো পথই ছিল না। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত থামে মাত্র ১৪০ রানে। হারমার নেন ৬ উইকেট ৩৭ রানে। কেশব মহারাজ, মুথুসামি ও মার্কো ইয়ানসেন নেন যথাক্রমে ২, ১ ও ১ উইকেট।

প্রথম ইনিংসেই প্রোটিয়াদের আধিপত্য ছিল স্পষ্ট। মার্কো জানসেনের (৪৮ রানে ৬ উইকেট) বোলিংয়ে ভারত ২০১ রানে গুটিয়ে যায়। যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে করে ৪৮৯ রান। তাতে প্রথম ইনিংসে ৩১৪ রানে পিছিয়ে পড়ে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে পড়ে ভারত।

এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেটে ২৬০ রান করে ঘোষণা করলে ভারতের সামনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় অসম্ভব ৫৪৯ রান। সেটা তাড়া করতে নেমে ১৪০ রানেই গুটিয়ে যায় ভারত। আর দক্ষিণ আফ্রিকা পায় ৪০৮ রানের বিরাট জয়। 

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ