৯ সদস্যের নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল গঠন
Published: 26th, October 2025 GMT
পুঁজিবাজারে নয় সদস্যের নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল (এসএসি) গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। পুঁজিবাজারে শরিয়াহসম্মত সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বিএসইসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) বিএসইসি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
নয় মাসে ঢাকা ব্যাংকের মুনাফা কমেছে ২০.
পুঁজিবাজারে সূচকের পতন, কমেছে লেনদেন
এর আগে, গত ২২ অক্টোবর বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মকসুদ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়।
শরিয়াহ বিশেষজ্ঞ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল সদস্যরা হলেন- ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরুল্লাহ নাকিব মুহাম্মদ, ন্যাশনাল শরিয়াহ স্কলার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনজুর-ই-এলাহী, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মিরপুরের সিনিয়র মুফতি ও মুহাদ্দিস মুফতি মাসুম বিল্লাহ, জামিয়াহ শরিয়াহর সিনিয়র ডেপুটি মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন।
অন্যদিকে, শিল্প ও আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল সদস্যরা হলেন- যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ অরলিন্সের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কবির হাসান, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার ওমর সাদাত, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম মাজেদুর রহমান এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের চিফ ফাইন্যান্স অফিসার মোহাম্মদ আব্দুর রহিম।
এ শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অধ্যাপক ড. নাকিব মুহাম্মদ নাসরুল্লাহ।
বিএসইসির আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে, ইসলামিক শরিয়াহ্ভিত্তিক সিকিউরিটিজ সঠিকভাবে ইস্যু করা, ইসলামী শরিয়াহ্র আলোকে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশের ইসলামিক মূলধন বাজারের উন্নয়নের জন্য একটি শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল গঠন করা প্রয়োজন। তাই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (সিকিউরিটিজ মার্কেট শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল) বিধিমালা, ২০২২-এর বিধি ৪ ও ৫ অনুযায়ী মোট নয়জন সদস্য নিয়ে শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে।
এর মধ্যে পাঁচজন শরিয়াহ বিশেষজ্ঞ এবং চারজন বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ। অতএব, উক্ত বিধিমালা, ২০২২-এর বিধি ৩-এর উপবিধি (১)- এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন নিম্নবর্ণিত নয় সদস্যবিশিষ্ট শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল গঠন করেছে।
বিএসইসি জানায়, এই শরিয়াহ অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল ইসলামিক শরিয়াহর আলোকে শরিয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজ ইস্যু, অনুমোদন ও তদারকি কার্যক্রমে পরামর্শ দেবে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা এবং ইসলামিক পুঁজিবাজারের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কমিশন মনে করে, বাংলাদেশে ইসলামিক আর্থিক খাত দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি ইসলামিক বন্ড (সুকুক), শরিয়াহভিত্তিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও অন্যান্য সিকিউরিটিজের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব কার্যক্রম যেন শরিয়াহ্র নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে।
ইসলামিক পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও শরিয়াহ্ নিয়মের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার জন্যই এই উপদেষ্টা কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। এটি দেশের আর্থিক খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। আদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউন ভ র স ট স ক উর ট জ ম হ ম মদ ইসল ম ক ব এসইস সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন ‘আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’ পরিচালিত আবাসন প্রকল্পে থাকা শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেসরকারি এই প্রকল্পকে ‘হল’ হিসেবে দেখিয়ে আবাসন বৃত্তি থেকে তাঁদের বঞ্চিত করছে, এমন অভিযোগে আজ বুধবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের ফটক অবরোধ করে অবস্থান নেন।
এর আগে দুপুর নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তাঁদের স্লোগানের মধ্যে ছিল: ‘আস–সুন্নাহে বৃত্তি দে, ভুজুংভাজুং ছেড়ে দে’, ‘এক দুই তিন চার, বৃত্তি আমার অধিকার’ এবং ‘আস–সুন্নাহে বৃত্তি দে, নইলে গদি ছেড়ে দে’।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি নীতিমালায় আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মেধাবী প্রকল্পকে ‘হল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে তাঁরা আবাসন বৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, প্রকল্পটি বেসরকারি হওয়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব হল না হওয়ায় তাঁদের বৃত্তি থেকে বাদ দেওয়া যাবে না।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুল বাশার সুমন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য কোনো হল নেই। আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের মেধাবী প্রজেক্ট নামের একটি প্রকল্প আমাদের জন্য করেছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যত কোনো হল নয়।’
শিক্ষার্থী সুমন আরও বলেন, ‘বৃত্তি নীতিমালায় সুকৌশলে আস–সুন্নাহ প্রজেক্টকে হল হিসেবে উপস্থাপন করে বৃত্তি থেকে আমাদের বাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা এ পাঁয়তারাকে রুখে দিতে প্রতিবাদ করছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মেধাবী প্রকল্প থেকে যখন আগামী জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে যাবে, তখন তাদের আশ্রয়স্থল কোথায়? আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা আরও কঠিন আন্দোলন করব।’
শিক্ষার্থীরা প্রায় বিকেল চারটা পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ফটক অবরোধ করে থাকেন। পরে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত আবাসন প্রকল্পে ফিরে যান।
জানা যায়, আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত মেধাবী প্রকল্পের আওতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩, ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থীকে আবাসন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিয়ে থাকেন। এই প্রকল্পে থাকা–খাওয়ার ব্যবস্থার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা রয়েছে।