ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মায়ের লাশ দেখতে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ভিডিওতে একজনের হাতে বিশেষ ধরনের ধনুক দেখা গেছে, যাকে ‘স্বয়ংক্রিয় ধনুক’ বলে বর্ণনা করছেন অনেকে।

ভিডিওতে উভয় পক্ষের লোকজনকে হেলমেট, লাইফ জ্যাকেট ও পায়ে ক্রিকেটের প্যাড পরে সংঘর্ষে অংশ নিতে দেখা যায়।

সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের অনুসারী এবং বিরামপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান ও ব্যবসায়ী সাচ্চু মিয়ার অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে নাসির উদ্দিন নামের একজন নিহত এবং অন্তত ৩০ জন আহত হন। নাসির উদ্দিন বিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং ইকবাল হোসেনের পক্ষের লোক ছিলেন। আজ রোববার বাদ মাগরিব তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হারুন ও ইকবালের অনুসারীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। গত শুক্রবার বিকেলে বিরামপুর গ্রামের হাসেম মিয়ার স্ত্রী মোসাম্মৎ বেগম (৯৫) মারা গেলে পূর্ববিরোধের কারণে তাঁর ছয় ছেলের মধ্যে চার ছেলে মায়ের লাশ দেখতে পারেননি। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সকাল থেকে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং পরে বল্লম, টেঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে বেলা ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে অংশগ্রহণকারীদের অনেকে মাথায় হেলমেট, গায়ে লাইফ জ্যাকেট ও পায়ে ক্রিকেট প্যাড পরে দেশীয় অস্ত্র, তির–ধনুক, ইটপাটকেল ব্যবহার করেন।

আজ রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বিরামপুর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ। বাজারের দক্ষিণ পাশের একটি বাড়িতে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। রাস্তায় স্থানীয়রা সংঘর্ষ নিয়ে আলোচনা করছিলেন, আর নারী-পুরুষদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ।

জেলা শহরের গোকর্ণঘাট এলাকার বাসিন্দা ইকরাম হোসেন বলেন, ‘খায়ের মিয়া নামে আমাদের এক আত্মীয় এখানে থাকেন। লাশ দাফন হলে যেকোনো সময় আবার সংঘর্ষ হতে পারে। তাই বসতঘরের আসবাব নিয়ে গোকর্ণঘাটে আমার বাড়িতে যাচ্ছি।’

স্থানীয় আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকে ভয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। আমরা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয়।’

হাসিনা বেগম নামের এক নারী বলেন, ‘আমিও বাড়ির সব আসবাব সরিয়ে ফেলেছি। খালপাড় এলাকার মানুষ কী করছে তা দেখতে এসেছি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিরামপুর গ্রামের কয়েকজন বলেন, সংঘর্ষের সময় স্বয়ংক্রিয় ধনুক হাতে যে নারীকে দেখা যায়, তিনি ইকবাল, আনিছুর ও সাচ্চুর পক্ষের। তিনি ওই ধনুক কিনে এনেছেন। এ ছাড়া দুই নারীর হাতে সাধারণ ধনুক দেখা গেছে। তাঁরা সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের পক্ষের। কয়েক মাস ধরেই সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে নাসির উদ্দিনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ র ইকব ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘প্রতারক পুরুষ বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে, তবে আল্লাহ সব দেখেন’

ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা—দু’জায়গাতেই অভিনয় গুণে জায়গা করে নিয়েছেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। পর্দার চরিত্রে যেমন সাহসী, বাস্তব জীবনেও তেমনি সরব ও স্পষ্টভাষী।  

বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাবনার উপস্থিতি সবসময়ই আলোচনায় থাকে। নিয়মিত ছবি ও ভাবনার টুকরো অংশ প্রকাশ করায় অনেক সময় কটাক্ষের মুখেও পড়েছেন এই অভিনেত্রী। গতকাল রাতে ভাবনা তার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে নারীর সঙ্গে পুরুষের বিশ্বাসঘাতকতার একটি চিত্রায়ণ করেছেন এই অভিনেত্রী। 

আরো পড়ুন:

‘খুকুমণির’ বিয়ে

রাজবাড়িতে বসবে মধুমিতার বিয়ের আসর!

এ বিষয়ে আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, “একজন প্রতারক পুরুষ তার বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে। কিন্তু যে নারীকে সে আঘাত করেছে, তাকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহ তা প্রকাশ করেন। প্রতিটি মিথ্যা, যা সে পেছনে বলেছে, নীরবে ভাঙা প্রতিটি প্রতিশ্রুতি, কান্নার প্রতিটি মুহূর্ত, অথচ পুরুষটি ভান করেছে সব ঠিক আছে। তবে আল্লাহ সব দেখেন, যা সে দেখতে পায় না।” 

কোনো গোপন বিষয় চিরকাল গোপন থাকে না। এমন তথ্য স্মরণ করে ভাবনা বলেন, “একজন পুরুষ ভাবেন, তার কর্ম ঢাকতে সে যথেষ্ট চতুর। কিন্তু কোনো গোপন বিষয় চিরকাল গোপন থাকে না। তাকে ধ্বংস করার জন্য আল্লাহ সত্য প্রকাশ করেন না। বরং সেই নারীকে জীবনভর কষ্ট পাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য এটি করেন।” 

খানিকটা ব্যাখ্যা করে আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, “বিশ্বাসঘাতকতা হয়তো গোপনে করা হয়। কিন্তু তার প্রকাশ হলো ঐশ্বরিক সুরক্ষা। আল্লাহ যখন পর্দা সরিয়ে দেন, তা শাস্তি নয় বরং এটা উদ্ধার। আমি এখন গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আলহামদুলিল্লাহ।” 

তবে ভাবনা কেন এ ধরনের একটি পোস্ট নিজের ফেসবুকে দিয়েছেন, তার পেছনের কারণ জানা যায়নি। কিন্তু তার ভাবনার সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন নেটিজেনরা। 

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্যানসার, ৩৬ অস্ত্রোপচার—গানে ফেরার গল্প শোনাবেন ‘বেজবাবা’
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ১১০ বোতল ফেন্সিডিলসহ কারবারি গ্রেপ্তার
  • পাবনায় বিষাক্ত মদপানে ২ যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ
  • রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর স্ত্রীকে হত্যা মামলায় একজন গ্রেপ্তার
  • বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণাহীনতা: উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাধা
  • বেগম রোকেয়াকে নিয়ে রাবি শিক্ষকের মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার লঙ্ঘন: আসক
  • কালো পতাকার মানুষ
  • ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এআই দিয়ে বানানো ছবি ছড়ানো হচ্ছে: কৃষ্ণ নন্দী
  • কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখাতে হামলা, নির্দেশদাতা এখনো পলাতক
  • ‘প্রতারক পুরুষ বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে, তবে আল্লাহ সব দেখেন’