বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নুরুল আমিন বলেছেন, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামী আপোষহীন। যার প্রমাণ ঐতিহাসিক ২৮ অক্টোবর। সেদিন সারাদেশে জামায়াতের কর্মীরা জীবন উৎসর্গ করেছে ইসলামী আন্দোলন ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য। আমাদের শহীদের শুধু জামায়াতের কাছে নয় পুরো জাতির কাছে প্রেরণার বাতিঘর।

তিনি ২৮ অক্টোবর মঙলবার সকাল ৭ টায়  শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে ফেডারেশনের জেলার কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠার তাণ্ডবে শাহাদাত বরণকারী শহীদ রুহুল আমিন ও শহীদ হাবিবুর রহমান সহ সকল শহীদদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। 

ফেডারেশনের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো রিদওয়ানুল আজীম এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর জেলা মজলিসে শুরা ও কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা মজিবুর রহমান মিয়াজী । 

নুরুল আমিন বলেন, সেই সময় আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের কি পরিকল্পনা ছিল তা পরবর্তী ১৭ বছরে জাতি পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছে। তারা বাংলাদেশকে ভারতের একটি তাবেদার রাজ্য পরিণত করার জন্য সেদিন এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের অত্যন্ত প্রহরী জামায়াতে ইসলামী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপর চূড়ান্ত আঘাত করেছিল। তারা চেয়েছিল এদেশের মাটি থেকে ইসলামী আন্দোলন ও তার নেতৃত্বকে মুছে ফেলার।

তার প্রথম পরিকল্পনা হিসাবে তারা সেই সময় ২৮ অক্টোবরকে বেছে নিয়েছে। তারা সারাদেশে লগি বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে শহীদ মুজাহিদ, মাসুম, জসিম, হাবিবুরসহ অসংখ্য নেতাকর্মী ও সাধারণ নাগরিককে হত্যা করেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে পঙ্গু করে দিয়েছে। আমাদের অফিসগুলো জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।

একই সাথে বহু মানুষের ঘরবাড়ি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও প্রতিষ্ঠান পুড়িয়েছে। পুরো বিশ্ব সেদিন হতবাক হয়ে গিয়েছিল। রাজনীতির নামে এ কোন ধরনের জ্বালাও পোড়াও নীতি। আসলে তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতার মসনদ দখল করা। তারা ভারতের প্রেসক্রিপশনে এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিলিয়ে দিয়ে দেশ ও জাতির উপর অসভ্য ও বর্বর আঘাত হেনেছে।

তিনি আরো বলেন, সেদিন জামায়াতের কর্মীরা জীবন বাজি রেখে নেতৃবৃন্দকে রক্ষা করেছে। ফলে তাদের একটি বড়ো পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়ে যায়। জামায়াতের দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব থাকতে এদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য পরিণত করা যাবে না এই বিশ্বাস তাদের ছিল। পরবর্তীতে ভারতের অন্য একটি প্রেসক্রিপশনে তথাকথিত মানবতা বিরোধী অপরাধের নামে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে।

নেতৃবৃন্দ জীবন দিয়েছেন কিন্তু আপোষ করেননি। তাদের সেই আত্মত্যাগের ফসল জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আজকে দেশের মানুষ জানে কাদের কাছে এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিরাপদ। আজকে জামায়াতের যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তার পেছনে ২৮ অক্টোবরের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

সভাপতির বক্তব্য আবদুল মান্নান বলেন, এদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে শ্রমিকদের অবদান কখনো সেভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। অথচ প্রতিটি আন্দোলনেই সফলতার পেছনে শ্রমিকদের অবদান অতুলনীয়।

২৮ অক্টোবরে ঢাকার পল্টনে শ্রমিক নেতা হাবিবুর রহমান ও গাজীপুরে শ্রমিক কল্যাণের তৎকালীন জেলা সভাপতি রুহুল আমিনের শাহাদাত আন্দোলন সংগ্রামে শ্রমিকদের ত্যাগ তিতিক্ষার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা মনে করি আমাদের ভাইদের আত্মত্যাগ বিফলে যায়নি। তাদের রক্তের উপরে এদেশে ইসলাম বিজয়ী হবে ইনশাল্লাহ।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মো হুমায়ুন কবীর, ফতুল্লা দক্ষিণ থানা সভাপতি আজিজ উদ্দিন বাবুল, ও সাইনবোর্ড ওয়ার্ডের সভাপতি মো সাইফুল ইসলাম প্রমূখ।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স ব ধ নত আম দ র ল আম ন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

টোকেন মূল্যে বৈষম্যের অভিযোগ ইবি ছাত্রদলের

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য খাবারের টোকেন মূল্যে অযৌক্তিক বৈষম্যের অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি দিয়েছে শাখা ছাত্রদল। 

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি ও খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দীনের কাছে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, সদস্য রাফিজ আহমেদ, নূর উদ্দিন, রাকিব হোসেন সাক্ষর, আল-আমিন, শাহরিয়ার রশিদ নিলয় প্রমুখ।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের খাবার পরিবেশনের উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন টোকেন মূল্য নির্ধারণ বৈষম্যমূলক। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই কর্মসূচিতে এভাবে শিক্ষার্থীদের ভাগ করা আমাদের ঐক্যবদ্ধ পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থী— আবাসিক বা অনাবাসিক সমান অধিকার ও মর্যাদার অংশীদার। ধর্মীয়, রাজনৈতিক কিংবা আবাসিক-অনাবাসিক পরিচয়ভিত্তিক মূল্য বৈষম্য সামাজিক বিভাজন তৈরি করে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

সংগঠনটি দুটি দাবি উপস্থাপন করে— এক. খাবারের টোকেন মূল্য একীভূত করে সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান মূল্য নির্ধারণ; দুই. ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি বা জাতীয় অনুষ্ঠানে খাবার, উপহার বা সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্যমূলক নীতি অনুসরণ না করা।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দীন বলেন, “অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলাদা বরাদ্দ না থাকায় টোকেন মূল্যে পার্থক্য রাখা হয়েছে। তবে, শিক্ষার্থীদের দাবি এসেছে, ছাত্রদলও স্মারকলিপি দিয়েছে। বিষয়টি অন্যান্য হল প্রভোস্ট ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব।”

ঢাকা/ তানিম/জান্নাত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মরণ
  • বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসে বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচি
  • রিয়ালের ৪ তারকা ফুটবলার নিষিদ্ধ
  • ২২টি যুদ্ধের পর শত্রুমুক্ত হয় কুষ্টিয়া
  • গত ১৫ বছর ছিল ‘মানবাধিকার সংকটের ভয়াবহ সময়’
  • জনতার প্রত্যাশা পরবর্তী কর্মপরিকল্পনায় কাজে লাগাতে চাই : মাসুদুজ্জামান
  • টোকেন মূল্যে বৈষম্যের অভিযোগ ইবি ছাত্রদলের
  • মুক্তিযুদ্ধ: চারণ কবির পুঁথি যখন যুদ্ধদিনের সিম্ফোনি
  • পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানাবে: আসিফ মাহমুদ
  • নির্বাচন করব, তবে পদত্যাগের বিষয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না