কক্সবাজারে সহোদর হত্যা: ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, চারজনের যাবজ্জীবন
Published: 21st, October 2025 GMT
কক্সবাজারের রামু উপজেলায় দুই শিশুকে অপহরণ করে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় নারীসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নিহতরা আপন ভাই।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. ওসমান গণি মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (এসপিপি) মীর মোশারফ হোসেন টিটু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদের প্রথম জানাজা সম্পন্ন
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- গর্জনিয়া বড়বিল এলাকার জাহাঙ্গীর আলম, আবদু শুক্কুর, আলমগীর হোসেন (বুলু), মিজানুর রহমান ও শহীদুল্লাহ।
যাবজ্জীবন সাজা পাওয়ারা হলেন- আবদুল মজিদ বদাইয়া, ফাতেমা খাতুন, রাশেদা খাতুন ও লায়লা বেগম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি বিকেলে রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল এলাকায় দোকান কর্মচারী মো.
এ ঘটনার দুই দিন পর (১৯ জানুয়ারি) রাত ১২টার দিকে স্থানীয় জালালের ফলের বাগানের পাশের খালের পাড় থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় পরদিন নিহতদের বাবা ফোরকান বাদী হয়ে রামু থানায় মামলা করেন।
গ্রেপ্তারকৃত প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে স্বীকার করেন, তার নেতৃত্বে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। প্রথমে শিশুদের হত্যা করে মরদেহ ড্রামে ভরে রাখা হয়, পরে সুযোগ বুঝে খালের ধারে ফেলে দেওয়া হয়।
স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মীর মোশারফ হোসেন টিটু বলেন, “৯ বছর ধরে মামলার বিচার কার্যক্রম চলে। সাক্ষ্য-প্রমাণ ও পারিপার্শ্বিক সব কিছু বিচার করে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন।”
তিনি জানান, রায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড ও চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। বাদীপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। রায় ঘোষণার সময় প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্যরা পলাতক। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মোকারমা সুলতানা পুতু নামে এক তরুণীকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আস ম
এছাড়াও পড়ুন:
‘বিত্তশালী’ ভেবে অপহরণ, এরপর যা হলো
চট্টগ্রামে সড়কে গাড়ির গতিরোধ করে ‘বিত্তশালী’ ভেবে এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর দাবি করা হয় সাড়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ। কিন্তু যাঁকে অপহরণ করা হয়েছে তাঁর দাবি, তিনি পেশায় দিনমজুর। মুক্তিপণের টাকা দিতে পারছিলেন না। বিষয়টি জানার পর অভিযানে নামে র্যাব।
অবশেষে র্যাবের অভিযানে ধরা পড়ে দুই অপহরণকারী। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলার হাটহাজারীর নজুমিয়া হাট এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁরা হলেন মো. আজম ও আবু সামা। উদ্ধার করা হয় অপহরণের শিকার দিনমজুর নাজিম উদ্দিনকে। আজ শুক্রবার বিকেলে র্যাব বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানায়।
র্যাব–৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) এ আর এম মোজাফফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অপহৃতকে অন্যত্র স্থানান্তর করার সময় একটি কারের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় ঘটনায় জড়িত দুজনকে। জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
র্যাব ও পুলিশ সূত্র জানায়, নোয়াখালীর সেনবাগের বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন জীবিকার জন্য নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার মোহাম্মদনগর এলাকায় বসবাস করেন পরিবার নিয়ে। গত রোববার প্রতিদিনের মতো কাজের সন্ধানে বাসা থেকে বেরিয়ে জেলার ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার দরবার শরিফে যান। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় শহরের বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা হন। গাড়িতে তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।
হাটহাজারীর সরকার হাট বাজারে পৌঁছালে গ্রেপ্তার আজম ও তাঁর সহযোগীরা গাড়ি থেকে নামিয়ে তাঁকে অপহরণ করে। এরপর সরকার হাট বাজারের পাশে একটি কক্ষে নিয়ে নির্যাতন করেন। এগুলোর ছবি নাজিমের স্ত্রীর মুঠোফোনে ইমোতে দেন। সাড়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ ঘটনায় নাজিমের স্ত্রী নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
বিষয়টি র্যাব জানতে পেরে অপহরণকারীদের খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে গতকাল অপহৃতকে সরকার হাট থেকে নজুমিয়া হাট এলাকা দিয়ে অন্যত্র রাখার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় র্যাব হাতেনাতে ধরে ফেলে। আসামিদের হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
অপহৃত নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘অটোরিকশা থেকে তাঁকে নামানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি চিৎকার দিই। তখন অপহরণকারীরা গাড়িচোর বলে আমাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। প্রথমে আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমার পেশা দিনমজুর বলা হলেও তারা বিশ্বাস করেনি। দিনমজুর বলার পর মারধরের পরিমাণও বেড়ে যায়। তারা মনে করেছিল আমি ব্যবসায়ী, টাকাওয়ালা।’
র্যাব জানায়, এ ঘটনায় এজাহার মিয়া নামের আরেকজন জড়িত। বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর সহযোগী হিসেবে তিনি পরিচিত। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।