ভোলায় আত্মগোপন থেকে বাড়ি ফেরার পথে পিটুনি, পরে মৃত্যু
Published: 1st, December 2025 GMT
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় পিটুনি ও মারধরে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শ্রমিক মারা গেছেন। গতকাল রোববার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় তাঁকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত শ্রমিকের নাম মো. সেলিম (৪৫)। তিনি উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ঘোষেরহাওলা গ্রামের বাসিন্দা। গত শনিবার রাতে ঘোষেরহাওলা গ্রামে তাঁকে পিটিয়ে ফেলে রাখে দুর্বৃত্তরা।
পরিবারের দাবি, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সেলিম আত্মগোপনে যান। এরপর শনিবার রাতে তিনি গ্রামে ফেরেন। একপর্যায়ে চিনতে পেরে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সেলিমকে ধরে মারধর করেন।
পরিবারের দাবি, হাত-পায়ে পেরেক ঢুকিয়ে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মুমূর্ষু অবস্থায় সেলিমকে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়।
সেলিমের স্ত্রী রেখা বলেন, তাঁর স্বামী আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন বলে দীর্ঘদিন ধরে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। শনিবার রাতে সেলিম মুঠোফোনে জানান, তিনি বাড়ি আসবেন।
রেখার ভাষ্য, তিনি তাঁকে আসতে নিষেধ করেছিলেন। পরে রাতে শুনতে পান, বিলের দিক থেকে তাঁকে (সেলিম) ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লোকজনের মুখে শুনতে পান, সেলিমকে পিটিয়ে হাড়গোড় ভেঙে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গতকাল সকালে ঘোষেরহাওলা বাজারের কাছে একটি দোকানের পাশে সেলিমকে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন তাঁরা। পরে সেলিমের পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। সেখান থেকে তাঁরা সেলিমকে উদ্ধার করে প্রথমে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ বা মামলা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহব্বত খান। তিনি বলেন, ঘটনাটির তদন্ত চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র র
এছাড়াও পড়ুন:
ঈশ্বরদীতে সংঘর্ষের ঘটনায় জামিন পেলেন জামায়াত প্রার্থী তালেব
পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় হওয়া মামলায় জামিন পেয়েছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-৪ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলসহ ৩২ নেতাকর্মী।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে পাবনা আমলী আদালত-২ এ হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন তারা। সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট মো. তরিকুল ইসলাম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত
কুড়িগ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ৩
পাবনা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জামায়াতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ খান এহিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “গত বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়। মামলায় জামায়াতে জেলা আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়। আজ সোমবার দুপুরে মামলার সব আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।”
জামিন পাওয়ার পর পাবনা জামায়াত প্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, “আমাদের আইনজীবীরা সত্য উদঘাটন করেছেন। তারা কোর্টকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টি করার জন্য একজন এমপি প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে। অসংখ্য গাড়ি ভাঙা হয়েছে, গুলি করা হয়েছে। আমাদের অনেক ভাইকে আহত করা হয়েছে।” এই মামলা দ্রুত প্রত্যাহার দাবি জানান তিনি।
গত ২৭ নভেম্বর বিকেলে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চরগড়গড়ি গ্রামে বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। জামায়াতের দাবি, হামলার সময় ১০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ এবং প্রায় ৪০টি মোটরসাইকেল লুট করে নিয়ে যায় বিএনপির কর্মীরা।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে জামায়াত ও বিএনপি। এর মধ্যে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মক্কেল মৃধার ছেলে বাঁধন হাসান আলিমের করা মামলায় পাবনা-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডলকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ৩২ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ জনকে।
অপরদিকে, ঈশ্বরদী উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে একই থানায় ৩৮ জন বিএনপির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মক্কেল মৃধাকে। এই মামলায় ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ