ইসলামি ফিকাহ অনুযায়ী, ‘সাজদাহ সাহু’ হলো নামাজের শেষাংশে বা সালামের পর এমন দুটি সিজদা, যা ভুলবশত কোনো রুকন ছেড়ে গেলে বা কোনো ওয়াজিব অতিরিক্ত করে ফেললে বা সন্দেহের সৃষ্টি হলে তা পূরণ করার জন্য দেওয়া হয়। (ইবনে উসাইমিন, আশ-শারহ আল-মুমতি’ আলা যাদ আল-মুসতাকনি’, ৩/৩৬৫, দার ইব্‌ন আল-জাওযি, দাম্মাম, ১৪২২ হি.)

সাজদাহ সাহুর বিধান নিয়ে ফিকহবিদদের মত

সাজদাহ সাহু ওয়াজিব (অবশ্য পালনীয়) নাকি সুন্নাহ (ঐচ্ছিক/অনুসরণীয়), তা নিয়ে ফিকহবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে:

ওয়াজিবের মত: হানাফি ও হাম্বলি মাজহাবের নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী সাজদাহ সাহু ওয়াজিব বা অবশ্যকরণীয়। তাঁরা দলিল হিসেবে উল্লেখ করেন যে যেসব ভুলের কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ বাতিল হয়ে যায়, সেগুলোর জন্য সাহু সাজদা ওয়াজিব।

কেননা, রাসুলুল্লাহ (সা.

) বলেছেন, “আমি তো তোমাদের মতোই একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভুলে যাও, আমিও ভুলে যাই। যদি তোমাদের কেউ ভুলে যায়, তবে সে যেন দুটো সিজদা করে।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৭১)

আরও পড়ুনকোরআন তিলাওয়াতে সিজদা আদায়ের নিয়ম২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সুন্নাহর মত: মালেকি ও শাফেয়ি মাজহাবের মত অনুযায়ী সাজদাহ সাহু সুন্নাহ বা ঐচ্ছিক। মালেকিগণ মনে করেন, এটি সুন্নাহ, কারণ এটি কেবল একটি বা একাধিক সুন্নাত (যেমন, সুরা ফাতিহার পর অন্য সুরা বা প্রথম তাশাহহুদ) ছেড়ে দেওয়ার ক্ষতিপূরণ করে (আল-মাজাজি, আল-মুহাজ্জাব ফিল ফিকহ আল-মালিকি, পৃষ্ঠা ১৩১, দার আল-কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, ২০০৪ খ্রি.)।

যদিও সাজদাহ সাহু সুন্নাহ হওয়ার মত রয়েছে, তবে হানাফি ও হাম্বলিদের মতে এটি ওয়াজিব এবং দলিলের ভিত্তিতে এটিই অধিক শক্তিশালী মত, কেননা, রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে এটি করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং এর মাধ্যমে নামাজ পূর্ণতা লাভ করে। (ইবনে উসাইমিন, আশ-শারহ আল-মুমতি’ আলা যাদ আল-মুসতাকনি’, ৩/৩৬৬, দার ইব্‌ন আল-জাওযি, দাম্মাম, ১৪২২ হি.)

কখন দিতে হয়

নামাজে অতিরিক্ত কিছু করলে এবং যখন সন্দেহের একটি দিক প্রবল মনে হয়, তখন এক দিকে সালাম ফিরিয়ে পর সাজদাহ সাহু দিতে হয়।

১। যদি কেউ ভুলবশত নামাজে অতিরিক্ত রুকু, সিজদা বা সম্পূর্ণ এক রাকাত আদায় করে এবং সালামের আগে মনে না পড়ে, তবে সালামের পর সাজদাহ সাহু দিতে হবে। জোহরের নামাজ পাঁচ রাকাত পড়ে ফেললে এবং সালামের পরই মনে পড়লে, প্রথমে সালাম ফেরাবে, তারপর দুটি সিজদা দিয়ে পুনরায় সালাম ফেরাবে।

একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) জোহরের নামাজ পাঁচ রাকাত পড়লেন। তখন তাঁকে বলা হলে তিনি সালামের পর দুটো সিজদা করলেন এবং তারপর আবার সালাম ফেরালেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১২২২)

২। যদি কেউ নামাজ সম্পূর্ণ হওয়ার আগে ভুলবশত সালাম ফিরিয়ে ফেলে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই (যেমন দুই-তিন মিনিটের মধ্যে) মনে পড়ে, তবে সে বাকি নামাজ পূর্ণ করবে, সালাম ফেরাবে, তারপর সাজদাহ সাহু দিয়ে আবার সালাম ফেরাবে।

একবার নবী (সা.) জোহর বা আসরের নামাজে দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে দেন। পরে তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বাকি নামাজ সম্পন্ন করেন, সালাম ফেরান, তারপর দুটি সেজদা দিয়ে আবার সালাম ফেরান। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৭১)

৩। যদি নামাজে রাকাত সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হয় (যেমন: তিন নাকি চার রাকাত) এবং সন্দেহের কোনো একটি দিক (যেমন চার রাকাত) প্রবল বলে মনে হয়, তখন সেই প্রবলের ওপর ভিত্তি করে নামাজ শেষ করে সালামের পর সাজদাহ সাহু দিতে হবে।

কেননা, নবীজি (সা.) বলেছেন, “যদি তোমাদের কারও নামাজে সন্দেহ হয়, তাহলে সে যেন সঠিক বলে মনে হওয়া দিকটি অনুসন্ধান করে এবং তার ভিত্তিতে নামাজ পূর্ণ করে। তারপর সালাম ফেরাবে এবং দুটি সিজদা করবে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪০১)

৪। প্রথম তাশাহহুদ, রুকু বা সিজদার নির্ধারিত তাসবিহ ইত্যাদি ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। যেমন, যদি কেউ প্রথম তাশাহহুদ না পড়ে ভুলবশত তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যায়, তবে সালামের আগে সাজদাহ সাহু দেবে।

দাঁড়ানোর আগে মনে পড়লে বসে যাবে এবং কোনো সাজদাহ লাগবে না। দাঁড়ানো শুরু করে দিলে আবার ফিরে আসবে এবং সালামের পর সাজদাহ সাহু দেবে। কিন্তু পুরোপুরি দাঁড়িয়ে গেলে আর ফিরে আসবে না; নামাজ পূর্ণ করে সালামের আগে সাজদাহ সাহু দেবে।

নবীজি (সা.) জোহরের নামাজে প্রথম দুই রাকাতের পর (তাশাহহুদের জন্য) না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। নামাজ শেষ করে সালাম ফেরানোর আগে তিনি দুটি সেজদা করলেন এবং তারপর সালাম ফেরালেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১২২৪)

আরও পড়ুনদুই সিজদার মাঝখানে যে দোয়া পড়তে হয়১১ জুলাই ২০২৫জামাতে সাজদাহ সাহুর নিয়ম

যদি ইমামের কোনো ভুল হয়, তবে মুক্তাদিরা (পিছনের মুসল্লিরা) তাঁকে অনুসরণ করবে। ইমাম সালাম ফিরিয়ে সিজদা দিলে মুক্তাদিরাও দেবে।

তবে যদি মুক্তাদি নিজে ভুল করে, কিন্তু ইমাম কোনো ভুল না করেন, তাহলে মুক্তাদির সাজদাহ সাহু লাগে না, কারণ, ইমামের অনুসরণ করাই এখানে মুখ্য। (ইবনে উসাইমিন, আশ-শারহ আল-মুমতি’ আলা যাদ আল-মুসতাকনি’, ৩/ ৪২৬, দার ইবনে আল-জাওযি, দাম্মাম, ১৪২২ হি.)

যদি মুক্তাদির কিছু রাকাত ছুটে যায় (মাসবুক), তবে তিনি ইমামকে অনুসরণ করে ইমামের সঙ্গে সালাম না ফিরিয়ে উঠে বাকি নামাজ পূর্ণ করবেন। এরপর তাঁর নামাজ পূর্ণ করার সময় যদি কোনো ভুল হয়, তবে তিনি তার ভুলের জন্য সাজদাহ সাহু দেবেন।

সাজদাহ সাহুতে কী বলতে হয়

সাজদাহ সাহুতে সেজদার সাধারণ তাসবিহগুলোই বলা হয়। অতিরিক্ত কোনো নির্দিষ্ট দোয়া বা জিকির বলার প্রয়োজন নেই।

তাসবিহ: “সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা” (মহাপবিত্র আমার প্রতিপালক, যিনি সুউচ্চ) অন্তত তিনবার বলা।

দোয়া: মাঝে মাঝে অন্যান্য সিজদার দোয়া যেমন “সুবহানাকাল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকা, আল্লাহুম্মাগফিরলি” (হে আল্লাহ! আমাদের প্রতিপালক, তোমার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করো) বলা যেতে পারে।

পরিশেষে বলা যায়, সাজদাহ সাহু হলো মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিশেষ রহমত, যা আমাদের ভুলে ভরা নামাজকে ত্রুটিমুক্ত করে দেয়।

আরও পড়ুনসাহু সিজদার নিয়ম২৫ আগস্ট ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ম জ প র ণ কর স ল ম র পর ভ লবশত র জন য সন দ হ আল ল হ ত রপর প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

নামাজে ভুলের সিজদা কখন কীভাবে দিতে হয়

ইসলামি ফিকাহ অনুযায়ী, ‘সাজদাহ সাহু’ হলো নামাজের শেষাংশে বা সালামের পর এমন দুটি সিজদা, যা ভুলবশত কোনো রুকন ছেড়ে গেলে বা কোনো ওয়াজিব অতিরিক্ত করে ফেললে বা সন্দেহের সৃষ্টি হলে তা পূরণ করার জন্য দেওয়া হয়। (ইবনে উসাইমিন, আশ-শারহ আল-মুমতি’ আলা যাদ আল-মুসতাকনি’, ৩/৩৬৫, দার ইব্‌ন আল-জাওযি, দাম্মাম, ১৪২২ হি.)

সাজদাহ সাহুর বিধান নিয়ে ফিকহবিদদের মত

সাজদাহ সাহু ওয়াজিব (অবশ্য পালনীয়) নাকি সুন্নাহ (ঐচ্ছিক/অনুসরণীয়), তা নিয়ে ফিকহবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে:

ওয়াজিবের মত: হানাফি ও হাম্বলি মাজহাবের নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী সাজদাহ সাহু ওয়াজিব বা অবশ্যকরণীয়। তাঁরা দলিল হিসেবে উল্লেখ করেন যে যেসব ভুলের কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ বাতিল হয়ে যায়, সেগুলোর জন্য সাহু সাজদা ওয়াজিব।

কেননা, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আমি তো তোমাদের মতোই একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভুলে যাও, আমিও ভুলে যাই। যদি তোমাদের কেউ ভুলে যায়, তবে সে যেন দুটো সিজদা করে।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৭১)

আরও পড়ুনকোরআন তিলাওয়াতে সিজদা আদায়ের নিয়ম২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সুন্নাহর মত: মালেকি ও শাফেয়ি মাজহাবের মত অনুযায়ী সাজদাহ সাহু সুন্নাহ বা ঐচ্ছিক। মালেকিগণ মনে করেন, এটি সুন্নাহ, কারণ এটি কেবল একটি বা একাধিক সুন্নাত (যেমন, সুরা ফাতিহার পর অন্য সুরা বা প্রথম তাশাহহুদ) ছেড়ে দেওয়ার ক্ষতিপূরণ করে (আল-মাজাজি, আল-মুহাজ্জাব ফিল ফিকহ আল-মালিকি, পৃষ্ঠা ১৩১, দার আল-কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, ২০০৪ খ্রি.)।

যদিও সাজদাহ সাহু সুন্নাহ হওয়ার মত রয়েছে, তবে হানাফি ও হাম্বলিদের মতে এটি ওয়াজিব এবং দলিলের ভিত্তিতে এটিই অধিক শক্তিশালী মত, কেননা, রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে এটি করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং এর মাধ্যমে নামাজ পূর্ণতা লাভ করে। (ইবনে উসাইমিন, আশ-শারহ আল-মুমতি’ আলা যাদ আল-মুসতাকনি’, ৩/৩৬৬, দার ইব্‌ন আল-জাওযি, দাম্মাম, ১৪২২ হি.)

কখন দিতে হয়

নামাজে অতিরিক্ত কিছু করলে এবং যখন সন্দেহের একটি দিক প্রবল মনে হয়, তখন এক দিকে সালাম ফিরিয়ে পর সাজদাহ সাহু দিতে হয়।

১। যদি কেউ ভুলবশত নামাজে অতিরিক্ত রুকু, সিজদা বা সম্পূর্ণ এক রাকাত আদায় করে এবং সালামের আগে মনে না পড়ে, তবে সালামের পর সাজদাহ সাহু দিতে হবে। জোহরের নামাজ পাঁচ রাকাত পড়ে ফেললে এবং সালামের পরই মনে পড়লে, প্রথমে সালাম ফেরাবে, তারপর দুটি সিজদা দিয়ে পুনরায় সালাম ফেরাবে।

একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) জোহরের নামাজ পাঁচ রাকাত পড়লেন। তখন তাঁকে বলা হলে তিনি সালামের পর দুটো সিজদা করলেন এবং তারপর আবার সালাম ফেরালেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১২২২)

২। যদি কেউ নামাজ সম্পূর্ণ হওয়ার আগে ভুলবশত সালাম ফিরিয়ে ফেলে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই (যেমন দুই-তিন মিনিটের মধ্যে) মনে পড়ে, তবে সে বাকি নামাজ পূর্ণ করবে, সালাম ফেরাবে, তারপর সাজদাহ সাহু দিয়ে আবার সালাম ফেরাবে।

একবার নবী (সা.) জোহর বা আসরের নামাজে দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে দেন। পরে তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বাকি নামাজ সম্পন্ন করেন, সালাম ফেরান, তারপর দুটি সেজদা দিয়ে আবার সালাম ফেরান। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৭১)

৩। যদি নামাজে রাকাত সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হয় (যেমন: তিন নাকি চার রাকাত) এবং সন্দেহের কোনো একটি দিক (যেমন চার রাকাত) প্রবল বলে মনে হয়, তখন সেই প্রবলের ওপর ভিত্তি করে নামাজ শেষ করে সালামের পর সাজদাহ সাহু দিতে হবে।

কেননা, নবীজি (সা.) বলেছেন, “যদি তোমাদের কারও নামাজে সন্দেহ হয়, তাহলে সে যেন সঠিক বলে মনে হওয়া দিকটি অনুসন্ধান করে এবং তার ভিত্তিতে নামাজ পূর্ণ করে। তারপর সালাম ফেরাবে এবং দুটি সিজদা করবে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪০১)

৪। প্রথম তাশাহহুদ, রুকু বা সিজদার নির্ধারিত তাসবিহ ইত্যাদি ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত। যেমন, যদি কেউ প্রথম তাশাহহুদ না পড়ে ভুলবশত তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যায়, তবে সালামের আগে সাজদাহ সাহু দেবে।

দাঁড়ানোর আগে মনে পড়লে বসে যাবে এবং কোনো সাজদাহ লাগবে না। দাঁড়ানো শুরু করে দিলে আবার ফিরে আসবে এবং সালামের পর সাজদাহ সাহু দেবে। কিন্তু পুরোপুরি দাঁড়িয়ে গেলে আর ফিরে আসবে না; নামাজ পূর্ণ করে সালামের আগে সাজদাহ সাহু দেবে।

নবীজি (সা.) জোহরের নামাজে প্রথম দুই রাকাতের পর (তাশাহহুদের জন্য) না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। নামাজ শেষ করে সালাম ফেরানোর আগে তিনি দুটি সেজদা করলেন এবং তারপর সালাম ফেরালেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১২২৪)

আরও পড়ুনদুই সিজদার মাঝখানে যে দোয়া পড়তে হয়১১ জুলাই ২০২৫জামাতে সাজদাহ সাহুর নিয়ম

যদি ইমামের কোনো ভুল হয়, তবে মুক্তাদিরা (পিছনের মুসল্লিরা) তাঁকে অনুসরণ করবে। ইমাম সালাম ফিরিয়ে সিজদা দিলে মুক্তাদিরাও দেবে।

তবে যদি মুক্তাদি নিজে ভুল করে, কিন্তু ইমাম কোনো ভুল না করেন, তাহলে মুক্তাদির সাজদাহ সাহু লাগে না, কারণ, ইমামের অনুসরণ করাই এখানে মুখ্য। (ইবনে উসাইমিন, আশ-শারহ আল-মুমতি’ আলা যাদ আল-মুসতাকনি’, ৩/ ৪২৬, দার ইবনে আল-জাওযি, দাম্মাম, ১৪২২ হি.)

যদি মুক্তাদির কিছু রাকাত ছুটে যায় (মাসবুক), তবে তিনি ইমামকে অনুসরণ করে ইমামের সঙ্গে সালাম না ফিরিয়ে উঠে বাকি নামাজ পূর্ণ করবেন। এরপর তাঁর নামাজ পূর্ণ করার সময় যদি কোনো ভুল হয়, তবে তিনি তার ভুলের জন্য সাজদাহ সাহু দেবেন।

সাজদাহ সাহুতে কী বলতে হয়

সাজদাহ সাহুতে সেজদার সাধারণ তাসবিহগুলোই বলা হয়। অতিরিক্ত কোনো নির্দিষ্ট দোয়া বা জিকির বলার প্রয়োজন নেই।

তাসবিহ: “সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা” (মহাপবিত্র আমার প্রতিপালক, যিনি সুউচ্চ) অন্তত তিনবার বলা।

দোয়া: মাঝে মাঝে অন্যান্য সিজদার দোয়া যেমন “সুবহানাকাল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকা, আল্লাহুম্মাগফিরলি” (হে আল্লাহ! আমাদের প্রতিপালক, তোমার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করো) বলা যেতে পারে।

পরিশেষে বলা যায়, সাজদাহ সাহু হলো মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বিশেষ রহমত, যা আমাদের ভুলে ভরা নামাজকে ত্রুটিমুক্ত করে দেয়।

আরও পড়ুনসাহু সিজদার নিয়ম২৫ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ