দেশে প্রবাসী আয় প্রেরণকারী দেশ হিসেবে টানা তিন মাস ধরে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় আসা বেড়ে গেছে। তাতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতকে (ইউএই) পেছনে ফেলে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় প্রেরণকারী দেশের তালিকায় উঠে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি থেকে প্রবাসী আয় আসা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।

চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর—এই তিন মাসের প্রবাসী আয়–সংক্রান্ত বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, ওই তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ১৪০ কোটি মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত বা ইউএই থেকে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এই তিন মাসে প্রবাসী আয় এসেছে ৯৯ কোটি ডলার। প্রবাসী আয় প্রেরণের দিক থেকে শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় এরপরে রয়েছে যথাক্রমে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, ইতালি, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৯ কোটি ৩৪ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল। এরপর সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩৯ কোটি ডলারে। এক মাসের ব্যবধানে দেশটি থেকে প্রবাসী আয়ে ৩৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়। অক্টোবরে তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ কোটি ডলারে। সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয় ২৮ শতাংশের বেশি। নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫১ কোটি ১৯ লাখ ডলারে।  

গত আগস্টেও দেশে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় প্রেরণকারী দেশ ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। ওই মাসে দেশটি থেকে প্রবাসী আয় এসেছিল ৩৪ কোটি ডলার, যা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ৫ কোটি ডলার বেশি। সেপ্টেম্বরে এসে প্রবাসী আয়ে ইউএইকে পেছনে ফেলে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সেপ্টেম্বরে ইউএই থেকে প্রবাসী আয় এসেছিল ৩৬ কোটি ডলার। একই মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে ৩৯ কোটি ডলার। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রবাসী আয় কমে যায়। অক্টোবরে দেশটি থেকে আসে ৩৩ কোটি ডলার। নভেম্বরে যা আরও কমে ২৯ কোটি ডলারে নেমে আসে।

হঠাৎ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে একাধিক ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী ও প্রবাসী আয় আহরণের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে একধরনের বড় পরিবর্তন হয়েছে। এখন প্রবাসী আয় প্রেরণকারী বৈশ্বিক বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দেশের ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রবাসী আয় কিনে নেয়। পরে সেসব আয় একত্র করে নির্দিষ্ট একটি দেশ থেকে তা গন্তব্য দেশে পাঠায়। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রামসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠান অ্যাগ্রিগেটেড (সমন্বিত) পদ্ধতিতে প্রবাসী আয় সংগ্রহ করে প্রেরণ করে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় আসার পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বাড়তে দেখা যাচ্ছে। কারণ, রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন দেশে প্রবাসী আয় প্রেরণ করছে। ফলে প্রবাসী আয়ের উৎস দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের নাম নথিপত্রে লিপিবদ্ধ হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা

চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।

জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”

একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”  

আরো পড়ুন:

বধূবেশে অভিষেক কন্যা

জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট

মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।” 

কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।” 

সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়। 

পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না। 

এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিরাজ–কৃষ্ণাতে ম্যাচে ফিরল ভারত
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা