সুষ্ঠু তদন্তসহ ৬ দাবি জাস্টিস ফর বিডিআরের
Published: 19th, January 2025 GMT
গত ১৭ বছর ধরে অন্যায়ভাবে জেলে আটক থাকা বিডিআর সদস্যদের মুক্তিসহ সরকারের কাছে ছয় দফা দাবি জানিয়েছে জাস্টিস ফর বিডিআর নামের একটি প্লাটফর্ম। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এসব দাবি মেনে না নেওয়া হলে রাজপথে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তারা।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান জাস্টিস ফর বিডিআর এর পক্ষ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার।
মাহিন সরকার বলেন, “গত ১৭ বছর ধরে বিডিআর জওয়ানদের ন্যায়বিচার পেতে দেওয়া হয়নি। আমরা চাই, এ নতুন বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন রাখবে। নতুন গঠিত কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করে স্বাধীন ও সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। যারা এখনো মুক্তি পাননি, তাদের সবাই মুক্তি পাওয়ার অধিকার রাখেন। নতুন কমিশনের তদন্তের পর যারা অপরাধী তাদের শাস্তি এবং নিরপরাধীদের যথাযথ সম্মান, আত্মমর্যাদা ও কর্মসংস্থান ফিরিয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, “আজ কেন তাদের মুক্তি দেওয়া হলো? ৫ আগস্টের পরপরই কি তাদের মুক্তি দেওয়া সম্ভব ছিল না? আজ আমরা তাদের মুক্তিসহ ছয় দফা দাবি সরকারের কাছে রেখে যাচ্ছি। দাবিগুলো আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে মেনে না নেওয়া হলে রাজপথে এর সমাধান করা হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহমুদা হৃদি বলেন, “আজ ২৫৬ জনকে মুক্ত করা হয়েছে। বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে আমাদের তৎপরতা চালিয়ে যাব। যতদিন পর্যন্ত এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার সম্পন্ন না হয় ততদিন আমরা থামব না।”
বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে কাজ করে যাওয়া ব্যারিস্টার পারভেজ হোসেন বলেন, “আজ অনেক ভালো লাগছে। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা দরজা এখন উন্মুক্ত হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে কি পরিমাণ ষড়যন্ত্র ছিল তা বলার বাইরে। সেদিন দরবার হলে এত বড় ঘটনা ঘটল, যা গোয়েন্দা সংস্থা জানতই না। মূলত এ হত্যাকাণ্ড হয়েছিল সরকারি নির্দেশনায়। ফলে সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি এবং মূল পরিকল্পনাকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে।”
তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পরে নতুন তদন্ত শুরু হলে এর পেছনের মূলহোতাদের খোঁজা শুরু হয়। পরে মহামান্য হাইকোর্ট জানান, আগের সব রায় ছিল মিথ্যা। এখন নতুন করে তদন্তের স্বার্থে ২৫৬ জনকে মুক্ত করা হয়। আমরা বলতে চাই, এ ভুল দণ্ডের মাধ্যমে যাদের জেলে রাখা হয়েছে, তাদের শাস্তি স্থগিত করে দ্রুত জামিন দেওয়া হোক। তদন্তের পর তারা দোষী সাব্যস্ত হলে আবার তাদের গ্রেপ্তার করা যাবে। কিন্তু একজন নির্দোষকে এক দিনও আটকে রাখা না হোক।”
তিনি আরও বলেন, “আজ কষ্টে বুকটা ভারী হয়ে যাচ্ছে এটা ভেবে, তথাকথিত রায়ের উপর ভিত্তি করে তাদের ১৭ বছর ধরে জেলে রাখা হয়েছিল। আজ আমরা একটু হলেও সুবিচার পেয়েছি। এ ধারা অব্যাহত রেখে আমরা সবাইকে মুক্ত করতে পারব বলে প্রত্যাশা রাখি।”
এ সময় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আয়াতুল্লাহ বেহেস্তী, সহ-সমন্বয়ক কানিজসহ ষড়যন্ত্রের শিকার বিভিন্ন বিডিআর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- খুনি হাসিনার ষড়যন্ত্রমূলক মামলার রায় বাতিল করে আগামী ৩০ জানুয়ারির কর্মদিবসের মধ্যে ঢালাওভাবে আটককৃত বিডিআর সদস্যদের সিআরপিসি ৪০১ ধারায় মুক্তি দিতে হবে; গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত ‘ব্যতীত’ শব্দ এবং কার্যপরিধি ২ এর (ঙ) নং ধারা বাদ দিতে হবে এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত এবং ষড়যন্ত্রের শিকার দেশপ্রেমিক বিডিআর সদস্যদের কমিশনে যুক্ত করতে হবে; পিলখানার ভেতরে এবং বাইরে শহীদ হওয়া ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং জেলের ভেতর মারা যাওয়া প্রত্যেক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন সাপেক্ষে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তাদের বাকি দাবিগুলো হলো- স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে নির্দোষ প্রমাণিত সব বিডিআর সদস্যকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে; বিজিবি আইন ২০১০ বাতিল করে পূর্বের বিডিআর আইন পুনর্বহাল করতে হবে এবং ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করা বিজিবির নামকে পরিবর্তন করে বিডিআর নাম ফিরিয়ে আনতে হবে; পিলখানার ভেতরে ও বাইরে সব শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস চালু করতে হবে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ব ড আর ক ত কর সরক র তদন ত ত করত
এছাড়াও পড়ুন:
আসামে বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র মামলায় পরেশ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
ভারতের আসামে গত বছর একাধিক ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ঘটানোর ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে উলফা (আই) নেতা পরেশ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। সংস্থাটি শনিবার গুয়াহাটির আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
পরেশ বড়ুয়া নিষিদ্ধঘোষিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (ইনডিপেনডেন্ট ) চেয়ারম্যান এবং স্বঘোষিত কমান্ডার ইন চিফ। চার্জশিটভুক্ত অন্য দুজন হলেন অভিজিৎ গগৈ ও জাহ্নু বড়ুয়া।
গত বছর আসামে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন ব্যাহত করতে গুয়াহাটির দিসপুর লাস্ট গেটে একাধিক আইইডি পুঁতে রাখা হয়েছিল। এর সঙ্গে এই তিনজনের যোগসূত্র পাওয়া গেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এ ঘটনা তদন্তের ভার নেয় এনআইএ।
এনআইএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হতাহত করা, সম্পত্তি ধ্বংস করা, ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি তৈরি এবং মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে আইইডি স্থাপন করা হয়েছিল।