১৮নং ওয়ার্ডে জনসচেতনতা র্যালী ও মরহুম কোকোর মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া অনুষ্ঠিত
Published: 24th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাইবার ইউজার দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বিএনপি বহিঃর্বিশ্ব কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক এস.আলম রাজীব বলেছেন, বিএনপি জনগনের দল, জনগনের সমর্থন নিয়ে কাজ করেছে। আগামীর রাজনীতি হবে জনকল্যানমূলক।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারী) বিকেলে নগরীর ১৮নং ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী সমাজ এবং ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনসচেতনতায় র্যালীর আয়োজন করে ১৮নং ওয়ার্ড বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের তৃণমূল নেতৃবৃন্দ। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন এস.
জনসচেতনতায় অনুষ্ঠিত এই র্যালীটি নারায়ণগঞ্জ মহানগরের ১৮নং ওয়ার্ডের নিতাইগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালীতে প্রায় সহস্রাধিক নেতাকর্মীর কন্ঠে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী স্লোগান এবং ৩১ দফার পক্ষে স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে পুরো এলাকা।
বক্তব্যে এস.আলম রাজীব বিএনপির কিছু নামধারী নেতাদের কারনে বর্তমানে স্বৈরাচারের দোসররা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে উল্লেখ করে আরো বলেন, বর্তমানে স্বৈরাচারের দোসররা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে আমরা ওইসব দোসরদের বিরুদ্ধে স্বোচ্চার আছি এবং আগামীতেও স্বোচ্চার থাকবো।
তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সহিত বলতে হচ্ছে আমাদের বিএনপির মধ্যেই কিছু নামধারী নেতা রয়েছে যারা তাদের ব্যাক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে চাচ্ছে ওসমান পরিবারের দোসরদের পূনবার্সিত করতে। আমরা দেখেছি বিগত ১৪ বছর অনেকেই ওসমান পরিবারের দালালি করেছে।
তারা দিনে বিএনপি রাতে ওসমান পরিবারের অনুমুতি নিয়ে পরদিন শোডাউনের রাজনীতি করতো। সেই তারাই এখন ওসমান দোসরদের থেকে অর্থিক এবং বানিজ্যিক সুযোগ সুবিধা নিয়ে তাদের পূনর্বাসন করতে চাচ্ছে। কিন্তু শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিকরা যতদিন নারায়ণগঞ্জের মাটিতে জীবিত আছে এবং দেশ নায়ক তারেক জিয়ার সৈনিকরা যতদিন আমরা জীবিত আছি আমরা তাদের এই নগ্ন ষড়যন্ত্র কখনোই সফল হতে দিবো না।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাইবার ইউজার দল- নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সদস্য সচিব শেখ মোঃ সিয়াম কর্তৃক আয়োজিত উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাইবার ইউজার দল-কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বিএনপি বহিঃবিশ্ব কমিটির প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক ছাত্রদল নেতা এস. আলম রাজীব, নারায়ণগঞ্জ মহানগর মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম রতন, কেন্দ্রীয় সাইবার ইউজার দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক, নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দলের সাবেক সভাপতি ও মহানগর যুবদল নেতা এস. আলম ইসরাৎ, জেলা সাইবার ইউজার দলের আহবায়ক মনোয়ার খান রাজীব, মহানগর সাইবার ইউজার দলের আহবায়ক গোলাম মোর্শেদ সজল, মহানগর সাইবার ইউজার দলের সিনিয়র যুগ্ন-আহবায়ক ইমরান চৌধুরী জুয়েল, মহানগর সাইবার ইউজার দল নেতা কাজী নাজমুল হাসান মাসুম, ১১নং ওয়ার্ড সাইবার ইউজার দলের প্রচার সম্পাদক নূর আলম সিদ্দিকী অভি, ১৩নং ওয়ার্ড সাইবার ইউজার দলের সভাপতি রিফাত চৌধুরী, সহ-সভাপতি রাহিম চৌধুরী ও অন্যান্য বিভিন্ন ওয়ার্ড সাইবার ইউজার দলের নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- সিয়াম, মিশাল, শামীম, গোলাম রাব্বি, হৃদয়, সাগর, দিপু, রাসেল, রায়হান, পুলক, মেহেদী হাসান সানি, নূর হোসেন, মিজানুর রহমান, মাসুম, বাহাউদ্দিন সহ নারায়ণগঞ্জ মহানগর, সদর থানা ও ১৮নং ওয়ার্ড সাইবার ইউজার দল ও ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ।
এদিকে, পূর্ব ঘোষিত উক্ত র্যালী কর্মসূচিটির পর নিতাইগঞ্জে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। মরহুম কোকোর রূহের মাগফেরাত কামনা করে এবং বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনা, তারেক রহমানের নিরাপদ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কামনা করে দোয়া করা হয়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ দল ন ত দল র স ওসম ন রহম ন আলম র
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ
ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না।
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।