গোপালগঞ্জে সমন্বয়কদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ৪
Published: 25th, January 2025 GMT
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এক কর্মীকে ধরে পুলিশে দেওয়ার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়কের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মী শরিফুল ইসলাম সোহাগ আজ পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে যান। পরীক্ষা শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করেন। তখন শরিফুলের অনুসারী ছাত্রলীগের কয়েক কর্মী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তাকে ছিনিয়ে নেন। এ সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। ঘটনার পর দফায় দফায় ছাত্রলীগ ও সমন্বয়কদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। বিকেলের পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
হামলায় কৃষিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ক্যাম্পাসে নেতৃত্ব দেওয়া অন্যতম সমন্বয়ক জসিম উদ্দিন এবং আরেক সমন্বয়ক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর শরীফ আহত হন। এ ছাড়া হামলার ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত সাংবাদিক রাসেল হোসেন ও আতিক ফয়সাল আহত হন।
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘শরিফুল ৫ আগস্টের পরও বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে আধিপত্য দেখাতে থাকে। গতকাল পরীক্ষা দিতে আসলে সমন্বয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে সমন্বয়কদের ওপর হামলা করে তাকে ছিনিয়ে নেয়। এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলেছি।’
হামলায় আহত ওমর শরীফের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা শরিফুলকে আটক করে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়ার সময় আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।’
এ বিষয়ে প্রক্টর আরিফুজ্জামান রাজিব সাংবাদিকদের জানান, তিনি সাপ্তাহিক বন্ধের ছুটিতে বাড়িতে রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফোনে ঘটনাটি শুনেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বিষয়টি দেখবেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ সমন বয়ক সমন বয়ক দ র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ