Samakal:
2025-06-15@11:32:09 GMT

পাউবোর বাঁধে বোরোর সর্বনাশ

Published: 25th, January 2025 GMT

পাউবোর বাঁধে বোরোর সর্বনাশ

কয়েকদিন ধরে আইলা ছাগাইয়া হাওরের নালা দিয়ে নামছে পাগনার হাওরের পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কাইল্লানির বাঁধের কারণে জলাবদ্ধতার মুখে পড়েছে জামালগঞ্জ উপজেলার হঠামারা মৌজার হঠামারা গ্রামের বোরো জমি। তলিয়ে যাচ্ছে বিশাল এলাকা।
এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার এমন বিপদ থেকে রক্ষা পেতে পাগনার হাওরের পানি নিষ্কাশনে গজারিয়া স্লুইসগেটের নালা খননের জন্য আবেদন করেছেন। দ্রুত এ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে আবেদন করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর।
আবেদন সূত্রে জানা যায়, জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের হঠামারা গ্রামের ৭ থেকে ৮ হাজার একর বোরো জমি রয়েছে প্রান্তিক কৃষকদের। এর মধ্যে অধিকাংশ জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে মাত্র সপ্তাহখানেক আগে। বাকি জমিতে এখনও চারা রোপণের কাজ চলছে। 
এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ লক্ষ্মীপুর মৌজার পাগনার হাওরের পানি আইলা ছাগাইয়া হাওরের নালা দিয়ে নিষ্কাশন শুরু হওয়ায় সেখানকার বেশির ভাগ জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ধানের চারা পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে কৃষক শঙ্কিত। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, কাইল্লানির বাঁধ দেওয়ায় তারা এ ধরনের সমস্যায় পড়েছেন। গজারিয়া স্লুইসগেটের খাল খনন করে পানি নিষ্কাশন করলে হাওরের কোনো ক্ষতি হতো না। সে জন্য গজারিয়া খাল খনন করে স্লুইসগেট দিয়ে পাগনার হাওরের পানি নিষ্কাশনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
কৃষক আমিন উদ্দিন জানান, হঠামারা গ্রামের হাওরে ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। বুধবার রাতে লক্ষ্মীপুর ও ফেনারবাক মৌজার পানি হাওরে ঢুকে বোরো জমি ডুবে গেছে।
একই গ্রামের আব্দুল হেকিম জানান, কাইল্লানির বাঁধ বন্ধের কারণে পানি ফুলে হঠামারা মৌজার বোরো জমি তলিয়ে যাচ্ছে। এক ফসলি বোরো জমি তলিয়ে গেলে পরিবার নিয়ে কৃষকদের বিপর্যয়ে পড়তে হবে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে কয়েক কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়ে যাবে।
স্থানীয় কৃষক সংগঠক লক্ষ্মীপুর গ্রামের সিরাজুল হক অলি জানান, গজারিয়া খাল খনন করে স্লুইসগেট খুলে দিতে হবে। একই সঙ্গে ডালিয়া স্লুইসগেটের খাল আরও অন্তত ১০ দিন খোলা রাখতে হবে। এদিক দিয়ে পানি যাতে সুরমা নদীতে সহজে নেমে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। চলমান পরিস্থিতির কারণে কাইল্লানি বাঁধের কাজ শেষ করতে হবে আরও দশ দিন পরে। তা না হলে যে ফসল রক্ষার জন্য বাঁধ নির্মাণের আয়োজন, সেই ফসলেরই অস্তিত্ব থাকবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুশফিকীন নূর জানান, কৃষকদের আবেদন পেয়েছেন। পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলীকে দ্রুত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি জমিতে সস্তায় সচিবদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ তদন্তে কমিটি, কার্যক্রম স্থগিত

সরকারি জমিতে সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দের বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এহসানুল হককে। অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব।

তদন্ত কমিটি গঠনসংক্রান্ত আদেশ আজ রোববার প্রকাশ করা হয়েছে। ১৪ জুন প্রথম আলোয় ‘সরকারি জমিতে সস্তায় ফ্ল্যাট নেন সচিবেরা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান উল্লিখিত ফ্ল্যাট প্রকল্পের নির্মাণ এবং হস্তান্তর কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য সেতু বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ ফ্ল্যাট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের জানিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেন উপদেষ্টা। এ ছাড়া সচিবসহ কর্মকর্তাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে সেতু বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, সেতু বিভাগের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন ও তদন্ত কমিটির পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তদন্ত কমিটি গঠনের আদেশে কমিটির কার্যপরিধি উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, কী পদ্ধতিতে, কিসের ভিত্তিতে এবং কাদের নামে ফ্ল্যাট বরাদ্দ করা হয়েছে, তা তদন্ত কমিটি নির্ধারণ করবে। এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে কি না, তা নির্ধারণ এবং দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করবে। এ ছাড়া যাঁদের নামে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কিংবা জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো জমি বা ফ্ল্যাট পেয়েছেন কি না, তা–ও যাচাই করবে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটিকে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করবে।

সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারত্বে (পিপিপি) ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য আবাসন নির্মাণের জন্য কেনা ৪০ একর জমি থেকে ১ দশমিক ১৫ একর জমি নিয়ে ৪টি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে আমলা ও কর্মচারীদের জন্য। এর মধ্যে তিনটি ভবন সচিব ও বড় আমলাদের জন্য। তাতে ১৬৮টি ফ্ল্যাট রয়েছে। ইতিমধ্যে ১৪০টি ফ্ল্যাট বরাদ্দ হয়ে গেছে। বাকিগুলো ভবিষ্যতে সচিব ও কর্মকর্তাদের মধ্যে বরাদ্দের চিন্তা রয়েছে বলে সেতু বিভাগ সূত্র জানিয়েছে। চারটির মধ্যে একটি ভবন রাখা হয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের জন্য, যেখানে ফ্ল্যাট রয়েছে ১১২টি।

ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে উত্তরা মডেল টাউনে (তৃতীয় ধাপ), যা দিয়াবাড়ি এলাকা নামে পরিচিত। সেখানে বিভিন্ন সময় সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদে থাকা সচিবেরা ফ্ল্যাট নিয়েছেন। ফ্ল্যাট পেয়েছেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের প্রভাবশালী আমলারা। ফ্ল্যাট পাওয়া সচিব ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার সংখ্যা ৩২। তাঁদের মধ্যে চারজন চাকরিতে রয়েছেন, দুজন অবসরের পর বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকে (এডিবি) সরকারের পক্ষ থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন, বাকিরা অবসরে গেছেন। সচিবদের বাইরে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, উপসচিবসহ বিভিন্ন পদের কর্মকর্তারা পেয়েছেন ফ্ল্যাট।

সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ ঘনিষ্ঠরাও পেয়েছেন পানির দামের ফ্ল্যাট। যেসব কর্মকর্তা সচিব পদে থেকে এসব ফ্ল্যাট নিয়েছেন, তাঁদের অনেকের আবার রাজউকের প্লট রয়েছে। সরকারি পদে থেকে তাঁরা ঢাকায় জমি ও ফ্ল্যাট—দুটোই নিয়েছেন।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১০ সালে। এর আওতায় বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত উড়ালসড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্প এখনো শেষ হয়নি।

আরও পড়ুনসরকারি জমিতে সস্তায় ফ্ল্যাট নিয়েছেন সচিবেরা, তালিকায় কারা রয়েছেন১৪ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ