অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, আর নাজনীন নাহার নিহা। দু’জনে এক হলেন প্রথমবার। ভালোবাসা দিবসে দর্শকদের নতুন কিছু উপহার দেওয়ার লক্ষ্যেই তাদের এ মেলবন্ধন। সিএমভি’র প্রয়োজনায় নাটকটি নির্মাণ করছেন জাকারিয়া সৌখিন।

গল্পে দেখা যাবে, অপূর্ব নিউইয়র্ক থেকে দেশে এসেছেন তাঁর দাদিকে নিয়ে যেতে। কিন্তু পরিবারের লোকজন বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এদিকে মিষ্টি ও দুষ্টু মেয়ে নিহার সঙ্গে অপূর্বর পরিচয় হয়। দু’জন ধীরে ধীরে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। আর মিষ্টি মেয়ে নিহা অপূর্বর মনের সব বন্ধ দুয়ার খুলে দেয়। তাই সে মেয়েটির নাম দেয় ‘মন-দুয়ারী’। 

নাটকটি যৌথভাবে রচনা করেছেন নাসির খান এবং জাকারিয়া সৌখিন। নিহাকে নিয়ে তাঁর প্রথম কাজ প্রসঙ্গে অপূর্ব বলেন, ‘নিহার মধ্যে প্রচণ্ড সম্ভাবনা আছে অনেক দূর যাওয়ার। ও শিখতে চায়, শিখে অভিনয় করতে চায়। এটাই ওর বড় গুণ। আর এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটিই যথেষ্ট। এ নাটকে নিহা এত ভালো করেছে, না দেখলে বিশ্বাস হবে না।’

 নিহা বলেন, ‘অপূর্ব ভাইয়ার সঙ্গে অভিনয়ের স্বপ্ন ছিল আমার। সেটি পূরণ হয়েছে। অনেক খুশি। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।’ বড় আয়োজনে অনেক দিন ধরে ‘মন-দুয়ারী’ নির্মিত হচ্ছে। ১৩ দিনের শুটিংয়ে ঢাকা, নবাবগঞ্জ এবং রাজশাহীতে শুটিং হয়েছে। নির্মাতা জাকারিয়া সৌখিন বলেন, ‘ভ্যালেন্টাইনে সবসময় একই টাইপের গল্পে নাটক নির্মিত হয়। কিন্তু আমাদের গল্পটি সম্পূর্ণ আলাদা। আপাতত এটুকুই বলছি। বাকিটা দেখার পর আপনারাও বুঝতে পারবেন।’

‘মন-দুয়ারী’ নাটকের অপূর্ব-নিহা ছাড়াও অভিনয় করেছেন দিলারা জামান, আমিনুর রহমান বাচ্চু, শফিউল আলম বাবু, মিলি মুন্সী, শারমীন সুলতানা শর্মী, রাইসা প্রমুখ। ‘মন-দুয়ারী’ নাটকে থাকছে দুটি গান। সোমেশ্বর অলির কথায় একটি গান সুর-সংগীত করেছেন সাজিদ সরকার, গেয়েছেন কনা এবং রেহান রসুল। আর দ্বিতীয় গানটি লিখেছেন লিমন। সুর এবং কণ্ঠ নাজির মাহমুদ, সংগীত সজীব দাশ। আসছে ১৪ ফেব্রুয়ারির বিশেষ কনটেন্ট হিসেবে সিএমভি’র ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পাচ্ছে ‘মন-দুয়ারী’।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মন দ য় র

এছাড়াও পড়ুন:

কীর্তনখোলার তীর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে

আনিকা জেবা ও মালিহা জেবা। যমজ বোন। গত ১৭ মে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে ‘সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট’ পদে কমিশন্ড হন। বরিশাল সদরে জন্ম নেওয়া দুই বোন ২০১০ সালে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর কেমন করে গেলেন স্বপ্নের বন্দরে তাই তুলে ধরেছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ 

গত ১৬ মে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট জোন্স ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসা প্রশাসনে বিশেষ কৃতিত্বের সঙ্গে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন আনিকা জেবা ও মালিহা জেবা। এর ঠিক পরদিনই এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে ‘সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট’ পদে কমিশন্ড হন। আরও মজার বিষয় হচ্ছে, এমবিএ গ্র্যাজুয়েশন ও সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভের ঠিক পরদিন, ১৮ মে ছিল এই দুই বোনের জন্মদিন। জন্মদিনটি তারা পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করেন নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের আর রাজ্জাক সুপারমার্কেটের ব্যাঙ্কুয়েট হলে।
কীর্তনখোলার তীর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে...
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি আমেরিকানদের মধ্যে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যমজ বোন আনিকা জেবা ও মালিহা জেবার জন্ম বরিশাল সদরে। ২০১০ সালে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তারা। নিউইয়র্কে গিয়ে হাইস্কুল শেষ করে তারা সেন্ট জোন্স ইউনিভার্সিটিতে ব্যবসা প্রশাসনে ভর্তি হন এবং একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর রিজার্ভ অফিসার্স ট্রেনিং প্রোগ্রামে অংশ নেন। ১৬ মে সেন্ট জোন্স ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসা প্রশাসনে বিশেষ কৃতিত্বের সঙ্গে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে ‘সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট’ পদে 
কমিশন্ড হন।
যে উদ্যোগ অনুপ্রেরণাদায়ক
সেন্ট জোন্স ইউনিভার্সিটি ১৭ মে তাদের ডিগ্রি অর্জন উপলক্ষে যে সংবর্ধনা দেন তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান জে শ্যানলি বলেন, ‘শিক্ষার পাশাপাশি দেশসেবায় তাদের এই উদ্যোগ অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে তারা নিয়মিত বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে অংশ নেবেন।’
যে জন্য করেছেন এমবিএ
মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এমবিএ কোর্স সম্পন্নের পর আনুষ্ঠানিক সার্টিফিকেট অর্জনে আনিকা জেবা ও মালিহা জেবা বলেন, এমবিএ হয়েছি নিজের ব্যবসাকে আরও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মধ্য দিয়ে বহুজাতিক সমাজে বাঙালির এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকার জন্য। অধ্যয়নের পাশাপাশি নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে পাঁচটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু করেছি। বাংলাদেশেও রয়েছে দুটি কসমেটিকস ব্র্যান্ড ‘দ্য বিউটি মল’ এবং ক্লথিং ব্র্যান্ড ‘ইলেনি’। এ দুটো পরিচালিত হচ্ছে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে। আর রাজ্জাক ম্যানেজমেন্ট ইনকের অধীনে নিউইয়র্কের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পাঁচটি হচ্ছে– এবিসি ফুড অ্যান্ড ভেজিটেবল, বুচার মিট, আর রাজ্জাক সুপারমার্কেট, আর রাজ্জাক ব্যাঙ্কুয়েট এবং আর রাজ্জাক হোলসেল ফ্লাওয়ার। 
ঐতিহ্য ও মায়ের অগ্রযাত্রা
বরিশাল থেকে মা মোর্শেদা বেগমের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো দুই বোন দেখেছেন মায়ের দৃঢ়তা ও পরিবারের জন্য মায়া। এও দেখেছেন যে মায়ের তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠা ‘আর রাজ্জাক ম্যানেজমেন্ট’ কেমন করে আস্থা অর্জন করে নিয়েছে স্থানীয় বাঙালিদের মাঝে! প্রতিষ্ঠানটির মাটি দিয়ে তৈরি ডিনার সেট প্রবাসীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কেবল পহেলা বৈশাখেই নয়; বাঙালিয়ানা প্রদর্শনের অন্য সব অনুষ্ঠানে এবং শৌখিন প্রবাসীদের ড্রয়িং রুমেও স্থান করে নিয়েছে তাদের মাটির ডিনার সেট। মায়ের মতো দুই বোনও বাংলাকে ভালোবেসে, বাঙালিয়ানায় ভর করে এগিয়ে যেতে চান। 
আগামীর স্বপ্ন
আনিকা জেবা এবং মালিহা জেবা দেশ ছাড়ার পর থেকে তাদের উচ্চশিক্ষা লাভের ব্যয় নিয়ে কোনো রকম দুশ্চিন্তা করতে হয়নি মা মোর্শেদা বেগম মায়াকে। তারা বিশেষ কৃতিত্বের সঙ্গেই নিজেদের পড়াশোনা চালিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১৭ মে তারা ‘ইউএস আর্মি রিজার্ভ অফিসার্স ট্রেনিং কোর্স’ সম্পন্নের সার্টিফিকেট তথা ‘সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট’ হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছেন। সেদিন সেন্ট জোন্স ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান জে শ্যানলি ক্লাস-২০২৫ কমিশনিংপ্রাপ্ত ১৪ জনকে অভিনন্দন জানান। সেকেন্ড লেফটেন্যান্টের ব্যাজ পরার আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে দুই বোন বলেন, ‌‘পেশার পাশাপাশি আগামীতে নিজেদের ব্যবসাকেও এগিয়ে নিতে চাই। দেশেও কাজ করছি আমরা। সেখানেও রয়েছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এসবের পাশাপাশি মানবিক কাজ করে যাচ্ছি। এই কাজের ধারাবাহিকতার পাশাপাশি নিজেদের সঙ্গে লাল-সবুজের পতাকাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই!’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কীর্তনখোলার তীর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে
  • টানা ৩৬ ঘণ্টা খেললেন গলফ