বায়ুদূষণ কমাতে সরকারি নির্মাণকাজে ব্লকের ব্যবহার বাড়ালে দেশের কৃষিজমি বাঁচবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বায়ুদূষণ কমানো ও কৃষিজমি সংরক্ষণে ব্লকের ব্যবহার বাড়ানোর বিষয়ে রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ব্লকের ব্যবহার শুধু পরিবেশ বান্ধব নয়, এটি নির্মাণ খাতের দক্ষতা ও স্থায়িত্বও বাড়ায়। আমরা সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় করে এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করব।

তিনি আরও বলেন, এই উদ্যোগ পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আমরা সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, ম্যাক্স গ্রুপ ও বাংলাদেশ এএসি ব্লক অ্যান্ড প্যানেল ম্যানুফ্যাকচারস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে ম্যাক্সক্রিট লিমিটেডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর এবং ইকো- ফ্রেন্ডলি গ্রিন ব্রিকস লিমিটেডের শাহরিয়ার সাজ্জাদ।
  
প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড.

ইউনূস গত ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার থ্রি জিরো তত্ত্বের দিকে আমাদের দ্রুত এগিয়ে যেতে হলে এএসি ব্লক-ই সমাধান। কারণ একটি  এএসি ব্লক যে প্রডাকশন দেয়, ১৫ থেকে ২০টি হোলো ব্লক সেই একই প্রডোকশন দেয়। 

নির্মাণকাজে ব্লকের ব্যবহার বাড়াতে প্রয়োজন সরকারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা এমন কথা জানিয়ে তিনি বলেন, একটি ব্লক কারখানা করতে ২৫ লাখ টাকায়ও করা যায়। আবার ১৫০ থেকে  ২০০ কোটি টাকা দিয়েও করা যায়। সেটার স্পেসিফিকেশন ভিন্ন। কার্বন ইমিশনের টার্গেটও সেটা বিভিন্ন মাত্রার। এগুলোর শ্রেণিকরণ করতে হবে। বিভিন্ন গ্রেডের এবং বিভিন্ন স্পেসিফিকেশন রেট শিডিউল পিডব্লিইউডি’র শিডিউলে উল্লেখ্য করতে হবে। সেই রেট থেকে যেই যেই রিসপেক্টিভ ডিপার্টমেন্ট অ্যাম্প্লেয়াররা যখন টেন্ডার করবেন তখন কোন ব্রিকস তারা লাগাতে চান সেটা তারা ওই ব্রিকসের রেট অনুযায়ী টেন্ডারে উল্লেখ্য করে দিলেই ঠিকাদার সেটা লাগাতে বাধ্য হবেন।
 
ইকো-ফ্রেন্ডলি গ্রিন ব্রিকস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও তিলোত্তমা গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, যেহেতু এটা একটা বড় উদ্যোগ, রাতারাতি এটা করা সম্ভব নয়। ধাপে ধাপে এএসি ব্লক ও অন্য ব্লক দিয়ে করার প্রক্রিয়া হাতে নিলে ভালো হবে। 

বিনিয়োগকারীরা জানান, বর্তমানে গণপূর্ত অধিদপ্তরে এএসি ব্লকের যে রেট ধরা হয়েছে সেটা আমাদের উৎপাদন খরচের চাইতেও অনেক নীচে। গণপূর্ত অধিদপ্তর স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কোনো প্রকার আলাপ আলোচনা ছাড়াই এককভাবে এই রেট দিয়েছে। যে কারণে আমরা সরকারি বিল্ডিংয়ে এএসি ব্লক ব্যবহার করতে পারি না। আমাদের উৎপাদিত ব্লক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানই বেশি নেয়।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাস, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের প্রতিনিধি, নির্মাণ খাতের বিশেষজ্ঞ এবং ব্লক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দূষণ নিয়ন্ত্রণ শাখার উপসচিব সিদ্ধার্থ শংকর কুন্ডু। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট পর ব শ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি খুন

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় পারিবারিক কলহের জেরে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন একজন। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফজিলা খাতুন (৪৫) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের বাসিন্দা মৃত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনির মিয়া (৩০) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে। ঘটনার রাতে স্ত্রী রুমা আক্তারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান মনির। পরে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন এবং চার বছরের ছেলে রোহানকে নিয়ে চলে যেতে চান। এতে স্ত্রীর সঙ্গে তার আবারও বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মনির হাতে থাকা ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত করতে গেলে শাশুড়ি ফজিলা খাতুন বাধা দেন। তখন মনির শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করেন। পাশাপাশি স্ত্রীকেও আঘাত করেন তিনি। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ফজিলা খাতুনের মৃত্যু হয়।

মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো। তবে অভিযুক্ত পালিয়েছে। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ