Samakal:
2025-08-01@06:35:06 GMT

পাঁচ বছরে বাড়বে ৬৫ শতাংশ

Published: 15th, June 2025 GMT

পাঁচ বছরে বাড়বে ৬৫ শতাংশ

গত অর্থবছরে বিদেশি ঋণের আসল বাবদ সরকার পরিশোধ করেছে ২০২ কোটি মার্কিন ডলার। সরকারের প্রাক্কলন হলো– চলতি  অর্থবছরে এ বাবদ ব্যয় হবে ২৬২ কোটি ডলার। পরবর্তী তিন অর্থবছরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে যথাক্রমে ২৯০ কোটি, ৩১৩ কোটি এবং ৩৩৪ কোটি ডলার। সরকারের প্রাক্কলন অনুযায়ী পাঁচ বছরে ঋণের আসল পরিশোধ বাড়বে ৬৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। বাজেট দলিল হিসেবে প্রকাশিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতিতে (এমটিএমপিএস) এই প্রাক্কলন রয়েছে। 
বিদেশি ঋণের আসলের পাশাপাশি সুদ পরিশোধ করতে হবে। আগামী অর্থবছরে দুটি মিলে ব্যয় হবে ৪৭০ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৫৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। আগামী ২০২৭-২৮ অর্থবছর এ খাতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে ৬৮ হাজার ১৮২ কোটি টাকা। 
নীতি বিবৃতিতে বলা হয়, মেয়াদপূর্তি, মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং কিছু ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে আগামী বছরগুলোতে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়বে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের টাকার অবমূল্যায়নের ফলে টাকার অঙ্কে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। কেননা একই পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পরিশোধ করতে আরও বেশি টাকার প্রয়োজন হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টাকার মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা এ সমস্যা তীব্রতর করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং বর্তমান তারল্য সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য ঋণ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা জরুরি। 
এতে আরও বলা হয়, সরকারের সামগ্রিক ঋণ পরিস্থিতি এখনও টেকসই থাকলেও ঋণের পরিমাণ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে ক্রমেই বাড়ছে। দেশি-বিদেশি মিলে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষে সার্বিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ২১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়াবে ২৩ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। ২০২৭-২৮ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়াবে ২৮ লাখ ৯৪ হাজার কোটি টাকা। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে হালনাগাদ তথ্য ব্যবহার করে আরও একটি ‘ডেট সাস্টিনিবিলিটি অ্যানালাইসিস’ বা ডিএসএ প্রতিবেদন  প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যা সরকারি অর্থ ব্যবহার ও ঋণের ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঋণের পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুদ ব্যয়ের পরিমাণও বাড়বে। চলতি অর্থবছর যেখানে সুদ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০২৭-২৮ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়াবে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তিন বছরের ব্যবধানে সরকারের সুদ ব্যয় ৩১ হাজার কোটি টাকা বাড়বে। 
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের ঋণ স্থিতিশীলতা বিশ্লেষণ অনুযায়ী বাংলাদেশের ঋণ ঝুঁকি এখনও তুলনামূলকভাবে কম। তবে ভবিষ্যতে বৈদেশিক ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ রপ্তানির তুলনায় বাড়তে থাকলে স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়তে পারে। টেকসই পরিস্থিতির জন্য সক্রিয় ঋণ ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঋণ র পর ম ণ সরক র র পর শ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

গ্যাস অপচয়ে বছরে ক্ষতি ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি: পেট্রোবাংলা

কারিগরি ক্ষতির (সিস্টেম লস) নামে গ্যাস অপচয় বাড়ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্যাস বিতরণ লাইনে অপচয় হয়েছে গড়ে ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ গ্যাস। এতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা। আর গত অর্থবছরের (২০২৪-২৫) মার্চ পর্যন্ত অপচয় হয়েছে ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এতে আর্থিক ক্ষতি ৩ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা। এর বাইরে সঞ্চালন লাইনে অপচয় হয়েছে ২ শতাংশ।

‘দেশের জ্বালানিনিরাপত্তা: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়; গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব তথ্য উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। এতে বলা হয়, ২ শতাংশ অপচয় গ্রহণযোগ্য, তাই ওইটুকু সমন্বয় করেই আর্থিক ক্ষতির হিসাব করা হয়েছে। গ্যাসের অপচয় রোধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ছয়টি গ্যাস বিতরণ সংস্থা।

পেট্রোবাংলা বলছে, গ্যাস অপচয়ের জন্য দায়ী হচ্ছে পুরোনো, জরাজীর্ণ পাইপলাইন; গ্যাস সরবরাহ লাইনের গ্যাসস্টেশন রাইজারে লিকেজ (ছিদ্র); তৃতীয় পক্ষের উন্নয়নকাজে পাইপলাইন ছিদ্র হওয়া এবং আবাসিক খাতে প্রচুর অবৈধ সংযোগ। তবে এসব অপচয় রোধে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানায় পেট্রোবাংলা। এর মধ্যে রয়েছে গ্যাস সরবরাহব্যবস্থায় মিটারিং/ মনিটরিং ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা; লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কারিগরি ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে রাখা; অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও উচ্ছেদ কার্যক্রম জোরদার করা এবং আবাসিক গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা।

দেশের গ্যাস খাতের চিত্র তুলে ধরে সেমিনারে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। তিনি বলেন, দেশে গ্যাসের উৎপাদন কমতে কমতে ১৫ বছর আগের জায়গায় চলে গেছে। গ্যাস অনুসন্ধান জোরদারের কোনো বিকল্প নেই। গ্যাস চুরি ও অপচয় কমাতে হবে। সঞ্চালন ও বিতরণ মিলে কারিগরি ক্ষতি প্রায় ১০ শতাংশ, যা অনেক বেশি। সঞ্চালন লাইনে কারিগরি ক্ষতি কোনোভাবেই ২ শতাংশ হওয়ার কথা নয়। এটা ভালো করে দেখা উচিত।

শিল্পে নতুন সংযোগে গ‍্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান বলেন, সঞ্চালন লাইনে কারিগরি ক্ষতির বিষয়টি গভীরভাবে দেখা হচ্ছে। অবৈধ সংযোগ বন্ধে পেট্রোবাংলা তৎপর আছে, খোঁজ পেলেই বিচ্ছিন্ন করা হবে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিল্পে নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে গ‍্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, যেহেতু তারা বেশি দাম দেবে। তাই অগ্রাধিকার বিবেচনা করে তিনটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। প্রথম ধাপের তালিকায় থাকছে, যেসব কারখানায় এখনই সংযোগ দেওয়া যাবে। এগুলো পরিদর্শন প্রায় শেষের দিকে, আগামী সপ্তাহে শেষ হয়ে যাবে।

সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহ করতে নতুন টার্মিনাল নির্মাণে অগ্রাধিকার পাচ্ছে স্থলভাগের টার্মিনাল। মহেশখালীর মাতারবাড়ী এলাকায় এটি করা হবে। এটি হলে কম দামের সময় বাড়তি এলএনজি কিনে মজুত করা যাবে। তবে এগুলো রাতারাতি করা যায় না, পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে।

জাতীয় গ্রিডে নতুন করে দিনে ৭৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হয়েছে

তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে উৎপাদন অংশীদারত্ব চুক্তি (পিএসসি) নিয়ে একটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসসি) মো. শোয়েব। তিনি বলেন, স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য তৈরি পিএসসির খসড়া জ্বালানি বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ নিয়ে একটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ৫০টি কূপ সংস্কার, উন্নয়ন ও খননের প্রকল্পে ইতিমধ্যে ১৮টির কাজ শেষ হয়েছে। জাতীয় গ্রিডে নতুন করে দিনে ৭৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হয়েছে। ৪টি কূপের কাজ চলমান। এ ছাড়া পেট্রোবাংলার বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যক্রম তুলে ধরেন সংস্থাটির পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. আবদুল মান্নান পাটওয়ারী।

সবচেয়ে বেশি বকেয়া বিদ্যুৎ খাতে

পেট্রোবাংলার আর্থিক দিক তুলে ধরেন সংস্থাটির পরিচালক (অর্থ) এ কে এম মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, গত অর্থবছরে পেট্রোবাংলার রাজস্ব আয় ৫৪ হাজার ১১৭ কোটি টাকা, এর মধ্যে অর্ধেক বকেয়া। গত মে পর্যন্ত গ্যাস বিল বকেয়া ২৭ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। এটি ধীরে ধীরে কমে আসছে। ১৩–১৫ হাজার কোটিতে বকেয়া নেমে এলে সন্তোষজনক। সবচেয়ে বেশি বকেয়া বিদ্যুৎ খাতে ১৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এরপর সার কারখানায় বকেয়া আছে ৯৬৪ কোটি টাকা। তবে বিদেশি কোনো কোম্পানির কাছে বিল বকেয়া নেই পেট্রোবাংলার। সব বিল শোধ করা হয়ে গেছে।

গত অর্থবছরে প্রতি ইউনিটে লোকসান হয়েছে ৪ টাকা

পেট্রোবাংলা বলছে, এলএনজি আমদানি শুরুর পর থেকে লোকসান শুরু হয় সংস্থাটির। প্রতিবছর সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি নিচ্ছে পেট্রোবাংলা। ২০১৮-১৯ সালে এলএনজি আমদানি শুরু হয়, ওই বছর ভর্তুকি ছিল ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এরপর এলএনজি আমদানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভর্তুকিও বাড়তে থাকে। গত অর্থবছরে তারা ভর্তুকি নিয়েছে ৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত পেট্রোবাংলা মোট ভর্তুকি নিয়েছে ৩৬ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। পেট্রোবাংলার হিসাবে গত অর্থবছরে প্রতি ইউনিট গ্যাস সরবরাহে পেট্রোবাংলার খরচ হয়েছে ২৭ টাকা ৫৩ পয়সা। তারা বিক্রি করেছে ২২ টাকা ৯৩ পয়সায়। এর মানে প্রতি ইউনিটে লোকসান হয়েছে ৪ টাকা ৬০ পয়সা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নীতি সুদহার অপরিবর্তিত, বেসরকারি খাতের জন্য সুখবর নেই
  • জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স ২৩৬ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
  • নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা, নীতি সুদহার অপরিবর্তিত
  • সালাউদ্দিনের মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত, বেতন বেড়ে প্রায় ১০ লাখ
  • সবজির দামে স্বস্তি, মজুরি বৃদ্ধির হার এখনো কম
  • ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণা
  • গ্যাস অপচয়ে বছরে ক্ষতি ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি: পেট্রোবাংলা
  • সার আমদানি ও জমি হস্তান্তরের প্রস্তাব অনুমোদন