ইরানে শাসন বদলে ইসরায়েলি পরিকল্পনা ইরানিরা কি সমর্থন করে?
Published: 16th, June 2025 GMT
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানের জনগণকে তাদের সরকার পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানোর পর এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অজুহাত তুলে ইরানে চালানো হামলার উদ্দেশ্য কি তাহলে সরকার পরিবর্তন? এর ইসরায়েলের এই পরিকল্পনা কি ইরানিরা সমর্থন করছে?
প্রশ্নটি রেখে আলজাজিরা কথা বলেছে ন্যাশনাল ইরানিয়ান আমেরিকান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট জামাল আবদির সঙ্গে। তার মন্তব্য তুলে ধরে সোমবার (১৬ জুন) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আলজাজিরা।
জামাল আবদি মনে করেন, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাগুলো ইরানের শাসন পরিবর্তনের পরিকল্পনায় আগে যারা সহানুভূতিশীল ছিলেন, তাদেরও এখন বিমুখ করে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আলজাজিরাকে জামাল আবদি বলেন, “আমি মনে করি এটা নেতানিয়াহুর এক ভয়াবহ ভুল হিসাব। ইসলামিক রিপাবলিকের জনসমর্থন অনেকটাই নিচে নেমে গিয়েছিল। ২০২২ সালের ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ আন্দোলন ছিল ইরানিদের ভেতরে জমে থাকা ক্ষোভের বিস্ফোরণ; শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের জোরালো আহ্বান।”
“দীর্ঘদিন ধরে নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রকে এই শাসন পরিবর্তনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এসেছেন। একই সঙ্গে ইসরায়েলও একটি মনস্তাত্ত্বিক অভিযানে লিপ্ত ছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল ইরানিদের ওপর চাপ বাড়ানো এবং ইসলামিক রিপাবলিককে দোষারোপ করা, যা এক অর্থে যৌক্তিকও ছিল,” যোগ করেন জামাল আবদি।
তিনি বলেন, “ইরানি প্রবাসীদের মধ্যে একটা অংশ আগে বিশ্বাস করতেন, ইসরায়েল যদি হামলা করে, তাহলে তা কেবল ‘ইসলামিক রিপাবলিকের লক্ষ্যবস্তুর’ দিকেই হবে, সাধারণ ইরানিদের দিকে নয়।”
“কিন্তু এখন সেই বিশ্বাস ভেঙে গেছে। নেতানিয়াহু এখন ‘বৈরুত কৌশলের’ কথা বলছেন অর্থাৎ তেহরানকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। মনে হচ্ছে, তারা এখন সরাসরি শাসনব্যবস্থা অস্থিতিশীল করার পথে হাঁটছে,” যোগ করেন জামাল আবদি।
আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির শাসন ব্যবস্থায় ইরানে যারা ক্ষুব্ধ ছিল, তাদের মধ্যে অনেকে ইসরায়েলকে ‘ত্রাতা’ হিসেবে দেখতো। তবে সেই অবস্থা আর নেই।
আলজাজিরাকে জামাল আবদি বলছেন, “আর যেসব মানুষ একসময় ভেবেছিল ইসরায়েল হয়তো তাদের মুক্তিদাতা হবে, তারা এখন বুঝতে পারছে গাজা, লেবানন কিংবা পুরো অঞ্চলে যা ঘটেছে, এখন তা-ই ইরানের জন্য অপেক্ষা করছে। আর সেটি কোনো মুক্তি নয়, সেটা মৃত্যু।”
ঢাকা/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ম ল আবদ আলজ জ র ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী