নীলফামারীর ডোমারে একটি ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় বেবি আক্তার (২৮) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে সুস্থ রয়েছে তার নবজাতক পুত্র। অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে ডোমারের ঐ ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে।
জনতা ক্লিনিক 

মারা যাওয়া প্রসূতি বেবি আক্তার ডোমার উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের বড়গাছা দরগা পাড়া এলাকার মো.

নুর আলমের স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানান, গত ১৪ জুন বিকেলে প্রসব ব্যথা উঠলে পরিবারের লোকজন বেবি আক্তারকে ডোমার পৌরসভার জনতা ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক রিজওয়ানা ইয়াসমিন রোগীকে কিছু পরীক্ষা দিতে বলেন। রিপোর্ট দেখার পর তিনি জানান, রোগীর পেটে পানি নেই — তাই জরুরি সিজার অপারেশন প্রয়োজন। পরে ওই দিন সন্ধ্যা ৬ টার দিকে প্রসূতির অপারেশন হয় এবং জন্ম নেয় একটি পুত্র সন্তান। 

অপারেশনের সময় উপস্থিত ছিলেন ডা. রিজওয়ানা ইয়াসমিন, ডা. নিহার রঞ্জন ও ওটি বয় বিপুল সরকার।

প্রসূতির স্বজনদের অভিযোগ, সিজারের পর শুরু হয় অবহেলা ও গাফিলতির চিত্র। অপারেশনের পরপরই রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলেও সময়মতো নেওয়া হয়নি কোনো চিকিৎসা ব্যবস্থা। একপর্যায়ে বেবি আক্তারের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠলে, তাকে রাতেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে অনেক দেরি হয়ে যায়। রবিবার ভোরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাতেই ক্লিনিকে চিকিৎসায় গাফিলতির খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন রোগীর স্বজন ও স্থানীয়রা।
তারা ক্লিনিক ঘেরাও করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাতে থাকেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় পরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

পুলিশ এই ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে ডা. নাজমুস সাকিব, সেবিকা মোছা. সুমনা আক্তার ও সাবিয়া আক্তার নামে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

অন্যদিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে।

রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে এ খবর শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার শায়লা সাঈদ তন্বী এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রায়হান বারী। তারা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে জনতা ক্লিনিক সিলগালা করে দেন।

ডা. রায়হান বারী বলেন, ‘‘আমরা এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি, তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য পেয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’ 

ইউএনও শায়লা সাঈদ তন্বী বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে অবহেলার সত্যতা মেলায় ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ 

সহকারী পুলিশ সুপার নিয়াছ মোর্শেদ জানান, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মৃত্যুর মামলা হয়েছে। ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। 

ঢাকা/সিথুন/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত র উপজ ল অবহ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কারও ওপর আক্রমণ হলে যৌথভাবে জবাব দেবে পাকিস্তান ও সৌদি আরব

পাকিস্তান ও সৌদি আরব ‘কৌশলগত যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি’ সই করেছে। বুধবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এ চুক্তি সই করেন। চুক্তি অনুযায়ী, কোনো একটি দেশ আক্রান্ত হলে সেটাকে দুই দেশের ওপর ‘আগ্রাসন’ হিসেবে দেখবে রিয়াদ ও ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রিয়াদের ইয়ামামা প্রাসাদে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে শাহবাজ শরিফের বৈঠক হয়। সেখানে দুই নেতা চুক্তিতে সই করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ জোরদার করার লক্ষ্যে দুই দেশের নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও নিজেদের সুরক্ষিত করা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি অর্জনের জন্য উভয় দেশের অভিন্ন প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেছে এই চুক্তিতে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসলামাবাদ ও রিয়াদের মধ্যে ‘প্রায় আট দশকের ঐতিহাসিক অংশীদারত্ব...ভ্রাতৃত্ব ও ইসলামি সংহতির বন্ধন...অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থ এবং ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার’ ভিত্তিতে এ চুক্তি সই করা হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বলেছে, দু্ই পক্ষ ও তাদের প্রতিনিধিদল উভয় দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও কৌশলগত সম্পর্ক পর্যালোচনা করেছে। একই সঙ্গে দুই পক্ষের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে।

এর আগে সৌদি আরব সফররত শাহবাজ শরিফ ইয়ামামা প্রাসাদে পৌঁছালে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান সৌদি যুবরাজ। এ সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে সৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে বৈঠক করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ