‘আমার হৃদয় বেঙ্গালুরুর সঙ্গে, আইপিএল জেতা অবিশ্বাস্য অনুভূতি’
Published: 4th, June 2025 GMT
অযুত-নিযুত ঘামবিন্দু ঝরিয়ে, নিজেকে ভেঙে নতুনভাবে গড়ে, সামর্থ্যের সবটুকু নিংড়ে দিয়েও অরাধ্য শিরোপা পাওয়া হচ্ছিল না। তিন তিনবার খুব কাছে গিয়েও শূন্য হাতে ফিরে আসতে হয়েছিল।
শৈশবে যে স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছিল কৈশোরে তা পূরণ হতে হতেও হয়নি। অবশেষে যৌবনে দেখা মিলল সাফল্য চূড়া। বিরাট কোহলি পেলেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা। তার দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুও পেল শিরোপার স্বাদ।
বেঙ্গালুরু ও বিরাট মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। ২০০৮ সাল থেকে সমান্তরাল পথে চলছে দুজনের মিশন। গন্তব্য একটাই, আইপিএল শিরোপা। আগের ১৭ আসরে হয়নি। ১৮ বসন্তে মিলল দেখা। তাইতো ম্যাচ শেষে হওয়ার আগেই বিরাটের চোখে জল। শেষ হতে হতে নিজেকে আটকে রাখতে পারেন না।
আরো পড়ুন:
অপেক্ষার অবসান বিরাট-বেঙ্গালুরুর, প্রীতির পাঞ্জাবকে হারিয়ে জিতল আইপিএল শিরোপা
কোহলির দশম শ্রেণির মার্কশিট ভাইরাল
আবেগে ভাসলেন। কাঁদলেন। অনুভূতি প্রকাশ করলেন এই শিরোপার ওজনটা আসলেও কত বড় তার কাছে। ম্যাথু হেডেনকে দেয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিরাট বলেছেন, ‘‘এ জয় দলের জন্য যতটা, সমর্থকদের জন্য ততটাই। দীর্ঘ ১৮ বছর কেটে গেল। এই দলকে আমি নিজের যৌবন, নিজের সেরা সময় ও অভিজ্ঞতা বিলিয়ে দিয়েছি। প্রতি মৌসুমে এটা (আইপিএল ট্রফি) জেতার চেষ্টা করেছি, নিজের সর্বস্ব নিংড়ে দিয়েছি। এ মুহূর্তের দেখা পাওয়া আমার কাছে অবিশ্বাস্য অনুভূতি।’’
‘‘এই দিনটির দেখা পাব কখনো ভাবিনি। শেষ বলটি হওয়ার পরই আবেগ ভর করেছে। এটা আমার কাছে অনেক কিছু। দলটির জন্য আমি নিজের প্রতি আউন্স শক্তির সঞ্চার করেছি। শেষ পর্যন্ত এটা জিততে পারা অসাধারণ ব্যাপার।’’ – বলতে থাকেন বিরাট।
বেঙ্গালুরু তার কাছে শুধু একটি দল কিংবা ফ্রাঞ্চাইজি নয়। এই দলটা তার হৃদয়ের খুব কাছে। চরম উত্থান-পতনের পরও হাল ছাড়েনি কেউ। নতুন করে লড়াই করেছে। দলছুট হননি কেউ। শিরোপা অর্জনের মঞ্চে আরো একবার বেঙ্গালুরুকে নিয়ে ভাবনা প্রকাশ করেছেন বিরাট,
‘‘১৮ বছর ধরে নিজের সবকিছু নিংড়ে দিয়েছি। এই দলটির প্রতি অনুগত থেকেছি। এমন কিছু মুহূর্ত এসেছে, যখন অন্য কিছুও ভেবেছি। তবু এই দলের সঙ্গে থেকেছি, আমি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি, তারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। সব সময় তাদের হয়েই এটা (আইপিএল) জেতার স্বপ্ন দেখেছি।’’
‘‘অন্য কারও হয়ে জেতার চেয়ে এটা বিশেষ কিছু। কারণ, আমার হৃদয় বেঙ্গালুরুর সঙ্গে। যেটা বলেছি, এই দলটির হয়ে আমি আইপিএলে নিজের শেষ দিন পর্যন্ত খেলব। এই মুহূর্তটি (আইপিএল জয়) ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্তগুলোর একটি।’’
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের আগের দিন আরেকটি ঈদ হয়ে যেত
ছোটবেলার কুরবানির ঈদ খুব আনন্দের ছিলো। আমার বেড় ওঠা ঢাকায়। ইকবাল রোডে আমার বাবার বাড়ি। সাড়ে বারো কাঠা জায়গা নিয়ে ছিল আমাদের বাড়িটা। ঘরের সামনে বিরাট উঠান ছিলো। কুরবানির জন্য কেনা গরু ওই উঠানে রাখা হতো। শুধু আমাদের গরু না, মামা, খালাদের কেনা গরুও ওই একই উঠানে রাখা হতো।
ঈদের আগের দিন বাবা, মামারা সবাই একসঙ্গে গরু কিনতে যেতেন। মামারা গরু কিনতে যাওয়ার আগে আমাদের বাড়িতে আসতেন। মা অনেক রকম খাবার রান্না করতেন। যেমন— খিচুরি, মুরগির মাংস, ডিম ভাজি। সবাই একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করে গাবতলী হাটে গরু কিনতে যেতেন। বড়দের সঙ্গে আমিও যেতাম। বিকালের আগে গরু কিনে বাসায় ফিরে আসতাম। রাতে আবার সবাই একসঙ্গে খেতো। এবং পরের দিনের গরু কুরবানির প্ল্যানিং হতো। অবশ্য বিকালের পরে নারীরা অর্থাৎ নানী, খালারা সবাই আসতেন গরু দেখতে। বাড়িটা উৎসবমুখর হয়ে উঠতো। সবমিলিয়ে আমাদের বাড়িতে ঈদের আগের দিন আরেকটি ঈদ হয়ে যেত।
সেই সময় সবাই একসঙ্গে ঈদ করা হতো। বাড়ির উঠানেই গরু কুরবানি করা হতো। মাংস ভাগ করে বিলানো হতো। এরপর মামা, খালারা তাদের ভাগের মাংস নিয়ে বিকালে নিজেদের বাড়িতে চলে যেতেন। এই যে ঈদের আগের দিন গরু কেনা থেকে কুরবানি এই সময়টুকুতে আত্মীয় স্বজনেরা সবাই মিলে একটি পরিবার হয়ে উঠতো।
আরো পড়ুন:
চলতি মাসে মুক্তি পাবে আলোচিত পাঁচ সিনেমা
বিয়ে করলেন হিনা খান, ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইটাও চলছে
সবার আলাদা বাসা এবং আলাদা ফ্ল্যাট বাড়ি হওয়ার পর থেকে আর এই সুযোগটুকু রইলো না। সময়ের পরিবর্তনে মানুষজন অনেকে হারিয়ে গেলো, অনেকে বিদেশে চলে গেলো। এভাবে করে ভাঙতে ভাঙতে এখন যার যার ঈদ তার তার।
এখন হয়তো আগের চেয়ে অনেক বড় গরু কুরবানি দেওয়া হয় কিন্তু আগের ঈদের আনন্দটা এখন আর খুঁজে পাই না।
অনুলিখন: স্বরলিপি
ঢাকা/লিপি