যমুনা সেতুতে ছয় দিনে টোল আদায় ১৭ কোটি টাকা
Published: 16th, June 2025 GMT
ঈদুল আজহার লম্বা ছুটি শেষ হয়েছে এক দিন আগেই। এখনো ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক দিয়ে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় কর্মস্থলে ফিরছে উত্তরাঞ্চলের লাখো মানুষ। তবে, সোমবার (১৬ জুন) কোথাও যানজটের সৃষ্টি হয়নি।
গত দুই দিনে যমুনা সেতুর ওপর অতিরিক্ত গাড়ির চাপ এবং যানবাহন বিকল ও দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার ফলে যমুনা সেতুর দুই পাশেই যানজট ও ধীর গতির কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে ঢাকামুখী মানুষদের।
এদিকে, যমুনা সেতুতে বেড়েছে টোল আদায়ের পরিমাণ। গত ছয় দিনে যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে মোট ২ লাখ ৪০ হাজার ১৫২টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১৬ কোটি ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার ৩০০ টাকা।
যমুনা সেতু দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ হাজার ৯৮৯টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ২৮ লাখ ২০ হাজার ২০০ টাকা।
সোমবার (১৬ জুন) সকালে যমুনা সেতুর সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এসব তথ্য জানিয়েছেন।
যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার রাত ১২টা থেকে রবিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ হাজার ৯৮৯টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৯ হাজার ১৮৯টি যানবাহন পার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৬০ লাখ ৫১ হাজার ৭০০ টাকা। ঢাকাগামী ২২ হাজার ৮০০টি যানবাহন পার হয়েছে। এতে টোল আদায় ১ কোটি ৬৭ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানিয়েছেন, মহাসড়কে স্বাভাবিক গতিতেই যানবাহন চলাচল করছে। যমুনা সেতু দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ হাজার যানবাহন পারাপার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা। যমুনা সেতুর দুই পাশ দিয়ে ৯টি করে মোট ১৮ বুথ দিয়ে যানবাহন পারাপার হচ্ছে। মোটরসাইকেলের জন্য দুই পাশে দুটি আলাদা বুথ রাখা হয়েছে।
ঢাকা/কাওছার/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।